দিগন্তজোড়া জলরাশি, তার বুকে ফুটে আছে হাজার হাজার পদ্মফুল। যেন ছবির মতো সাজানো এক পদ্মবাগান। বর্ষাজুড়ে সামান্য রোদ আর মেঘবৃষ্টির খেলা অবতারণা করে এক নয়নাভিরাম দৃশ্যের। সেই সৌন্দর্য দেখতে এখানে ভিড় জমান হাজারো প্রকৃতিপ্রেমী।
বলছিলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোসাইস্থল পদ্মবিলের কথা। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যঘেঁষা সিনাই নদীর তীরের এ বিলে বছরে মাত্র তিন মাস পানি থাকে। প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর আয়তনের বিলের ৪০ থেক ৫০ হেক্টরজুড়ে ফোটে পদ্মফুল। বাকি অংশে রয়েছে হোগলা, কচুরিপানা ও শ্যাওলা।
উপজেলা শহর থেকে বাড়াই গোপীনাথপুর চণ্ডিদোয়ার হয়ে যেতে হয় গোসাইস্থল পদ্মবিলে। ভাসমান পদ্মের শোভা দেখতে প্রতিদিনই এখানে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণপিপাসুরা। বিলে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আছে ডিঙি নৌকা। হোগলাবন, কচুরিপানার বুকচিরে মাঝিরাই পুরো পদ্মবিল ঘুরিয়ে দেখান পর্যটকদের। বিলের প্রকৃত সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ভোর নয়, বিকেলকেই বেছে নিতে হবে।
স্থানীয় মাঝিরা জানান, বছরে তিন মাস বিলে পানি থাকে, তখন পদ্ম ফোটে। এই সময়টায় অনেক পর্যটক ঘুরতে আসেন। তখন বিলে নৌকায় করে পর্যটকদের ঘুরিয়ে উপার্জন করি। বছরের বাকি সময় অন্য কাজ করতে হয়।
গোসাইস্থল পদ্মবিলের চোখজুড়ানো সৌন্দর্য শুধু প্রকৃতিপ্রেমীদেরই বিমোহিত করে। বিলে ঘুরতে আসা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ফারুক আহমেদ বলেন, বন্ধু, ছোট ভাইবোনদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। নগরজীবন থেকে মুক্তি পেতে প্রকৃতির মধ্যে বেড়াতে আসা। বিলের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে আমি খুশি। আরেক পর্যটক জামাল আহমেদ বলেন, বর্ষাকালে গোসাইস্থল বিলে পদ্মফুল ফুটেছে, তাই বন্ধুদের সঙ্গে এ বিলে এসেছি। খুব ভালো লাগল এ সৌন্দর্য দেখে।
কসবার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, গোসাইস্থল পদ্মবিল এলাকা পর্যটকবান্ধব করতে রাস্তার উন্নয়নে আবেদন করেছি। সন্ধ্যার পর যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য গ্রাম পুলিশ দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সেইসঙ্গে বিলকে সরকারিভাবে পর্যটন এলাকা ঘোষণার দাবি জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিমুল ইহসান খান বলেন, গোসাইস্থল বিলের সৌন্দর্য দিন দিন মানুষকে আকৃষ্ট করছে। আগতদের সুযোগ-সুবিধাসহ পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণার বিষয়ে সংলগ্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করব।
মন্তব্য করুন