আলতাফ মাহমুদ ভাষাসৈনিক, স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’—গানের সুরস্রষ্টা শহীদ আলতাফ মাহমুদের আজ ৯১তম জন্মদিন। তিনি ১৯৩৩ সালের এই দিনে বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ দেশীয় দোসরদের সহযোগিতায় এ গুণী শিল্পীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকে আর ফেরেননি এ সংগীতজ্ঞ। তাকে কোথায় হত্যা করা হয়, কীভাবে হত্যা করা হয়, তা আজও অজানা। একুশের গানের অমর এ সুরকার অনেকের কাছেই ঝিলু নামে পরিচিত। একাধারে তিনি ছিলেন কবি, সুরকার, গীতিকার, সংগীত পরিচালক, নৃত্য পরিচালক ও প্রযোজক। তিনি একজন আপসহীন গেরিলা অধিনায়কও। ১৯৫০ সালের দিকে ভাষা আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন আদায়ে বিভিন্ন জায়গায় গণসংগীত পরিবেশন করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। আলতাফ মাহমুদ ছিলেন ক্র্যাক প্লাটুনের সক্রিয় যোদ্ধা। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে তার ঢাকার রাজারবাগের আউটার সার্কুলার রোডের নিজ বাসায় গোপন ক্যাম্প স্থাপন করেন। কিন্তু ক্যাম্পের কথা ফাঁস হয়ে গেলে ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট বাসা থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী চোখ বেঁধে তাকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর আর খোঁজ মেলেনি তার। মুক্তিযুদ্ধের সময় গান রচনা ও পরিবেশনা করে মুক্তিকামীদের যুদ্ধে প্রেরণা জুগিয়েছেন। শুধু তাই নয়, প্রায় ১৯টি সিনেমার সংগীত পরিচালনা করেছেন। পাশাপাশি গেয়েছেন নিজেও। মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এই মহান ব্যক্তির স্মৃতি রক্ষার্থে চলতি মাসের ২১ তারিখ, শনিবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মঞ্চে তার ৯১তম জন্মবার্ষিকী ও ‘আলতাফ মাহমুদ সংগীত বিদ্যানিকেতন’-এর ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে শহীদ আলতাফ মাহমুদের স্মৃতি বিজড়িত সংগঠন ‘শহীদ আলতাফ মাহমুদ সংগীত বিদ্যানিকেতন’-এর জন্য জমি বরাদ্দ ও স্থায়ী ভবন নির্মাণের দাবি তুলে ধরা হয়।