রাজনীতিবিদদের যেকোন বিষয়ে চটজলদি মন্তব্য করা অভ্যেসে পরিণত হয়েছে । বদঅভ্যেসগুলো শেষ বিচারে ভাল ফল দেয় না । রাজনীতির কারবারিরা বুঝতে চাননা মানুষ বেশীদিন মেনে নেয় না । ক’দিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ‘সেলফি ’ তুলেছেন । এটা জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে । অবশ্যই এটার একটা গুরুত্ব আছেই । দল মত নির্বিশেষে সব মানুষই জেনে গেছেন এই ‘ সেলফি’ টা কে তুলেছেন ।তাতে সার্বিকভাবে জনমানুষের মধ্যে ভাল লাগার একটা বিষয় থাকবেই । বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে যেভাবে বসে ছিলেন তা থেকে মীর্জা ফখরুল সাহেবরা কি শিক্ষা গ্রহন করেছেন । এবার দেখা যাক সেই আলোচিত সেলফি নিয়ে বিএনপির ঢাকাস্থ মুখপাত্র মীর্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর কি বলেছেন। ‘এই জাতির দুর্ভাগ্য কোথায় জানেন? আমরা বেসিক জায়গায় কেউ যাই না। আমরা সেলফির মতো ইস্যুতে যাই। হোয়াট ইজ দ্য এক্চুয়াল ইস্যু? ওবায়দুল কাদের সাহেব নাকি বলেছেন ফখরুল এখন কী বলবেন? আমি বলি, আমার পরামর্শটা নেবেন-এই ছবিটা বাঁধিয়ে ওইটা গলার মধ্যে নিয়ে ঘুরে বেড়ান। এটা আপনাদের যথেষ্ট সাহায্য করবে। আপনারা জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, আমেরিকার বাইডেন এখন আমার সঙ্গে আছে।’গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বিএনপির সাবেক স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য এম সাইফুর রহমানের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যের তিনি এসব কথা বলেছেন । প্রয়াত সাইফুর রহমান তাঁর আত্মজীবনী ‘ কিছু কথা কিছু স্মৃতি ’ গ্রন্থে (হাক্কানি প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ) বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সম্বন্ধে কি বলে গেছেন তা বিএনপির নেতারা পড়ে নিতে পারেন। এমন কথাও বলেছেন ‘বেগম খালেদা জিয়া অর্থনীতির কিছুই বোঝেন না ; তিনি শুধু বুঝতেন কিভাবে দলীয় লোকদের খুশী করা যায় । ’ যা হোক মীর্জা ফখরুল ইসলামের কথা নিয়ে কথা হচ্ছিল । প্রায় আট ন ’মাস মীর্জা ফখরুল ইসলাম একদিন ঘটা করে সংবাদ সংবাদ সম্মেলন করে জানালেন যে বেগম খালেদা জিয়াকে কানাডা ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান একটা পদক দিয়েছেন । সেটা আবার ঘটা করে মীর্জা সাহেব বেগম খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দিয়েছিলেন । প্রথম আলো পত্রিকায় সংবাদ শিরোনাম হলো ‘ খালেদা জিয়ার ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ পুরস্কার, সাড়ে ৩ বছর পর জানাল বিএনপি’ ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে আপনাদের জানাতে চাই, কানাডিয়ান হিউম্যান রাইটস ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (সিএইচআরআইও), তারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর অসামান্য অবদান এবং তিনি যে এখনো গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য কারাবরণ করছেন, অসুস্থাবস্থায় গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। এসব কারণে এই প্রতিষ্ঠান দেশনেত্রীকে মাদার অব ডেমোক্রেসি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছে।’এই কান্ড কারখানা নিয়ে জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া হওয়াতে বিএনপির নেতারা আর কথায় সুর চড়ায় নি । কেননা সেই তথাকথিত সংগঠনের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন রয়ে গেছে । বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনার সৃজনশীল নেতৃত্বের কারনে প্রতিবেশী দু’টো রাস্ট্রের সাথে বিরোধ নিস্পত্তি হয়েছিল । আর্ন্তজাতিক আদালতের রায়ে বাংলাদেশ বিজয়ী হয় । বিএনপি এই বিজয়ে কতোটা অখুশী হয়েছিল তা প্রথমে বোঝা যায় নি । সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েও কয়েক ঘন্টা পর তা আবার প্রত্যাহার করে নিয়েছিল । কেননা এ ক্ষেত্রে অর্থাৎ প্রতিবেশী দু’রাষ্ট্রের সাথে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিয়ে বিএনপির চরম ব্যর্থতা ধরা পড়ে যায়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার মন্ত্রিসভা বৈঠকে UNCLOS অনুস্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে এবং বাংলাদেশ অবশেষে UNCLOS-এর সদস্য রাষ্ট্রে পরিণত হয়। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও মিয়ানমার ১৯৯৪ সালেই টঘঈখঙঝ এর সদস্য পদ গ্রহণ করে। মনে রাখা প্রয়োজন বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালেই সমুদ্র আইন করেছিলেন আর জাতিসংঘ তা করেছিল ১৯৮২ সালে । মূলত: বঙ্গবন্ধুর তৈরী করা এই আইনের কারনে বাংলাদেশ আর্ন্তজাতিক আদালতে জয় লাভ করেছিল।
২০০১ সালে UNCLOS অনুস্বাক্ষরের পর ১০ বছরের মধ্যেই অর্থাৎ ২০১১ সালের ২৬ জুলাই নাগাদ বাংলাদেশের মহীসোপানের দাবি জাতিসংঘে পেশ করার কথা। কিন্তু দুঃখজনক, এ দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য যে সকল সাইসমিক ও ব্যাথিমেট্রিক উপাত্ত সংগ্রহ করা প্রয়োজন ছিল সেগুলো সংগ্রহের বিষয়ে বিগত সরকারগুলো কোনো উদ্যোগ নেয়নি। শেখ হাসিনার সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০১০ সালের মার্চ মাসে বঙ্গোপসাগরে সাইসমিক জরিপ সম্পাদন করে। এই জরিপ সম্পাদনের মৌসুম ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত। অতএব, ২০১০ সালে এই সাইসমিক জরিপ সম্পাদন করা না হলে আমরা সময়মতো আমাদের দাবি উপস্থাপন করতেই ব্যর্থ হতাম। এছাড়া দাবি উপস্থাপনের জন্য আরও প্রয়োজন ছিল ব্যাথিম্যাট্রিক উপাত্ত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর বহরে ‘বিএনএস অনুসন্ধান’ নামে একটি অত্যাধুনিক জরিপ জাহাজ সংযোজন করেন। নৌ-বাহিনী তাদের নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে বঙ্গোপসাগরে ব্যাথিম্যাট্রিক প্রোফাইল তৈরি করে। অতঃপর সময়সীমার পাঁচ মাস আগেই আমাদের সরকার এ বিষয়ে সকল কাজ সম্পন্ন করে এবং ২০১১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি উপকূল থেকে ৩৮০ থেকে ৪৬০ নটিক্যাল মাইল অবধি বিশাল এলাকায় বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের কাছে এ বিষয়ে অবস্থান পত্র পেশ করা হয়। উল্লেখ্য, ২০০১-পরবর্তী সরকারগুলো যদি এ ব্যাপারে তাদের জাতীয় স্বার্থে অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদন করতেন তবে অনেক আগেই আমরা এই দাবি জাতিসংঘের মহীসোপানের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিশন (Commission on the Limits of the Continental Shelf - CLCS)-এর কাছে পেশ করতে পারতাম এবং আবেদনের ক্রমানুসারে এতদিনে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে যেত। এই সময় হারানোর দায় বিএনপি-জামাত ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের (২০০৭-০৮), এই দায়িত্বজ্ঞানহীন সরকারদ্বয়কে অবশ্যই ব্যর্থতার দায় নিতে হবে। পাঠক ভাবুনতো ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দেশ পরিচালনায় দায়িত্বে না আসলে সমুদ্র জয় অধরাই থেকে যেতো ।
১৯৯৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব ল ডিগ্রি’তে ভূষিত করে। এই উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট জন্ ওয়েসলিং নিম্নে প্রদত্ত ‘সাইটেশান’ পাঠ করেন : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘আপনার পিতা বাংলাদেশের জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। আর আপনিও বারবার নিজের স্বাধীনতা বিসর্জন দিয়ে এবং নিজের জীবনকে বিপন্ন করে দেশে গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম ঘটিয়েছেন।’‘সরল অথচ তীক্ষ্ণ বাগ্মিতা দিয়ে আপনি দেশের জনগণের জন্য আপনার সংগ্রামের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেছেন। তা হলো “ভাত ও ভোটের অধিকার”। প্রায়ই দেখা যায়, তৃতীয় বিশ্বের জনগণকে ভোটের বিনিময়ে ভাতের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা কিছুই পায় না। অথচ, আপনার সাহসী নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণের ভাত ও ভোট দুটোর নিশ্চয়তাই পাবে।’
‘বাংলাদেশের জনগণের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো তাদের সাহস। এই সাহস কেবল তাদের ধৈর্যের পরিচায়কই নয়, এর দ্বারা নিজেদের সমৃদ্ধিও বয়ে এনেছে তারা।’
‘যে-বছর আপনি জন্মগ্রহণ করেন, সে-বছর জনগণ ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হলেও পাকিস্তানের নাগপাশ থেকে মুক্ত হতে পারেনি। সেই কারণে আপনার পিতা সিকি শতাব্দী ধরে বাংলার স্বায়ত্তশাসনের জন্য আন্দোলন করেন। কিন্তু তাঁকে ও তাঁর জনগণকে একসঙ্গে স্বাধীনতার ফল ভোগ করার সুযোগ বেশি দিন দেওয়া হয়নি। যেসব অফিসার আপনার পিতা, মাতা ও তিন ভাইকে হত্যা করেছে, তারা ভেবেছিল, বাংলার মানুষের প্রতি আপনার পরিবারের সেবা-ভালোবাসার সুযোগ তারা খতম করে দিয়েছে এবং দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আশা সুদূরপরাহত করতে পেরেছে। কিন্তু আপনাকে তারা গণনায় আনতে ব্যর্থ হয়েছিল।’
‘আপনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরবর্তী বছরগুলোয় বাংলাদেশ অস্থিতিশীল ধারায় প্রকাশ্য ও গোপন সামরিক শাসকদের দ্বারা শাসিত হয়েছে। এই অস্থির প্রেক্ষাপটের বিপরীত ধারায় ছিল দুটো জিনিস। প্রথমত, বাংলার জনগণ এবং দ্বিতীয়ত, শেখ হাসিনা। সে সময় সেই গণতন্ত্রের কথা কেউ ভুলে যায়নি, যার প্রেক্ষিতেই জন্ম হয়েছে বাংলাদেশের। আপনার সত্য কথা বলার অবিচল দৃঢ়তা আপনাকে অপশাসকদের কাছে বিপজ্জনক করে তুলেছিল। তারা আপনাকে আপনার পিতার বাসভবনে বন্দী করে রাখলেও আপনার উদ্যমকে, আপনার চেতনাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বিশাল দুর্গের মতো পৈতৃক বাড়ি ও তার উত্তরাধিকারের মধ্যে আটকে থাকলেও আপনার বসবাস ছিল সেই মুক্তির মধ্যে, যে মুক্তি হলো সাহসিকতার মুক্তি। আপনার পিতার একটি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার সিকি শতাব্দী পর আজ আপনি সেখানে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন।’
‘শেখ হাসিনা একজন মহান পিতার সুযোগ্য কন্যা, একটি যোগ্য জনগোষ্ঠীর মহান সেবক। বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় গর্বের সঙ্গে আপনাকে ডক্টর অব ল ডিগ্রি প্রদান করছে।’ (দৈনিক ভোরের কাগজ, ঢাকা : ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭)। পাঠক বোস্টন বিশ^বিদ্যালয়ের উদাহরণ দিয়েছি এই কারনে যে কোথায় কার অবস্থান। শেখ হাসিনাকে দেওয়া আর্ন্তজাতিক সম্মানগুলো নিয়ে লিখলে পত্রিকার অনেকখানি জায়গার প্রয়োজন হবে ।
১৯৯৮ সালে এদেশে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলো এই বন্যায় ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা করেছিল । বিবিসির মতো সংবাদ মাধ্যমগুলো অন্তত ১০ লাখ লোক মারা যাবে বলে আশঙ্কা করেছিল। এই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অমানুষিক পরিশ্রম করেছিলেন । বন্যার পর ক্ষুদে কৃষক, বর্গাচাষি, ক্ষুদে উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়ার জন্য নয়া নীতিমালা তৈরি, আদশ প্রদান, ব্যাংকের শাখায় কারা ঋণ পাচ্ছে তার তালিকা করা- এতসব যুগান্তকারী কাজকর্ম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই সম্ভব হয়েছিল। এগুলোকে আমরা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত না বলে আর কী বলব। তাঁর কর্মনিষ্ঠার কারণে একজন মানুষও না খেয়ে মরেনি । আশ্চর্যজনকভাবে বন্যার পরের বছর বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বেড়েছিল ।
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর মানুষের ওপর ঋণের বোঝা বাড়ানো হয়েছে । ধনী আরও ধনী হয়েছে, গরিব আরও গরিব হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশে আসার পর থেকে সব সময় চেষ্টা করেছেন কীভাবে মানুষের কষ্ট লাঘব করা যায়। সেটা তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় হোক কিংবা ক্ষমতার বাইরে থেকে হোক । দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সব সময় তাঁর চেষ্টা ছিল কীভাবে দেশের জনগণের ঋণের বোঝা কমানো যায় । ১৯৯৭ সালে মাইক্রোক্রেডিট সামিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশগ্রহণ করেন । সেই সময় তিনি হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন । হোয়াইট হাউসের ওই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা আমেরিকার প্রেসিডেন্টের কাছে দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশ ওই সময় পর্যন্ত যে ঋণ নিয়েছিল তা যেন মওকুফ করে দেন ।
প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন মোট ঋণের একাংশ মওকুফ করে দেন। সেই মওকুফ করা অর্থ বাংলাদেশের পরিবেশ সংরক্ষণসহ বনাঞ্চল ও জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীতে পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন শিরোনামে ১৮ক ধারায় গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন আনে । বলা হয় ‘ রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন।’ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ পেয়েছেন।
বিএনপি সরকার ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশকে সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত না করতে দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিতে দেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতিটি করেছে । কোনো অর্থ না দিয়ে আমরা সাব মেরিন ক্যাবলে যুক্ত হতে পারতাম । তখন বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন দেশের সব তথ্য পাচার হয়ে যাবে। এই অবিমিস্যকারিতার কারনে বাংলাদেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে ; পরে বাংলাদেশকে সংযোগ নিতে হয়েছে প্রচুর অর্থের বিনিময়ে। তাই সারা বিশ্বে ১৯৯৬ সালেই মোবাইল ইন্টারনেট চালু হয়ে গেলেও ২০০৬ সালের আগে মোবাইল ইন্টারনেট চালু করার সুযোগই ছিল না।
অনেক পরে খালেদা জিয়া বলেছিলেন সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত না হওয়ার পেছনে দায়ী তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান।তার বিরোধিতার কারনেই তখন সাবমেরিন ক্যাবলে বাংলাদেশ সংযুক্ত হতে পারেনি।এখানে প্রনিধান যোগ্য, আপনারা সবাই জানেন ১৯৯৩ সালেই তথ্য পাচার হয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে বিএনপি সরকার বঙ্গপোসাগরে সিমিউই-৩ নামক সাবমেরিন ক্যবলে সংযোগ প্রত্যাখান করে দেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে।-খেয়াল করে দেখেন, ক্যবলটির নাম দেখেই বোঝা যায় এর আগে আরও দুইটি তাড় ছিল।হ্যাঁ ১৯৮৫ সালে সি মি উই-২তেও তৎকালীন সরকার একই অজুহাতে প্রত্যাখান করেছিল। এর আগে ১৯৭৮ সালে সিমিউই-১ প্রত্যাক্ষান করেছিল তৎকালীন সরকার, বড় লোকের বিলাসীতা বলে।এখানে যেন প্রশ্ন করবেন না তখন আবার সাবমেরিন ক্যাবল দিয়ে কি হতো?
সুভাষ সিংহ রায় : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
মন্তব্য করুন