কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৫ এএম
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৩ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সম্পাদকীয়

অপেক্ষা শুধু ফেরার

অপেক্ষা শুধু ফেরার

ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া ২৩ বাংলাদেশি নাবিকের জিম্মিদশা থেকে মুক্তির খবর তাদের পরিবার-পরিজনের মতো দেশ-বিদেশের সবার কাছেই অত্যন্ত আনন্দ ও স্বস্তির। বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে মুক্ত করতে টানা এক মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে জাহাজ মালিক, বাংলাদেশ সরকারসহ সংশ্লিষ্টরা। অবশেষে অবসান হলো সেই প্রতীক্ষার। এখন অপেক্ষা স্বজনদের কাছে ফেরার।

মঙ্গলবার কালবেলায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, গত শনিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় জলদস্যুদের সঙ্গে মুক্তিপণের বিনিময়ে জাহাজটি মুক্ত করা হয়। এটি আরব আমিরাতের দিকে যাচ্ছে। সেখানে পণ্য খালাস করা হবে এবং নাবিকরা শিগগির দেশে ফিরবেন। ১৯ কিংবা ২০ এপ্রিল জাহাজটি আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এরপরই জানা যাবে মুক্ত নাবিকদের মধ্যে কারা কারা জাহাজে থাকবেন এবং কারা আবুধাবি থেকে দেশে ফেরত আসবেন। জাহাজটি আরব আমিরাতের দুবাই যাওয়ার পর সেখান থেকেই বিমানে উঠবেন নাবিকরা। কত টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে এ জিম্মিদের মুক্তি ঘটেছে, তা নিশ্চিত করেনি জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কেউই।

কালবেলার হাতে মুক্তিপণ দেওয়ার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, জলদস্যুদের কাছে জিম্মি থাকা এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের চারপাশে একটি উড়োজাহাজ বারবার চক্কর দিচ্ছিল। তখন জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের সবাই এলেন জাহাজের ডেকে। তারা সবাই হাত তুলে কথা বলেন। ২৩ জন অক্ষত ও নিরাপদে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর মালিকপক্ষ মুক্তিপণের টাকা প্রদান করতে সম্মতি দেয়। পরে সেই উড়োজাহাজটি তিনটি চক্কর দেয় জাহাজের এক পাশে। প্রতিটি চক্করে সাদা পানি নিরোধক ট্যাপে মোড়ানো ডলারভর্তি ব্যাগ ফেলা হয় ওপর থেকে। দুটি স্পিডবোটে থাকা সাত জলদস্যু এ তিনটি ব্যাগ সাগর থেকে তুলে নেয়। তারা ব্যাগ বুঝে পাওয়ার পর উড়োজাহাজটি চলে যায়। এর প্রায় আট ঘণ্টা পর বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় জাহাজসহ ২৩ নাবিককে মুক্তি দেয় জলদস্যুরা। স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১২টার দিকে দস্যুরা জাহাজ থেকে নেমে যাওয়ার পর ২৩ ক্রুসহ জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিকে রওনা হয়। আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে চলাচলকারী বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যিক জাহাজ জলদস্যুর কবলে পড়ার ঘটনা নতুন নয়। এসব ঘটনায় জলদস্যুরা জাহাজ আটক করে নাবিকদের প্রাণের বিনিময়ে মুক্তিপণ দাবি করে। যথাযথভাবে তাদের দাবি মানতে পারলে আটক নাবিকদের ছেড়ে দেয়। আর না পারলে বীভৎস নির্যাতনের পর একসময় তাদের জীবনের সমাপ্তি ঘটে দস্যুদের হাতে। জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর এ দুই তিক্ত ও ভয়াবহ অভিজ্ঞতাই পৃথিবীর নানা দেশের মানুষের হয়েছে বিভিন্ন সময়।

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি নাবিকদের মুক্ত করার প্রচেষ্টায় টানা প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সরকার ও জাহাজের মালিকপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। পরিস্থিতি বিবেচনায় সর্বাগ্রে প্রাধান্য দেওয়া জরুরি ছিল জিম্মিদের সুরক্ষিত ও জীবন্ত উদ্ধার। তারা সে লক্ষ্যেই সব তৎপরতা অব্যাহত রেখেছিল বলেই স্বস্তির ঘটনাটি শেষমেশ ঘটেছে। পাশাপাশি আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক মহলের সমুদ্রযাত্রায় এ দস্যুপনা ঠেকাতে তৎপর হওয়ার কোনোই বিকল্প নেই। কেননা এ পথে দস্যুপনার বিরুদ্ধে এক দশক আগে জাতিসংঘ, ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কিছু দেশের কঠোর হওয়ার পর দস্যুবৃত্তি কমানোয় তা অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। সমুদ্র নিরাপদ ও সুরক্ষিত করতে এসব তৎপরতা আবার বাড়ানো জরুরি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চাঁদা না দেওয়া মুক্তিযোদ্ধাকে মারধর, আ.লীগ নেতার ভাগনে কারাগারে

জেনারেটর চলে না ডিমলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, রোগীদের ভোগান্তি বেড়েছে

শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে বিএনপি সংকল্পবদ্ধ : মির্জা ফখরুল

সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ হচ্ছে!

৭০ বছর বয়সে প্রেমিকা খুঁজতে বিজ্ঞাপন, সপ্তাহে খরচ ৪৩ হাজার টাকা

সৌদি আরবে গৃহকর্মীর বাঁচার আকুতি

রেলের ভাড়া বৃদ্ধি সম্পূর্ণ জনস্বার্থবিরোধী : জাতীয় কমিটি

বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে কন্যাসহ গৃহবধূর অনশন

নারী উদ্যোক্তার বেডরুমে উড়ন্ত সাপ, অতঃপর...

ভুট্টা গাছ টানতেই বেরিয়ে এলো ৪৫ গোখরা সাপ

১০

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

১১

আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে রাস্তার ইট বিক্রির অভিযোগ

১২

হিটস্ট্রোকে মরছে গবাদিপশু-মুরগি, খামারিদের হাহাকার

১৩

সাবেক বার্সা তারকাকে পেছনে ফেললেন লেভা

১৪

ইসরায়েলিদের বাঁচাতে ফিলিস্তিনিদের কাছে দুই দেশের আকুতি

১৫

চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার

১৬

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পেছানোর নির্দেশ ইসির

১৭

ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ দিনাজপুরের জনজীবন

১৮

তীব্র গরমে হাতপাখা বিক্রির হিড়িক

১৯

তাপপ্রবাহ আর লোডশেডিংয়ে জামালপুরে বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কা

২০
*/ ?>
X