একাধিক হত্যাসহ ৪২ মামলার আসামি ও মোশা বাহিনীর প্রধান মোশারফ হোসেন মোশা রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়ার মদদে আবার এলাকায় ফিরেছে। চলতি বছরের প্রথমদিকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ র্যাবের হাতে আটকের পর জামিনে বের হয়ে কয়েক মাস গা ঢাকা দেয়। সম্প্রতি রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার ও পেশিশক্তির প্রয়োগ করতে আবারও তাকে এলাকায় ফিরিয়ে এনেছেন। এ কারণে নাওড়া এলাকাসহ রূপগঞ্জের মানুষের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। হত্যা, ডাকাতি আর ধর্ষণের
শিকার হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন নাওড়া এলাকার সাধারণ মানুষসহ সংখ্যালঘু পরিবারগুলো।
সূত্র জানায়, নাওড়া গ্রামের মোতালেব ভূঁইয়ার ছেলে মোশারফ হোসেন মোশা নিজের আপন বড় ভাইকে হত্যার মাধ্যমে সন্ত্রাসী জগতে পা রাখে। গড়ে তোলে মোশা বাহিনী। তারপর থেকেই জমি দখল, ডাকাতি, অস্ত্র ব্যবসা আর লুটপাট হয়ে উঠে তার প্রধান পেশা। তথ্যমতে, নাওড়া গ্রামের হিন্দু মুসলিম মিলে অর্ধশত নারী তার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
তার ভয়ে এলাকা ছাড়া হয়েছে শতাধিক পরিবার। রূপগঞ্জ ও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় তার নামে রয়েছে ৪২টি মামলা। শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশা বর্তমানেও চারটি মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি। তার পরও উপজেলা চেয়ারম্যানের মদদে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সে।
এলাকাবাসী জানায়, তার সীমাহীন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আট মাস আগে নাওড়া এলাকার গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোশা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ছয় পুলিশ সদস্যসহ গ্রামের ৩৫ জন গুলিবিদ্ধ ও বহু বাড়িঘর লুটপাট হলে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী সীমান্ত এলাকা থেকে আটক হয় এই কুখ্যাত সন্ত্রাসী। তারপর কয়েক মাস জেল খেটে জামিনে এসেই আত্মগোপনে চলে যায় মোশা। তার অনুপস্থিতিতে বাহিনীও এলাকায় নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি নির্বাচনের আমেজ শুরু হলে রূপগঞ্জ থেকে এমপি পদে লড়াইয়ের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি তার পেশিশক্তি বাড়াতে এবং মানুষের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে মোশাকে এলাকায় ফিরিয়ে আনেন। সে এখন আবারও নতুন করে বাহিনী গড়ে তুলেছে। অস্ত্রধারী গানম্যান নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ কারণে ভয় আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন নাওড়া গ্রামের মানুষ।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, মোশারফের এলাকায় ফেরার সংবাদ পেয়েছি। তার নামে ওয়ারেন্ট আছে কি না সেটা যাচাই করা হচ্ছে। তা ছাড়া পুলিশও সতর্ক রয়েছে। যদি সে আবারও কোনো অপকর্ম করার চেষ্টা করে, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।