কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:০৮ এএম
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৫২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সম্পাদকীয়

মিয়ানমার সীমান্তে নজর দিন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকট ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। দেশটিতে সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে চলমান গৃহযুদ্ধের প্রভাব পড়েছে আমাদের দেশেও। রাখাইনকে ঘিরে ভূরাজনীতি এবং পরাশক্তিগুলোর স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকায় মিয়ানমারের সঙ্গে সংকট সমাধান আমাদের জন্য বড় কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবেও সামনে এসেছে। জান্তা বাহিনীর তিন শতাধিক সদস্যের পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এবং সীমান্তের কাছে বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে নিরাপত্তা হুমকি ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সরকারি বাহিনীর তিন শতাধিক সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সরকারি বাহিনীর সদস্যদের দ্রুত ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি সামনে কোনোভাবেই যেন রোহিঙ্গারা ঢুকতে না পারে, সেজন্য সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

তবে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় আরাকান আর্মি ঢুকে পড়ায় জীবন বাঁচাতে তারা সাগরতীরে অবস্থান নিয়েছে। মিয়ানমারের সাগরের তীরে হাজার হাজার রোহিঙ্গার অবস্থান দেখা গেছে। কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫টি রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকা দেখা গেছে। সেসব নৌকায় করে এপারে ঢোকার চেষ্টা করে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। কিন্তু বিজিবি ও কোস্টগার্ডের ভয়ে তারা অনুপ্রবেশ করতে পারছে না।

মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশের স্বার্থের দিক থেকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো। আর এ ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনকেই বাংলাদেশের কূটনীতির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সরকারি হিসেবে বাংলাদেশের বর্তমানে ১২ লাখের মতো রোহিঙ্গা রয়েছে। রাখাইনে আঞ্চলিক পরাশক্তিগুলোর যেখানে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে, সেখানে আমাদের স্বার্থ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে গত বছর নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব বাস্তবায়নের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আরও বহুগুণ বাড়াতে বৈশ্বিক সম্প্রদায় বিশেষ করে আসিয়ান সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

সরকার কূটনৈতিকভাবেই সমস্যা সমাধানের জন্য মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ এবং অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চীন এবং ভারত দুটি দেশকেই পাশে রাখতে চাইছে। সম্প্রতি নতুন মেয়াদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ভারতে প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর শেষ করে এসে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, মিয়ানমার ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। একসঙ্গে দুই দেশ কাজ করবে সে বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ মাসে চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বলেছেন, মিয়ানমার সংকট সমাধানে চীনকে পাশে চায় বাংলাদেশ।

আমরা মনে করি, মিয়ানমারের বর্তমান সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা সংকট কোনোভাবেই যেন বিস্তৃত হতে না পারে সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। পাশাপাশি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার তৎপরতা বাড়ানো প্রয়োজন। কারণ রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য শুধু বোঝাই নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ তো বটেই, আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্যও একটি বড় হুমকি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে ছিন্নমূল বৃদ্ধাদের নিয়ে দোয়া মাহফিল

ফিকশন বিভাগে রকমারি বেস্টসেলার অ্যাওয়ার্ড পেলেন রাহিতুল ইসলাম

‘সুযোগ হাতছাড়া করায় ভীষণ হতাশ জয়-মুমিনুলরা’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে টেলিকমসহ সব নীতিমালা রিভিউ করবে : আমির খসরু

বিয়েতে দাওয়াত না দেওয়ায় সংঘর্ষ

৮০০ বছর ধরে শক্তি জমছে নরসিংদী অঞ্চলে, বড় ভূমিকম্প হবেই

বাংলাদেশিদের আপ্যায়নে আবেগাপ্লুত সাদিও মানে

পুলিশের হাতে কামড় দিয়ে পালালেন রবিন

প্রাইম ইউনিভার্সিটির ৩য় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

নির্বাচন না হলে দেশে সংকট দেখা দেবে : জামায়াত আমির

১০

দল থেকে সুখবর পেলেন বিএনপির ১০ নেতা

১১

অ্যালকালাইন ওয়াটার আসলে কতটা উপকারী

১২

শক্তিশালী পিঠ বানানোর আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম : সামান্থা

১৩

নানা আয়োজনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

১৪

১০০ দিনে ক্যাপিটালসে মোস্তাফিজকে ঘিরে অদ্ভুত নাটক

১৫

এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলও নরসিংদী

১৬

‘সংসদ নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন আছে’

১৭

গৌহাটিতে প্রথম দিন শেষে চাপে প্রোটিয়ারা

১৮

ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা, কবে কোথায় আঘাত হানবে

১৯

আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করার সন্নিকটে বাংলাদেশ

২০
X