

কাগজে-কলমে ফেভারিট, বাস্তবে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ—২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র শেষে ফ্রান্সের জন্য ছবিটা ঠিক এমনই। শিরোপা পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন নিয়ে উত্তর আমেরিকায় পা রাখার আগেই লে ব্লুদের সামনে হাজির হলো কঠিন বাস্তবতা। ড্রয়ের পরই পরিষ্কার, গ্রুপ পর্ব থেকেই এক মুহূর্তের ঢিলেমি মানেই বিপদ।
বিশ্বকাপের গ্রুপ ‘I’-তে ফ্রান্সের সঙ্গী হিসেবে পড়েছে আফ্রিকার শক্তিশালী সেনেগাল, ইউরোপের সম্ভাবনাময় আর্লিং হলান্ডের নরওয়ে এবং আন্তর্জাতিক প্লে-অফ গ্রুপ–২-এর চ্যাম্পিয়ন দল (বলিভিয়া, সুরিনাম বা ইরাক)। কাগজে নাম দেখলেই বোঝা যায়—এটা কোনো সাধারণ গ্রুপ নয়।
কাতার ২০২২-এর হৃদয়ভাঙা ফাইনালের স্মৃতি এখনও তাজা। সেই ক্ষত নিয়েই দিদিয়ের দেশমের দল নতুন বিশ্বকাপে নামছে তৃতীয় তারকা যোগ করার লক্ষ্য নিয়ে। এমবাপ্পে, দেম্বেলের মতো বিশ্বমানের তারকায় ঠাসা ফরাসি আক্রমণভাগকে অনেকেই টুর্নামেন্টের সেরা বলে মনে করছেন। শক্তিশালী ডিফেন্স, ভারসাম্যপূর্ণ মিডফিল্ড—সব মিলিয়ে ফ্রান্স নিঃসন্দেহে শিরোপার দাবিদার। কিন্তু গ্রুপটাই যেন তাদের জন্য সবচেয়ে বড় ফাঁদ।
সেনেগাল মানেই শারীরিক শক্তি আর সংগঠিত ফুটবলের নির্ভরতা। সাদিও মানের অভিজ্ঞতা, সঙ্গে তরুণদের গতি—এই মিশ্রণে যে কোনো দিন বড় দলকে থামিয়ে দিতে পারে তারা। নরওয়ে আবার হাজির হচ্ছে ইতিহাসের সেরা প্রজন্ম নিয়ে। হলান্ড, ওডেগার্ড, সোরলথদের আক্রমণভাগ যে কাউকে বিপদে ফেলতে সক্ষম, সেটি নতুন করে বলার কিছু নেই।
আর শেষ প্রতিপক্ষ? সেটি এখনো চূড়ান্ত না হলেও প্লে-অফ থেকে আসা দল মানেই অপ্রত্যাশিত চমকের ঝুঁকি। বিশ্বকাপে এমন ‘অজানা’ দলই অনেক সময় বড়দের স্বপ্ন ভেঙে দেয়।
গ্রুপ সূচিও স্বস্তির নয় ফ্রান্সের জন্য। শুরুতেই সেনেগালের বিপক্ষে ম্যাচ, এরপর প্লে-অফ জয়ীর মুখোমুখি হওয়া, আর গ্রুপ পর্ব শেষ হবে নরওয়ের বিপক্ষে সম্ভাব্য হাই-ভোল্টেজ লড়াই দিয়ে। প্রতিটি ম্যাচই কার্যত নকআউটের মতো।
ড্রয়ের পর তাই একমত ফুটবলবিশ্ব—এই বিশ্বকাপে ফ্রান্স যতটা শক্তিশালী দলে নামছে, ততটাই কঠিন তাদের পথচলা। শিরোপা ধরে রাখতে চাইলে শুরু থেকেই ‘চ্যাম্পিয়ন মুডে’ নামতে হবে লে ব্লুদের। কারণ, এই গ্রুপে ভুল করার সুযোগ… একেবারেই নেই।
মন্তব্য করুন