

বিগ ব্যাশ লিগে (বিবিএল) পা রাখাটা স্বপ্নের হওয়ার কথা ছিল পাকিস্তানের তারকা পেসার শাহীন আফ্রিদির। কিন্তু সেই স্বপ্ন মুহূর্তেই বদলে গেল অস্বস্তিকর বাস্তবতায়। গিলংয়ের সাইমন্ডস স্টেডিয়ামে বিবিএল অভিষেকে ভয়ংকর এক দিন কাটালেন শাহীন শাহ আফ্রিদি—যেখানে দুটি বিমারই (বাউন্স ছাড়া কোমড়ের উপর বল) তাঁকে ম্যাচের মাঝপথে বোলিং আক্রমণ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মেলবোর্ন রেনেগেডসের বিপক্ষে ব্রিসবেন হিটের হয়ে খেলতে নেমে পাকিস্তানের ওয়ানডে অধিনায়কের এই অভিষেক শেষ পর্যন্ত পরিণত হয় এক ‘হরর শো’-তে। ২.৪ ওভারে ৪৩ রান খরচ করে উইকেটশূন্য থাকা শাহীনের ওপর চাপ বাড়ে ম্যাচের শেষভাগে এসে।
ঘটনাটি ঘটে রেনেগেডস ইনিংসের ১৮তম ওভারে। ওভারের তৃতীয় বলে শাহীনের ছোড়া কোমরসমান ফুলটসটি সরাসরি বিমার হিসেবে চিহ্নিত হয়। টিম সেইফার্ট কোনও রকমে ব্যাটে লাগিয়ে দুই রান নেন, আর তাতেই পূর্ণ হয় তাঁর শতক। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার আগেই আবার বিপত্তি—পঞ্চম বৈধ বল হওয়ার কথা থাকলেও আরেকটি কোমরসমান ফুলটস ছুড়লেন শাহীন। এবার বাঁহাতি ব্যাটার অলিভার পিককে বিপদ এড়াতে শরীর সরাতে হয়, বল চলে যায় উইকেটকিপারকেও ফাঁকি দিয়ে, আসে আরও দুই রান।
পরপর দুটি বিমারের পর সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চান শাহীন। কিন্তু অন-ফিল্ড আম্পায়ার ব্রিসবেন হিট অধিনায়ক নাথান ম্যাকসুইনির সঙ্গে আলোচনা করে তাঁকে বোলিং আক্রমণ থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বাকি দুটি বল শেষ করেন স্বয়ং অধিনায়ক ম্যাকসুইনি।
শাহীনের এই ব্যর্থতাই রেনেগেডসকে বড় সংগ্রহ গড়ার পথ করে দেয়। নির্ধারিত ২০ ওভারে তারা তোলে ৫ উইকেটে ২১২ রান—যা ম্যাচের মোড় অনেকটাই ঘুরিয়ে দেয়।
এর আগে ম্যাচের শুরুতেও স্বস্তিতে ছিলেন না শাহীন। প্রথম ওভারে ৯ রান হজম করেন, যেখানে সেইফার্ট হাঁকান দুটি চার। ১৩তম ওভারে ফিরে এসে পরিস্থিতি আরও খারাপ—একটি ছক্কা ও দুটি চারে ১৯ রান দেন তিনি।
একই ম্যাচে মুখোমুখি হন নিজের জাতীয় দলের সতীর্থ মোহাম্মদ রিজওয়ানেরও। তবে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন রিজওয়ান; ১০ বলে মাত্র ৪ রান করে প্যাট্রিক ডুলির শিকার হন তিনি।
উল্লেখ্য, বিবিএলে পাকিস্তানি তারকাদের জন্য দিনটা মোটেও সুখকর ছিল না। এর আগের দিন সিডনি সিক্সার্সের হয়ে অভিষেকে ব্যর্থ হন বাবর আজমও—পার্থ স্কর্চার্সের বিপক্ষে পাঁচ বল খেলে করেন মাত্র ২ রান।
পাকিস্তান ক্রিকেটে সম্প্রতি নেতৃত্বের দায়িত্ব পাওয়া শাহীন আফ্রিদির জন্য এই ম্যাচ নিঃসন্দেহে ভুলে যাওয়ার মতো। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভয়ংকর গতির জন্য যাঁকে চেনেন সবাই, বিবিএলের আলোয় সেই গতিই এদিন তাঁর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হয়ে উঠল।
মন্তব্য করুন