দণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি কারাগারে বসে টেলিভিশনে সংবাদ দেখছিলেন। সেই সংবাদে একপর্যায়ে দেশের প্রেসিডেন্টের খবর প্রচার হতে থাকে। তখন ওই বন্দি সেই খবর দেখতে অস্বীকৃতি জানায়, তাই ওই বন্দিকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে তিউনিশিয়ার এক কারাগারে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের এক খবরে বলা হয়, তিউনিশিয়ার এক কারাগারে প্রেসিডেন্টের খবর দেখতে অস্বীকৃতি জানানোয় এক কারাবন্দিকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি কারাগারে নিজের সেলে টেলিভিশনে দেশটির প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদের সংবাদ দেখতে অস্বীকৃতি জানানোয় এমন শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটিতে বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকারের পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তিউনিশিয়া হিউম্যান রাইটস লিগ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট সাইদের একটি টেলিভিশন সংবাদ অনুষ্ঠান চলাকালে ওই বন্দি সেটি দেখতে রাজি হননি। এতে প্রেসিডেন্টের প্রতি ওই বন্দির নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে—কর্তৃপক্ষের কাছে এমন অভিযোগ করেন তার সেলের অন্য বন্দিরা (কোয়ার্টারমেট)।
প্রথমে রাষ্ট্রদ্রোহ, পরে ‘শালীনতার লঙ্ঘন’
অন্যদিকে, ওই বন্দির আইনজীবী আদেল সঘাই জানান, প্রথমে তার মক্কেলের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে অপরাধের’ অভিযোগ আনা হয়েছিল। পরে তা পরিবর্তন করে ‘শালীনতার লঙ্ঘন’ হিসেবে দণ্ড দেওয়া হয়, যেন বিষয়টিকে রাজনৈতিক না দেখায়।
সঘাই বলেন, ‘আমার মক্কেল শুধু একটি খবর না দেখার কারণে সাজা পাচ্ছেন। এটা বাকস্বাধীনতার স্পষ্ট লঙ্ঘন।’
বন্দির পরিবার জানায়, তারা ভাবতেও পারেননি, টিভি না দেখার মতো ঘটনায় অতিরিক্ত সাজা হতে পারে। ওই ব্যক্তি আগেও অবৈধ অভিবাসনের এক মামলায় আটক ছিলেন, যেটি পরে খারিজ হয়ে যায়।
আইনজীবীর দাবি, বন্দি প্রেসিডেন্ট সাইদের বিরুদ্ধে একবার ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, ‘তুমি আমার জীবন ধ্বংস করেছ।’
তার অভিযোগের ইঙ্গিত ছিল তিউনিশিয়া ও ইতালির মধ্যে হওয়া এক অভিবাসন চুক্তির দিকে। যার কারণে তিনি ইতালিতে বৈধতা হারান।
কাইস সাইদ ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এরপর ২০২১ সালের জুলাইয়ে এক অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে নিজের ক্ষমতা বাড়িয়ে সংসদ বিলুপ্ত করেন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংকুচিত করেন।
এই পদক্ষেপগুলো নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও পর্যবেক্ষকরা তিউনিশিয়ার সাংবিধানিক ও নাগরিক স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়ার ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন