সারাদেশের তীব্র তাপপ্রবাহে মানুষের জনজীবন একেবারেই নাকাল। এতে মানুষের জীবনযাত্রা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। হিটস্ট্রোকে মানুষ যেমন মারা যাচ্ছে তেমনি গত কয়েক দিনে ডেইরি ও পোল্ট্রি ফার্মে মারা গেছে অনেক গরু ও মুরগি।
এদিকে টিনের চালে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করেও ঠান্ডা করা যাচ্ছে না গরমের দাপট। প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার করে গোসল করিয়ে ও পানি ছিটিয়েও বাঁচানো যাচ্ছে না ফার্মের প্রাণীগুলোকে। মারা যাচ্ছে অসংখ্য মুরগি। ফলে ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কা করছেন খামারিরা।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকার ফালগুনকরা আপন রিসার্চ পোল্ট্রি ফার্মে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের চালের ওপর কৃত্রিম ঝরনা দিয়ে পানি ছিটানো হচ্ছে। যাতে করে মোরগগুলো ফার্মের ভেতরে তীব্র গরম থেকে রক্ষা পায়। এ ছাড়া ফার্মে থাকা গরুকে আঁশজাতীয় খাবার কমিয়ে বেশি দেওয়া হচ্ছে তরলজাতীয় খাবার।
পোল্ট্রি মালিকরা বলছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে লোকসান গুনতে হবে লাখ লাখ টাকা।
অতিরিক্ত গরমের সময়ে খাবার সরবরাহ কমিয়ে পর্যাপ্ত পানি ও স্যালাইন খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন চৌদ্দগ্রাম প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান।
এদিকে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, গত ১০ দিনে প্রায় ১০ লাখ মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা গেছে। যার ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ প্রায় ২০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া প্রতিদিন মারা যাচ্ছে ১ লাখ মুরগি। যার ৮০ শতাংশ ব্রয়লার, ১০-১৫ শতাংশ লেয়ার ও সোনালী। বাকি ৫ শতাংশ রয়েছে দেশি মুরগি। তবে সংস্থাটি চলমান পরিস্থিতিতে দেশের মুরগি ও ডিমের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, ভয়ানক এই পরিস্থিতিতে ডিম ও মুরগি উৎপাদন কমেছে ৪ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, ‘কোরবানি সামনে রেখে গবাদিপশু মারা যাওয়ার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা খামারিদের জন্য খুব কঠিন। আধুনিক খামারিরা আগেভাগে প্রস্তুতি নিলেও প্রান্তিক খামারিদের অধিকাংশ জানেন না, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কী করতে হবে।’
মন্তব্য করুন