

আমরা সবাই চাই সুস্থভাবে, নিশ্চিন্তে দীর্ঘ জীবন কাটাতে। কিন্তু প্রতিদিনের কিছু ছোট খারাপ অভ্যাসই আমাদের সেই লক্ষ্য থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। একজন বিখ্যাত বায়োহ্যাকার ব্রায়ান জনসন জানালেন—এই তিনটি অভ্যাস বাদ দিতে পারলেই শরীর ও মন দুটোই থাকবে ভালো।
দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন পেতে এখন মানুষ আগের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন হয়ে উঠেছে। আধুনিক চিকিৎসা বলছে—কিছু অভ্যাস বাদ দিতে পারলে সুস্থভাবে বাঁচার সম্ভাবনা অনেক বাড়ে। বায়োহ্যাকার ব্রায়ান জনসন এই বিষয়ে অনেক গবেষণা ও কাজ করেছেন।
বায়োহ্যাকিং কী?
বায়োহ্যাকিং আসলে এসেছে ‘বায়োলজি’ বা জীববিদ্যা থেকে, যার সঙ্গে যোগ হয়েছে ‘হ্যাকিং’ শব্দটি। সহজ করে বললে—বায়োহ্যাকিং হলো নিজের শরীর আর মস্তিষ্ককে আরও ভালোভাবে কাজ করানোর চেষ্টা। বায়োহ্যাকাররা সাধারণত খাবার, ঘুম, ব্যায়াম, মেডিটেশন, সাপ্লিমেন্ট—এসব পরিবর্তন করে শরীরকে আরও সুস্থ ও কার্যকর করার উপায় খোঁজেন। আবার কেউ কেউ আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ ডিভাইস বা জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে শরীরের ভেতরের বিভিন্ন পরিবর্তন পর্যবেক্ষণও করেন।
ব্রায়ান জনসন একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা, পরে বায়োহ্যাকার হিসেবে পরিচিত হন। তার লক্ষ্য হলো কীভাবে মানুষের আয়ু বাড়ানো যায়, সেটা খুঁজে বের করা। এজন্য তিনি কঠোর খাবারের নিয়ম, ব্যায়াম, সাপ্লিমেন্ট এবং থেরাপি অনুসরণ করেন। বয়স কমিয়ে আনার প্রযুক্তির পেছনে তিনি প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচও করেন।
এক সাম্প্রতিক পডকাস্টে ব্রায়ান বলেন, তিনি তিনটি অভ্যাস কখনোই করেন না—ধূমপান, ব্যায়ামে অবহেলা এবং ফোনে ‘ডুম স্ক্রলিং’। তার মতে, ভুল অভ্যাস আমাদের জীবনের স্বাভাবিক অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু সুস্থ থাকতে চাইলে এই অভ্যাসগুলোর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোই সবচেয়ে জরুরি।
তার মতে, এই তিনটি অভ্যাস কখনোই করা উচিত নয়:
ব্রায়ান বলেন, ধূমপান ফুসফুসের সবচেয়ে বড় শত্রু। ‘হেলথলাইন’-এর তথ্য বলছে, ধূমপানের ধোঁয়ায় থাকা টার, বিষাক্ত কণিকা ও কার্বন মনোক্সাইড ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং বায়ুথলি নষ্ট করে দেয়। ফল—কাশি, সংক্রমণ, দুর্বল শ্বাস-প্রশ্বাস, এমনকি ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি।
তার মতে, ব্যায়াম না করা হলো শরীরের জন্য দ্বিতীয় সবচেয়ে ক্ষতিকর কাজ। ‘মেডলাইনপ্লাস’ জানায়, ব্যায়াম না করলে—হাড় দুর্বল হয়, মেটাবলিজম কমে যায় ও রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে। অন্যদিকে নিয়মিত ব্যায়াম শরীরকে শক্তিশালী, সক্রিয় ও সতেজ রাখে।
ব্রায়ানের মতে, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডুম স্ক্রলিং কমিয়ে রাখাই সুস্থতার মূল চাবিকাঠি। ‘হেলথলাইন’-এর তথ্য বলছে, ডুম স্ক্রলিং—মস্তিষ্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, স্ট্রেস বাড়ায়, উদ্বেগ-হতাশা-ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করে, মাথাব্যথা ও ক্লান্তি তৈরি করে।
সূত্র: এনডিটিভি
মন্তব্য করুন