মো. নূর আলম, গোপালপুর (টাঙ্গাইল)
প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৩১ এএম
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

চার প্রজন্মের সবার গড় বয়স ৪০

বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে অল্প বয়সে মৃত্যু
চার প্রজন্মের সবার গড় বয়স ৪০

একটি পরিবারের চার প্রজন্মের ১০ জন অল্প বয়সে (গড়ে ৪০.৭) মারা যান। তাদের মৃত্যুর কারণ বংশগত একটি বিরল রোগ। বর্তমানে ওই পরিবারের জীবিত ছয়জন একই রোগে আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। রোগটির কারণে হাত-পাসহ শরীর কাঁপা, হাঁটতে না পারা, ঘাড় সোজা করতে না পারা, মুখ থেকে লালা পড়া, কথা বলতে না পারার মতো নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের ভুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা, ওই বংশের পূর্বপুরুষ মোহাম্মদ আলী বিয়ে করেন একই ইউনিয়নের সাজানপুর গ্রামের বাসিন্দা কাজুলী বেগমকে। কাজুলী বেগমের ভাই এই রোগাক্রান্ত ছিলেন। ছয় সন্তানের (৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে) জননী কাজুলী বেগম এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ৬০ বছর বয়সে মারা যান। পরে তার ওই ছয় সন্তানের মধ্যে তিন মেয়ে মাবি ৩৫ বছরে, আবি ৪০ বছরে, সাফি ২৮ বছর বয়সে মারা যান।

এ ছাড়া মোহাম্মদ আলী-কাজুলী বেগম দম্পতির তিন ছেলের মধ্যে মসলিম উদ্দিন একই রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫০ বছর বয়সে তিন ছেলে রেখে যারা যান। মসলিম উদ্দিনের বড় ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪০) পাঁচ বছর আগে এই রোগে আক্রান্ত হন। শহিদুলের বড় ছেলে আমিনুল ইসলাম (১৪) তিন বছর আগে এই রোগে আক্রান্ত হয়। মসলিম উদ্দিনের ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৫) এই রোগে আক্রান্ত হয়ে দুই সন্তান রেখে এক বছর আগে মারা গেছেন।

মোহাম্মদ আলী-কাজুলী বেগম দম্পতির আরেক ছেলে আবুল হোসেন (৬০) আক্রান্ত হয়ে ২০ বছর আগে মারা যান। আবুল হোসেনের ছেলে আক্রান্ত হাফিজুর রহমান (৪৫) ১০ বছর আগে মারা যান। হাফিজুর রহমানের ছেলে মো. সিফাত (২০) বর্তমানে একই রোগে আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

আবুল হোসেনের মেয়ে রোজিনা বেগম (৩৫) দুই সন্তান জন্মদানের পর আক্রান্ত হলে স্বামী তালাক দিয়ে তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। আবুল হোসেনের আরেক ছেলে সিরাজুল ইসলামের (৫০) মেয়ে সুমাইয়া খাতুন (১৭) একই রোগের উপসর্গ দেখা দিয়েছে।

পরিবারের সদস্যদের দাবি, দরিদ্র কৃষক পরিবারের সদস্য হওয়ায় অর্থাভাবে তাদের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। খুব কষ্টে তাদের দিন চলে। একবার শহিদুলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে নিয়ে গিয়েছিলেন তারা। কিন্তু চিকিৎসক রোগ ধরতে পারেননি। এই রোগের কারণে তাদের ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিতে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়।

অবিলম্বে সরকার দায়িত্ব নিয়ে পরিবারের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এভাবে ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খাইরুল ইসলাম বলেন, বর্ণনা শুনে ও ভিডিও দেখে বলেন, মনে হচ্ছে তারা উইলসন ডিজিজে আক্রান্ত। এটা বংশগত রোগ। আক্রান্তদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সুচিকিৎসা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে টাঙ্গাইল বা ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ—কোথায় কোনটা পড়বেন? জেনে নিন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বকাপ দেখতে যাওয়া দর্শকদের জন্য সুখবর

সাবেক মন্ত্রীর ভাই গ্রেপ্তার 

আনসার বাহিনীর জন্য কেনা হবে ১৭ হাজার শটগান : অর্থ উপদেষ্টা

আল্লাহ ন্যায়বিচার করছেন : শহীদ জসিমের বাবা

যুবদল নেতা কিবরিয়াকে হত্যা, যা বললেন স্বজন ও স্থানীয়রা 

সকালে গোসল করা ভালো, নাকি রাতে

বার্সার ক্যাম্প ন্যু উদ্বোধন নিয়ে নতুন বিতর্ক

গণভোটের ব্যালটে যেসব প্রশ্ন থাকবে, জানাল সরকার

বিকেএসপিতে সিজিএস টাইপ-এ প্রমোশনাল সেমিনার অনুষ্ঠিত

১০

২৮ বছর পর বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেন দিনমজুর নূর ইসলাম

১১

বরিশালে বাসে আগুন

১২

বিশ্বমঞ্চে জেসিয়া, চাইলেন ভোট

১৩

জকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্যানেল ঘোষণা 

১৪

দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর 

১৫

ভাত খেলেই কি আপনার ক্লান্ত লাগে আর ঘুম পায়? জানুন এটি কীসের ইঙ্গিত

১৬

উখিয়ায় বন্যহাতির মৃত্যু

১৭

শেখ হাসিনা-কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের কপি মন্ত্রণালয়গুলোতে যাচ্ছে না আজ

১৮

আশুলিয়ায় পিকআপে অগ্নিসংযোগ

১৯

হাসিনা-কামালের রায় নিয়ে যা জানাল হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

২০
X