উগান্ডা যাওয়ার পথে কেনিয়ার নাইরোবি বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতিতে স্বজনহীন নিঃসঙ্গ এক লাশের কফিন দেখে হৃদয়স্পর্শী স্ট্যাটাস দিয়েছেন ইসলামী আলোচক ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ বিষয় নিয়ে হৃদয়স্পর্শী স্ট্যাটাস দেন তিনি।
পোস্টে শায়খ আহমাদুল্লাহ লেখেন, উগান্ডা যাওয়ার পথে কেনিয়ার নাইরোবি বিমানবন্দরে আমাদের যাত্রাবিরতি হয়েছিল। সেখানেই স্বজনহীন নিঃসঙ্গ এক লাশের কফিনের ওপর চোখ আটকে যায় আমাদের। লাশ, যখন তার আয়ু ছিল, অন্য কোনো দেশ থেকে কাজের সূত্রে হয়তো কেনিয়া এসেছিল। আর এই কেনিয়াতেই লেখা ছিল তার মৃত্যু। লাশের কফিনটি একাকী বাড়ি ফিরছে, পাশে নেই কোনো কাছের মানুষ। এমনকি বিমানযাত্রীদের মালামালের স্থানে ঠাঁই হয়েছে কফিনটির। যেন নিষ্প্রাণ মালামাল ছাড়া সে এখন অন্য কিছু নয়।
তিনি লেখেন, নিশ্চয়ই এ মানুষটির বুকভরা অনেক স্বপ্ন ছিল। আমরাও তার মতো অনেক স্বপ্ন বুকে নিয়ে পৃথিবী দাবড়ে বেড়াই। স্বপ্ন পূরণের পথে কখনো কখনো হালাল-হারামের তোয়াক্কা করি না; কিন্তু আমাদের শেষ পরিণতিও কফিনের ওই মানুষটির চেয়ে আলাদা নয়।
তিনি আরও লেখেন, নিঃসঙ্গ কফিনটি পৃথিবীর ক্ষণস্থায়িত্ব আর অনিশ্চয়তার কথাই মনে করিয়ে দেয় বারবার। মনে করিয়ে দেয় সেই হাদিসটির কথা, যে হাদিসে নবীজি (সা.) পৃথিবীতে মুসাফিরের মতো বসবাস করার নসিহত করছেন। সত্যিই, পৃথিবী এক ক্ষণস্থায়ী সরাইখানা ছাড়া কিছু নয়, আর আমরা সবাই মুসাফির। মুসাফিরের পথচলা একদিন শেষ হবে আর তাকে পৌঁছাতে হবে আপন ঠিকানায়। তবু ক্ষণস্থায়ী এই পথের মোহে আমরা ভুলে যাই প্রকৃত ঠিকানার কথা। যে ঠিকানায় অপেক্ষা করছে চিরসুখের জান্নাত।
মন্তব্যের ঘরে তিনি লেখেন, পথিক চলতে চলতে শ্রান্ত হয়ে বটের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়। ক্লান্তি দূর হলে সে আবার পথ চলতে শুরু করে। কারণ, তার গন্তব্য বহুদূর। আমাদের জন্য পৃথিবীটাও চলার পথের বটের ছায়া। এখানে আমরা বিশ্রাম নেব কিন্তু আমরা ব্যাকুল থাকব গন্তব্যে পৌঁছানোর। বোকা তারাই, যারা বটের ছায়ায় চিরকাল বসে থাকার ভাবনা ভাবে।
উল্লেখ্য, আফ্রিকা সফরে রয়েছেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ইসলামী আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ। উগান্ডার রাজধানী কামপালায় বাংলাভাষী কমিউনিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইসলামিক কনফারেন্স ২০২৫।
মন্তব্য করুন