কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৩ এএম
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:১৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সম্পাদকীয়

নির্মাণেই দায় শেষ!

নির্মাণেই দায় শেষ!

রাজধানীর ফুট ওভারব্রিজগুলো নির্মিত হয়েছে মানুষের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিতের লক্ষ্যে। তবে কিছু কিছু ব্রিজ নিরাপত্তা দূরের কথা, পরিণত হয়েছে মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য। স্থায়ী ব্যবস্থা হয়েছে ছিন্নমূল মানুষের বসবাসে। ব্যবহৃত হয় হকারদের ব্যবসা-বাণিজ্যের স্থান হিসেবে। এ ছাড়া রয়েছে নানা অসামাজিক ও অনৈতিক তৎপরতা। এসব দৃশ্য অবশ্য নতুন কিছু নয়। স্বভাবতই এসব ব্রিজ এড়িয়ে চলা ছাড়া বিকল্প থাকে না পথচারীর কাছে। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হতে হয়। বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয় তাদের। আবার ব্যবহার করলে পড়তে হয় ছিনতাইয়ের কবলে। এ চিত্র দুঃখজনক।

তথ্য জানাচ্ছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীনে রয়েছে ৪৯টি ফুট ওভারব্রিজ। আর আন্ডারপাস রয়েছে ১৪টি। এ ছাড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের রয়েছে তিনটি ওভারব্রিজ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীনে রয়েছে ৩৫টি ফুট ওভারব্রিজ। এর মধ্যে আন্ডারপাস একটি। এসব ব্রিজের অধিকাংশের ব্যাপারে পথচারীদের অভিযোগ পুরোনো। তাদের ভাষ্য, দিনে এসব ফুট ওভারব্রিজ দখলে থাকে হকারদের। রাতে ভ্রাম্যমাণ পতিতা ও মাদকাসক্তসহ নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ডের জায়গা। ফলে ভয়ে তারা ব্রিজ ব্যবহার করে না।

ফুট ওভারব্রিজ নিয়ে আরে বাস্তবতাও লক্ষণীয়। তা হচ্ছে, ফুট ওভারব্রিজ থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানুষ পারাপারের জন্য ঝুঁকি নিয়ে ব্যস্ত সড়ক ব্যবহার করে থাকে। এটা মানুষের অসচেতনতা ও নিয়ম না মানার প্রবণতাকেই প্রকাশ করে। এ কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনায়ও পড়তে হয় তাদের। শুধু তাই নয়, সড়ক ব্যবহারের কারণে রাস্তায় স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়। সৃষ্টি করে যানজটের। এ প্রবণতা বর্জন সবার অবশ্য কর্তব্য। দেখা যায়, ঢাকার যেসব সড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ, এর প্রায় প্রতিটিতেই রয়েছে ফুট ওভারব্রিজ। পাশাপশি ব্রিজ-ক্রসিং এলাকাগুলোতে দুর্ঘটনার হারও সর্বাধিক। তার মানে এসব জায়গায় ফুট ওভারব্রিজ না ব্যবহার করাই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। ব্যবহার না করার পেছনে রয়েছে প্রধানত দুই কারণ। একটা হচ্ছে, ব্রিজ নিরাপদ নয়। আরেকটি মানুষের ব্রিজ এড়িয়ে চলার প্রবণতা।

ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন সময় কিছু সচেতনতামূলক উদ্যোগও দেখা গেছে অতীতে। বাস্তবে তেমনভাবে তার প্রমাণ ও প্রতিফলন মেলেনি। এমনকি নির্ধারিত ফুট ওভারব্রিজে না উঠে সড়ক দিয়ে রাস্তা পার হলেই এক ঘণ্টার কাউন্সেলিং ক্লাস করা হয়েছে বাধ্যতামূলক। তবেই ছুটি পাওয়া যাবে এক ঘণ্টার ক্লাস থেকে। বছর চারেক আগে রাজধানীর বনানীতে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগ এমন কার্যক্রম পরিচালনা করে।

রোববার কালবেলায় এ-সংক্রান্ত একটি ফটোনিউজ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত একটি ব্রিজের ছবি যেন রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলের ব্রিজগুলোরই প্রতীক। কেননা খোদ রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র শাহবাগে অবস্থিত ব্রিজটির যে বেহাল দশা, সেখানে রাজধানীর অন্যান্য অঞ্চলের চিত্র অনুমান করা কঠিন নয়। ফটোগুলোর নিচে ক্যাপশনে লেখা হয়, চারদিকে আবর্জনা, ময়লা আর দুর্গন্ধ। ফেলা হয় পচা খাবারও, সেখানে মাঝেমধ্যে হামলে পড়ে কাক। বস্তা আর বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতাও তৈরি করেছে ফুল দোকানিরা। কেউ কেউ সেখানে বসে বানায় ফুলের মালা-বেণি। আবার কোথাও ভাঙা। এসব কারণে প্রায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রাজধানীর শাহবাগের ফুট ওভারব্রিজটি।

আমরা মনে করি, রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওভারব্রিজগুলোর এ চিত্র নিঃসন্দেহে হতাশার। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, ব্রিজ নির্মাণেই যেন দায় শেষ কর্তৃপক্ষের। কোনো তদারকির দরকার নেই! এমনকি এগুলোকে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নও করা হয় না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত হবে আন্তর্জাতিক টুরিস্ট স্পট : চসিক মেয়র

দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, যুবদল নেতাকে বহিষ্কার

সিলেট ওসমানী মেডিকেলে কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

‘৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনার পলায়ন বাংলাদেশের বিপ্লবের ইতিহাসের স্বর্ণালী দিন’

খামেনির ওপর হামলার বিষয়ে যে অবস্থান নিলেন ট্রাম্প

এবার এইচএসসি পরীক্ষায় আসনের দূরত্ব বাড়ছে

ইসরায়েলের হামলা নিয়ে আসল সত্য বললেন ইরানের প্রেসিডেন্ট

ইরানে হামলা ঠেকাতে বিল আনছেন মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স

শেষ মুহূর্তে ক্লাব বিশ্বকাপে ঢুকতে চেয়েছিল বার্সা, ফিফা বলল ‘না’

তফশিল ঘোষণার সময় জানালেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার

১০

স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ

১১

আ.লীগ গণঅধিকার পরিষদকে ১০টি আসন অফার করেছিল : ফারুক হাসান

১২

আর্থিক বিপর্যয় থেকে বাঁচতে লা লিগার কাছে বার্সার ‘ঐতিহাসিক’ দাবি

১৩

সমঝোতার নির্বাচন হলে জনগণ মেনে নেবে না : বুলবুল

১৪

লন্ডন বৈঠকের বিষয়বস্তু ও সিদ্ধান্ত পরিষ্কার করতে হবে : চরমোনাই পীর

১৫

ইরান ও ইসরায়েলের শান্তিচুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের বার্তা

১৬

৫০টি যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানে হামলা

১৭

সংবাদপত্র ও সংবাদকর্মীদের স্বার্থরক্ষায় কাজ করে যাবে জামায়াত

১৮

জুনের দুসপ্তাহে প্রবাসী আয় ১৪ হাজার কোটি টাকা

১৯

সংস্কার ছাড়া আগামী নির্বাচন সম্ভব নয় : মুফতি আমির হামজা

২০
X