ডা. মো. মাহমুদ হাসান
প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ১৫ জুন ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

‘মেটাবলিক অ্যাসোসিয়েটেড ফ্যাটিলিভার’ এক নীরব ঘাতক

‘মেটাবলিক অ্যাসোসিয়েটেড ফ্যাটিলিভার’ এক নীরব ঘাতক

মেটাবলিক অ্যাসোসিয়েটেড ফ্যাটিলিভার ডিজিজ কী: লিভার আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা হজম, পুষ্টি শোষণ এবং শরীরের বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করে। লিভারের ওজনের ৫ শতাংশের বেশি চর্বি জমলে তাকে ফ্যাটিলিভার বলা হয়। মেটাবলিক অ্যাসোসিয়েটেড ফ্যাটিলিভার ডিজিজ হচ্ছে মদ্যপান ছাড়া অন্যান্য কারণে লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমে যাওয়া।

কেন ফ্যাটি লিভার চিন্তার কারণ: সময়মতো চিকিৎসা করা না হলে এ রোগ থেকে ন্যাশ বা লিভারের প্রদাহ, লিভার সিরোসিস, লিভার ফেইলার বা লিভার ক্যান্সার হতে পারে। এ ছাড়া হৃদরোগ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। ডায়াবেটিক রোগীদের সুগার নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ে।

এ রোগ কেন হয়: ওবেসিটি, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, রক্তে চর্বির মাত্রা বেশি থাকা, বিশেষ করে ট্রাইগ্লিসারাইড ও কোলেস্টেরল, উচ্চরক্তচাপ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, যেমন অতিরিক্ত চিনি, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়ামের অভাব ইত্যাদি অন্যতম।

ডায়াবেটিক রোগীদের কি ফ্যাটিলিভার বেশি হয়: টাইপ ২ ডায়াবেটিক রোগীদের ফ্যাটিলিভার হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ এসব রোগীর ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, দীর্ঘমেয়াদি হাই ব্লাড সুগার, রক্তে চর্বির আধিক্য দেখা যায়।

এ রোগে আক্রান্ত কি না, কীভাবে বুঝবেন: ফ্যাটিলিভার প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো সুস্পষ্ট লক্ষণ থাকে না, তাই একে ‘নীরব

ঘাতক’ বলে। তবে রোগের তীব্রতা বাড়লে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন ক্লান্তি এবং দুর্বলতা, পেটের ওপরের ডানদিকে অস্বস্তি বা ব্যথা, ক্ষুধামান্দ্য, বমি বমি ভাব, জন্ডিস, পেটে পানি জমা, পা ফোলা ইত্যাদি।

রোগটি কি চিকিৎসায় ভালো হয়: ফ্যাটিলিভার অ্যাডভান্স বা সিরোসিস পর্যায়ে না পৌঁছালে সঠিক ও সময়মতো চিকিৎসায় সুস্থ হওয়া সম্ভব। এজন্য ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদিতে ভুগলে হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রতিরোধের উপায়: ফ্যাটিলিভার প্রতিরোধ বা প্রতিকারে জীবনযাত্রার পরিবর্তন অপরিহার্য। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস যেমন ফল, সবজি, শস্য এবং চর্বিহীন প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ; প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি (স্যাচুরেটেড ও ট্রান্স ফ্যাট) পরিহার; পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান; প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট মাঝারি ধরনের শারীরিক কার্যকলাপ (হাঁটা, জগিং, সাইক্লিং বা সাঁতার ইত্যাদি); ওজন নিয়ন্ত্রণ; ডায়াবেটিস বা উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ এবং জীবনযাত্রা পরিবর্তন করে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

চিকিৎসার পরও রোগটি ফিরে আসতে পারে: পুনরায় অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রায় ফিরলে, ওজন বাড়লে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে ফ্যাটিলিভার আবার ফিরে আসতে পারে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তেলবাহী ট্রাকের চাপায় ওয়ার্ড ছাত্রদল সভাপতিসহ নিহত ২

স্বাস্থ্য পরামর্শ / গ্লুকোমিটারে রক্তের গ্লুকোজ পরিমাপের প্রয়োজনীয়তা ও পদ্ধতি

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিতে পিছু হটল ভারত, রুশ তেল কেনা বন্ধ

খুলনায় ড্যাব এর প্যানেল পরিচিতি সভা

টানা জয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হার বাংলাদেশের

১৯ টি বিষয়ে ঐকমত্য এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে : অধ্যাপক আলী রীয়াজ

ঢাকায় আ.লীগের গোপন বৈঠক থেকে গ্রেপ্তার ২২, এক সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে

হাসপাতালে গিয়ে বদরুদ্দীন উমরের খোঁজ নিলেন নাহিদ

কুয়েতে ১৩০ বাংলাদেশি শ্রমিক বিপাকে

জামায়াত আমিরকে দেখতে হাসপাতালে নাহিদ ইসলাম

১০

দেশ গড়তে আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : তারেক রহমান

১১

‘এই এদের ধরেন তো’, সেই ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি

১২

চট্টগ্রামে ভূমিকম্প, আতঙ্কে ছোটেন অনেকে

১৩

শেষ সময়ে ঐকমত্য কমিশনের সভা বর্জন করল বাম দলগুলো

১৪

বিশ্রাম চান না মেসি

১৫

পল্লবী এলাকায় চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরির নির্দেশ আদালতের

১৬

‘আমি তোকে বিয়ে করিনি, এতদিন অভিনয় করেছি মাত্র’

১৭

ক্ষমতার লোভে জুলাইকে বিক্রি করা যাবে না : রাশেদ প্রধান

১৮

বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা সম্পর্ক আর দৃঢ় করার সুযোগ রয়েছে

১৯

তালিকাভুক্তিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আইসিবির সভা

২০
X