ইউসুফ আরেফিন, নিউয়র্ক থেকে
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৯ এএম
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৪ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

টেকসই উন্নয়নসহ তিন বিষয়ে গুরুত্ব

জাতিসংঘে ফিউচার অব দ্য সামিট
টেকসই উন্নয়নসহ তিন বিষয়ে গুরুত্ব

জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে দুদিনব্যাপী ‘সামিট অব দ্য ফিউচারে’ বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তায় ডিজিটাল ও প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার, টেকসই উন্নয়ন এবং ভবিষ্যতে জলবায়ুসহ সব ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত অর্থায়নের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন বিশ্বনেতারা। এই তিনটি বিষয় বাস্তবায়ন করতে ৫৬টি কাজের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই কাজগুলো বাস্তবায়নে তারা একটি চুক্তিও স্বাক্ষর করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শনিবার ও গতকাল রোববার দুদিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সামিটে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, মন্ত্রী, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসসহ সিনিয়র কর্মকর্তারা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং আন্তর্জাতিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

জাতিসংঘের সিনিয়র কর্মকর্তারা বলেন, ভবিষ্যতে জলবায়ুর পরিবর্তন পুরো বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূলত মানুষের অবিবেচক চিন্তা-চেতনার ফলস্বরূপ বিরূপ জলবায়ু পরিবর্তনের দিকে পৃথিবী এগোচ্ছে। দ্রুত জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলায় এখনই বিশ্ববাসীকে সচেতন না হলে আগামী প্রজন্ম হুমকির মুখে পড়বে। দিন দিন যে হারে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে, তাতে মানুষের পাশাপাশি অন্যান্য প্রাণীও ঝুঁকির মুখে পড়েছে। পৃথিবীতে বনভূমির পরিমাণ যেখানে বাড়ানোর কথা, সেখানে প্রতি বছর কোটি কোটি একর বনভূমি ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। বিশ্ববাসীকে বনভূমি ধ্বংসের চরম মূল্য দেওয়ার আগেই সচেতন হতে হবে।

এদিকে কয়েক বছর ধরে বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর বিষয়টিকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন বিশ্বনেতারা। কিন্তু এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে বরাবরই যোজন দূরে থেকেছে দায়ী উন্নত দেশগুলো। বিশ্বে বর্তমানে মোট কার্বন নিঃসরণের সাত ভাগই হয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র থেকে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ২০৫০ সালে তা দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা আছে। কারণ, ওই সময়ের মধ্যে কার্বন নির্গমনের ১০ ভাগই হবে কুলিং ইক্যুইপমেন্ট থেকে। তবে আশার কথা, ২০৫০ সালের মধ্যে কুলিং ইক্যুইপমেন্ট থেকে কার্বন নিঃসরণ কমাতে একযোগে কাজ করতে রাজি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৬০টি দেশ। এজন্য গত বছর বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে একটি চুক্তিও স্বাক্ষর করেছে দেশগুলো।

‘কাউকে পেছনে ফেলে রেখে নয়’ স্লোগানে ৫৬টি কাজ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিষয় বাস্তবায়নের বিষয়ে বিশ্বনেতারা একমত হয়েছেন। তারা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনে আমরা কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছি। ভবিষ্যৎ জেনারেশনের জন্য আমাদের খুব দ্রুতগতিতে লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে দারিদ্র্য, ক্ষুধা এবং বৈশ্বিক অসমতা দূর করতে বিশ্বকে একযোগে কাজ করতে হবে।

তারা আরও বলেন, পৃথিবীতে মানবাধিকার আজ হুমকির মুখে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে আগামী প্রজন্ম সুন্দর একটি পৃথিবী গড়তে পারবে না। সুতরাং সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মানবাধিকারের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে হবে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সহিংসতার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে জানিয়ে তারা বলেন, সহিংসতা কমিয়ে আনার জন্য বিশ্বকে কাজ করতে হবে। সহিংসতা এবং দ্বন্দ্বের পেছনের কারণগুলো আমাদের খুঁজতে হবে। বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা না করতে পারলে মানুষ তাদের বাস্তুসংস্থান হারাবে এবং পৃথিবী বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

জেন্ডার সমতা নিয়েও কথা বলেন বিশ্বনেতারা। ২০৩০ সালের মধ্যে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অর্জনে জেন্ডার সমতা খুবই জরুরি এবং এক্ষেত্রে নারীদের কখনোই পেছনে ফেলে পৃথিবী সামনের দিকে এগোবে না। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে তারা কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

ডিজিটাল পৃথিবী গড়তে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা। বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারই পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে এবং আগামী প্রজন্ম একটি সুন্দর পৃথিবী পেতে পারে। এসডিজি অর্জনের তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান নেই। তারা সুযোগ পাচ্ছে না। এ জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষা দিতে হবে। এ জন্য পর্যাপ্ত অর্থায়ন জরুরি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘আমরা এখন এতিম হয়ে গেছি, এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াব’

অজান্তেই শিশুর শরীরের নীরবে ক্ষতি করছে যে ৫ খাবার

সুনামগঞ্জে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

নৌকায় ঘুরতে গিয়ে বড় বোন নিহত, ছোট বোন নিখোঁজ

রাজনীতিতে যারা এতিম, তারাই পিআর নির্বাচন চায় : খায়রুল কবির 

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন অভিযানে শ্রমিক নিহত

পাথর মেরে ব্যবসায়ীকে হত্যা: আরও এক আসামি গ্রেপ্তার

১২ জুলাই / কোটা সংস্কারের দাবিতে ছুটির দিনেও রাজপথে সরব শিক্ষার্থীরা

টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, সেপটিক ট্যাংকে মিলল গৃহবধূর লাশ

১০

বিয়েতে ভীতি, তবে মা হতে চান শ্রুতি

১১

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন লেবাননের প্রেসিডেন্ট

১২

মিটফোর্ডে হত্যার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে: আসিফ নজরুল

১৩

ইসরায়েলি হামলায় নিহত মার্কিন তরুণ, নীরব যুক্তরাষ্ট্র

১৪

চাঁদপুর ও খুলনার ঘটনা নিয়ে জামায়াত আমিরের স্ট্যাটাস

১৫

পানি কমেছে গোমতীর, খুপরি ছেড়ে ঘরে ফিরছে মানুষ

১৬

১২ জুলাই : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৭

মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাষ্ট্রদূত মুশফিকের প্রতিক্রিয়া

১৮

বিচ্ছেদ নিয়ে যা বললেন নয়নতারা

১৯

ফেনীতে সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু

২০
X