রাজধানীর ভিআইপি সড়ক বাদ দিলে বেশিরভাগ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কগুলোর ছোট ছোট গর্ত রাজধানীবাসীর যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময়মতো এসব গর্ত মেরামত না করায় জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। এসব গর্তের কারণে সামান্য বৃষ্টির পর জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়। কাজেই রাজধানীর প্রতিটি সড়কের ছোট-বড় সব গর্ত মেরামত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। একসময় কোনো কোনো সড়কে সংস্কারের অভাবে কয়েক মাস ধরে জনদুর্ভোগ লেগে থাকত। এখন কোনো কোনো সড়কে সংস্কারের অভাবে জনদুর্ভোগ লেগে থাকে বছরব্যাপী। গত ১২ আগস্ট কালবেলায় প্রকাশিত একটি সরেজমিন প্রতিবেদনে রাজধানীর কয়েকটি সড়কে চলাচলকারী নাগরিকদের দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকার অধিকাংশ সড়কেই খানাখন্দ। এ সড়কের বেশিরভাগ অংশের পিচ ঢালাই নেই। অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় অধিকাংশ সড়ক চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তথাপি অনেকদিন ধরেই তা মেরামত হচ্ছে না। সামান্য বৃষ্টিতে এসব সড়কে জলাবদ্ধতারও সৃষ্টি হচ্ছে। কয়েকটি সড়ক থেকে ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হওয়ায় সেখানে বাঁশ দিয়ে রাখা হয়েছে। ভাঙাচোরা এসব সড়ক দিয়ে চলাচল করতে নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন পথচারীসহ পরিবহন যাত্রীরা। দীর্ঘদিন ধরে সড়কগুলো খানাখন্দে ভরা থাকলেও মেরামতের উদ্যোগ না থাকায় অসন্তুষ্ট নগরবাসী।
রাজধানীর মুগদা-বাসাবো-মানিকনগর এলাকার অধিকাংশ রাস্তা এখন চলাচলের অনুপযোগী। বিশ্বরোড থেকে গ্রিন মডেল টাউনমুখী সড়কে ঢুকতেই বড় বড় গর্ত। এ ছাড়া বিশ্বরোড থেকে বাশার টাওয়ার পর্যন্ত পুরো সড়কই খানাখন্দে ভরা। মুগদা থেকে বাসাবো যেতে মূল সড়ক ওয়াসা রোড। কিন্তু এই সড়কের অবস্থাও এক কথায় করুণ। প্রায় তিন মাস আগে ঢাকা ওয়াসা এ সড়ক দিয়ে নতুন পাইপলাইন স্থাপনের কাজ করে। সে সময় অসংখ্য স্থানে আড়াআড়িভাবে কাটা হয়। কাজ শেষ করে ওয়াসা চলে গেছে ঠিকই, কিন্তু রাস্তা কাটাই রয়ে গেছে। নিয়মানুযায়ী সিটি করপোরেশনের মেরামতের কথা থাকলেও এ পর্যন্ত কোনো খবর নেই। বর্তমানে কাটা স্থানের পাশাপাশি অসংখ্য গর্তের কারণে পথচারী থেকে রিকশাযাত্রী কিংবা যে কোনো ধরনের গাড়ি চলাচলে ভয়াবহ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করে। কিন্তু শনির আখড়া হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ এবং যাত্রাবাড়ী হয়ে রাজধানী থেকে বের হওয়ার পথে পথে খানাখন্দ। ব্যস্ততম এ সড়কের বেহাল অবস্থা দীর্ঘদিনের। ব্যস্ত সড়কের পিচ-খোয়া উঠে ছোট-বড় অনেক গর্ত তৈরি হয়েছে। এসব স্থানে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে। যাওয়া সম্ভব না বলে বাধ্য হয়ে যাত্রীদের মাঝপথে নামিয়ে দিচ্ছেন রিকশাচালকরা। সড়কজুড়ে বড় গর্তে আটকে যাচ্ছে গাড়ি। এ ছাড়া যান চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হওয়ায় এরই মধ্যে সড়কের ঢাকামুখী একটি অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে ওই পথে চলাচলকারী গাড়ি ও যাত্রীদের। চালকদের অভিযোগ, এই সড়কে চলাচলকারী গাড়ির আয়ু কমছে।
আমরা মনে করি, বছরব্যাপী সংস্কার কাজ অব্যাহত থাকলে কোনো সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হওয়ার কথা নয়। রাজধানীর অনেক সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় সেসব সড়কের আগের সংস্কার কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। সমন্বিত পদক্ষেপ ছাড়া রাজধানীর সড়কগুলো চলাচলের উপযোগী রাখা যে কঠিন, এটিও বহুল আলোচিত। সমস্যাগুলো চিহ্নিত, এখন দরকার জরুরি পদক্ষেপ।
মন্তব্য করুন