কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৩ পিএম
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বুয়েটে শিবির ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা : সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের উদ্বেগ

বুয়েট ও সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের লোগো। ছবি : সংগৃহীত
বুয়েট ও সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের লোগো। ছবি : সংগৃহীত

ক্যাম্পাসে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ থাকলেও বুয়েট ক্যাম্পাসে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র শাখার গোপন তৎপরতার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ-৭১।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের মহিমান্বিত ও যুদ্ধাপরাধকে খর্ব করে দেখিয়ে আসছে ইসলামী ছাত্রশিবির।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের মহিমান্বিত করা এবং যুদ্ধাপরাধকে খর্ব করতে ইসলামী ছাত্রশিবির।

যুদ্ধাপরাধীদের দায়মুক্তির দাবিতে সোচ্চার এক ব্রিটিশ আইনজীবী পরিচালিত একটি পেজে বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থীদের নামে মিথ্যা ও উসকানিমূলক তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার পরপরই এমন বিবৃতি এলো।

বিবৃতিতে মিথ্যা ও উসকানিমূলক তথ্য ছড়ানো বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত সচেতনতার দাবি জানানো হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ওই পেজের অনুষ্ঠানে বুয়েটের ছাত্র আবরার ফায়াজকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। বুয়েটকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ কমিটি দিচ্ছে এমন গুজব ছড়ায় আবরার ফাইয়াজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে। এরপরই বুয়েটের বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজে এই বার্তা ছড়িয়ে পড়ে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, পেজটিতে এমন বিষয় প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে যেটি প্রায়ই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা ও শিবিরের প্রচারমাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এসব পেজের মাধ্যমে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অচলাবস্থাকে আরও বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ।

২০১৩ সাল জুড়ে, জামায়াত ও শিবির বাস ট্রেনে আগুন বোমা হামলা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের পক্ষে সোচ্চার ব্লগারদের হত্যায় মেতে ওঠে।

এ ছাড়া পেজে যুদ্ধাপরাধের বিচারকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলেও উল্লেখ করা হয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার কারণে শিবিরের ছুরিকাঘাতের শিকার তন্ময় আহমেদকে নিয়েও এতে উসকানিমূলক তথ্য ছড়াতে দেখা যায়।

কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর নিয়োগ করা যুক্তরাজ্যের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাইকেল পোলাক ওই পেজের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন। স্বাধীনতার পাঁচ দশক পরেও যিনি যুদ্ধাপরাধীদের বীর বলে অভিহিত করার মতো তথ্যও ছড়ানো হয়।

বিবৃতিতে যুদ্ধাপরাধ বিরোধী আন্দোলনের কর্মী তন্ময় আহমেদসহ যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে সোচ্চার মুক্ত চিন্তাবিদদের ওপর হুমকি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের হাতে শহীদ বীর পরিবারের লাখ লাখ সদস্যদের চাওয়া ন্যায়বিচারের দাবিকে ভণ্ডুল করতে পোলাক, টবি ক্যাডম্যানসহ আরও অনেকেই লবিস্টদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে জামায়াতসহ যুদ্ধপরাধীরা।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ-৭১ এর বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধাপরাধীদের উত্তরসূরিদের মহিমান্বিত করার চেষ্টা চলছে। বুয়েটে ক্যাম্পাসে মানবাধিকারের নামে তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছ। অথচ তাদের বক্তব্য যুদ্ধাপরাধীদের সুরের প্রতিধ্বনি করে যা নিন্দনীয়।

এতে বলা হয়, এই ধরনের কার্যকলাপ একটি সাধারণ সত্যের সাক্ষ্য দেয় যে জামায়াতের ছাত্র শাখা শিবিরসহ বেশ কয়েকটি ফ্রন্ট এখনো যুদ্ধাপরাধ অস্বীকার করার জন্য একটি প্রচারণা চালাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সামনে যুদ্ধাপরাধীদের নির্দোষ দেখানোর চেষ্টা চলছে। ছাত্রদের লক্ষ্য করে ভুল ইতিহাস প্রচারের একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ এটি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিচালিত সোচ্চার নামে পেজটি কাসেম আলীর পরিবারের ভাড়া করা পোলাক উদ্বোধন করেছিলেন। যিনি যুদ্ধাপরাধীর দায়মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য মানবাধিকার ক্ষেত্রকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বব্যাপী সমর্থন জোগাড় করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ লবিস্ট সংস্থার সঙ্গে এক মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিলেন।

১৯৭১ সালে গণহত্যা পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল তৎকালীন ছাত্র সংঘ, যা ১৯৭৭ সালে শিবির নামে নতুন নামকরণ করা হয়। দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার বিরুদ্ধে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ শুরু করে। নিজস্ব হত্যা মিশন ও প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা ছাত্রদের রগ কাটা শিবিরের ট্রেডমার্ক বলে জানা গেছে।

একটি পোস্টে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের ওয়েব টিমে সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করা হচ্ছে তন্ময়ের বিরুদ্ধে। যিনি মৌলবাদীদের হামলায় আহত হয়ে ১৩০টি সেলাই নিয়েছিলেন।

জামাতের ভাড়া করা অন্য আইনজীবী ক্যাডম্যানের সঙ্গে মিলে পোলাকও যুদ্ধাপরাধকে ক্ষুণ্ন করে যৌথ বিবৃতি জারি করেন। তারা নিজের মক্কেলদের যারা ভয়ংকর যুদ্ধাপরাধী তাদের বরং ভুক্তভোগী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশিদের হত্যাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ হলেও প্রত্যন্ত হাওর এলাকায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার অভিযোগে ২৪ শিক্ষার্থীকে আটক করার পর শিবিরের কার্যক্রম সামনে আসে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মদ পানে মহা সর্বনাশ, ৬ জনের মৃত্যু

বড় ভাই মির্জা ফখরুলের মতোই কবিতা দিয়ে শুরু করলেন মির্জা ফয়সল

সোনারগাঁয়ে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন

মা ইলিশ রক্ষায় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার টহল

ন্যাশনাল পিপলস যুব পার্টির মাদকবিরোধী আলোচনা সভা

নিউমার্কেটে চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম, নগদ টাকাসহ গ্রেপ্তার ১

আন্দোলনরত শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করায় ছাত্রশিবিরের নিন্দা

শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংকের বিবৃতি

কক্সবাজার আদালতে বিচারকের মোবাইল-মানিব্যাগ চুরি

পাঠ্যপুস্তক ছাপার দায়িত্ব হস্তান্তর ‘মাথাব্যথায় মাথা কাটার মতো সিদ্ধান্ত’ : টিআইবি

১০

বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ে ভারতকে হারাল অস্ট্রেলিয়া

১১

মৌসুমি বায়ুসহ আগামী ৪ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস

১২

চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা

১৩

এবার উপদেষ্টাদের নিয়ে মুখ খুললেন সামান্তা শারমিন

১৪

ঢাকায় আসছেন জাকির নায়েক

১৫

ছক্কা মেরে ইতিহাস গড়লেন স্মৃতি মান্ধানা!

১৬

উপদেষ্টা রিজওয়ানাকে এনসিপি নেতার হুঁশিয়ারি

১৭

একটি দল ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় : কফিল উদ্দিন 

১৮

চাকসু নির্বাচনে নতুন প্রত্যয়ে ছাত্রদল

১৯

বন্দর ব্যবসায়ী নেতারা / মাশুল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধের ষড়যন্ত্রের অংশ

২০
X