নূর হোসেন মামুন, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৭ এএম
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক সুমন ছুটছেন ক্ষত নিয়ে

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন
গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক সুমন ছুটছেন ক্ষত নিয়ে

দৈনিক কালবেলার চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিসের ফটো সাংবাদিক মোহাম্মদ সুমন। বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচ দিয়ে ঢুকে যায় রাবার বুলেট। সেটা বের করা গেলেও ক্ষত সারেনি এখনো। দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে ছুটে চলেছেন কাজপাগল এই সংবাদকর্মী।

গত ১৮ জুলাই চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন তিনি।

যখন যেখানে ঘটনা ঘটছে, ক্যামেরার লেন্সে সেটাই ফ্রেমবন্দি করছেন তিনি। আর্থিক সংকট থাকলেও নিজের কাছেই সেই সীমাবদ্ধতা লুকিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন। অফিসের পাশাপাশি কিছু ফটো সাংবাদিক সহকর্মী এগিয়ে এলেও অন্য কেউ তার খবর রাখেননি। এ নিয়ে অক্ষেপও নেই তার।

গত জুলাইয়ের প্রথম দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। দিন দিন জোরালো হয় আন্দোলন। ব্যস্ততা বাড়ে সাংবাদিকদের। চট্টগ্রামে গত ১৫ জুলাই থেকে আন্দোলনকারীরা পুলিশ ও ছাত্রলীগের রোষানলে পড়েন। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদ। এরপর সারা দেশেই আন্দোলন তুঙ্গে ওঠে।

১৮ জুলাই চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট, ষোলোশহর, মুরাদপুর এবং ২ নম্বর এলাকা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। সেদিন বহদ্দারহাটে সমাবেশ করছিলেন আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যা নাগাদ পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিরীহ ছাত্রদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। নিক্ষেপ করা হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড। এতে শতাধিক আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হন। নিহত হন ‍চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র ওয়াসিম উদ্দিন ও এমইএস কলেজের ছাত্র তানভীর সিদ্দিকী। সেখানে ছাত্রদের ওপর গুলিবর্ষণের ছবি তুলছিলেন সুমন।

সুমন বলেন, ১৮ জুলাই বহদ্দারহাট এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলি হয়। বিভিন্নভাবে আমি সংঘর্ষের ছবি তুলছিলাম। হঠাৎ কিছু বুঝে ওঠার আগেই পায়ে ব্যথা অনুভব করলাম। পায়ের ওপর শক্ত করে দাঁড়াতে কষ্ট হচ্ছিল। তাকিয়ে দেখলাম প্রচুর রক্ত বের হচ্ছে। হাত দিতেই দেখলাম গুলি হাঁটুর হাড় ভেদ করে বের হয়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে গেলাম। সহকর্মীদের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিলাম।

এখনো চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছেন জানিয়ে বলেন, বর্তমানে ব্যথা কিছুটা থাকলেও আগের চেয়ে ভালো আছি। এ পর্যন্ত দৈনিক কালবেলার চট্টগ্রাম ব্যুরোপ্রধান ও বিশেষ প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম ও ফটোসাংবাদিক সহকর্মী ছাড়া কেউই আমার খোঁজ নেয়নি। বিশেষ করে সাইদুল ভাই আমাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। আশা করি, সামনে কিছু চিকিৎসা শেষে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাব।

কালবেলার চট্টগ্রাম ব্যুরোপ্রধান ও বিশেষ প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম বলেন, দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিলেও সুমন আসলে খুবই কাজপাগল একটা ছেলে। পেশাগত দায়িত্ব পালনে তিনি যথেষ্ট সচেতন। বহদ্দারহাটে যখন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, তখন আমরাও সেখানে ছিলাম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সুমন গুলিবিদ্ধ হন। এমন একটি ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তাকে যতটুকু সম্ভব আমি ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করে আসছি। সবার সহযোগিতা পেলে তার পারিবারিক সুবিধা হবে বলে মনে করি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দুই বাংলাদেশি যুবককে ফেরত দিল বিএসএফ

বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী জনগণের পাশে রয়েছে : নীরব

শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা আজ

ছক্কার ঝড় তুলে ম্যাচসেরা সাইফের মুখে আত্মবিশ্বাসের কথা

আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করে তৃপ্ত জাকের

আবারও ভারতের কাছে কুপোকাত পাকিস্তান

সাবেক যুবদল নেতার উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার 

আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা

কাশিয়ানীতে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চান মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীরা

১০

নির্বাচনের জন্য দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি : লায়ন ফারুক 

১১

সাইফ ঝড়ে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

১২

আফগানদের বিরুদ্ধে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

১৩

বৃষ্টিসহ আগামী ৫ দিনের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

১৪

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ও কার্টিন ইউনিভার্সিটির চুক্তি স্বাক্ষর

১৫

স্মার্ট কার্ডের সংকট কাটাতে আসছে ‘ব্ল্যাংক কার্ড’

১৬

সেই বিয়ের কথা স্বীকার করলেন পরীমনি

১৭

দুর্গোৎসবে টাইমস স্কয়ারে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের আবহ

১৮

‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ২০০৯’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি

১৯

জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালা সংশোধন

২০
X