চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেষে বিদেশি ঋণের অঙ্ক প্রথমবারের মতো ছাড়িয়ে যায় ১০০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক। পরের প্রান্তিকেই বিদেশি ঋণের পরিমাণ কমেছে ১ বিলিয়ন ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিক শেষে বিদেশি ঋণ কমে দাঁড়িয়েছে ৯৯ দশমিক ৩০ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ৯৩০ কোটি ডলারে, যা ডিসেম্বর শেষে ছিল ১০০ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৬৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ তিন মাসে বিদেশি ঋণ কমেছে ১ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার বা ১৩৪ কোটি ডলার। অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে ঋণ ৪ বিলিয়ন ডলার বেড়েছিল।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, মার্চ শেষে সরকারের বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৯ বিলিয়ন বা ৭ হাজার ৯০০ কোটি ডলার, যা ডিসেম্বর শেষে ছিল ৭৯ দশমিক ৬৯ বা ৭ হাজার ৯৬৯ কোটি ডলার। এই হিসাবে গত তিন মাসে সরকারি খাতে বিদেশি ঋণ কমেছে ৬৮৯ মিলিয়ন বা ৬৮ দশমিক ৯০ কোটি ডলার।
সরকারের সরাসরি নেওয়া ঋণের পরিমাণ কমলেও সরকারি করপোরেশনগুলোর বেড়েছে। মার্চ শেষে সরকারের সরাসরি নেওয়া ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬৭ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার, যা ডিসেম্বর শেষে ছিল ৬৭ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার। আর সরকারি করপোরেশনগুলোর বিদেশি ঋণ ছিল ১১ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার, যা ডিসেম্বর শেষে ছিল ১১ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার।
চলতি বছরের মার্চ শেষে বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার, যা ডিসেম্বর শেষে ছিল ২০ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, গত তিন মাসে বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ প্রায় ৭৫ কোটি ডলার কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১০৪ কোটি ২৮ লাখ ডলারে। এসব ঋণের মধ্যে বাণিজ্যিক ঋণ ৭৪৬ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। বাণিজ্যিক ঋণের বেশিরভাগ বায়ার্স ক্রেডিট, যার পরিমাণ প্রায় ৫৬৯ কোটি ডলার। বায়ার্স ক্রেডিটের এ ঋণ সাধারণত এক বছরের মধ্যে শোধ করতে হয়। বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা এই ঋণ নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া বিদেশি ব্যাক টু ব্যাক এলসির ঋণ রয়েছে প্রায় ৯৫ কোটি ৫১ লাখ ডলার। আর ডেফার্ড পেমেন্টের ঋণ রয়েছে ৮২ কোটি ৪৩ লাখ ডলার।
এদিকে গত তিন মাসে বেসরকারি খাতে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১০ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। সবমিলিয়ে ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯২৫ কোটি ৬৬ লাখ ডলারে।