গত পাঁচ বছরে চার এমপির সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ। এবার কক্সবাজারের তিনটি আসনের বর্তমান এমপিরা দলের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করছেন। তবে কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর আলম দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে এখানকার এমপিদের সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ। বেড়েছে তাদের স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণও।
কক্সবাজার-১ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাফর আলমের বার্ষিক আয় দেখানো হয় ১৭ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৬ টাকা। সেই সময় নগদ টাকা ও ব্যাংক জমাসহ অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৫৬ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ টাকা। কৃষি ও অকৃষি জমিসহ স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ১৫০ টাকা। এ ছাড়াও তার চিংড়ি খামারের ২০ একর জমি ছিল, যার বার্ষিক খাজনা ৪০ হাজার টাকা। মোট সম্পদ ছিল ১ কোটি ৫৮ লাখ ৯০ হাজার ৯৫২ টাকার। তার স্ত্রীর স্বর্ণালংকারসহ অস্থাবর সম্পদ ছিল ৩১ লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকা এবং স্থাবর সম্পদ ৩০ লাখ ৪০ হাজার টাকার। মোট সম্পদ ৬১ লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকার।
এবার হলফনামায় দেখা যায়, তার বার্ষিক আয় ১ কোটি ৫৪ লাখ ৬ হাজার ৪৭৬ টাকার। নগদ ও ব্যাংকে জমাসহ অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার ২৪৮ টাকার। কৃষি ও অকৃষি জমিসহ তার স্থাবর সম্পদ ৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৮৭ টাকা। সব মিলিয়ে তার সম্পদ ৩ কোটি ৩০ লাখ ৮৬ হাজার ১১১ টাকার। গত পাঁচ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ৯৫ হাজার ১৫৯ টাকার। তার স্ত্রীর বার্ষিক আয় উল্লেখ করা হয়েছে ১৭ লাখ ১৩ হাজার ১৩৩ টাকা। অস্থাবর সম্পদ ৭৮ লাখ ৯৫ হাজার ৫০১ টাকার ও স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৬৮ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫৩ টাকার। মোট সম্পদ ২ কোটি ৬৪ লাখ ৪৪ হাজার ৩৮৭ টাকার। পাঁচ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ২ কোটি ২ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮৭ টাকার। এ ছাড়াও হলফনামায় যৌথ মালিকানাধীন সম্পদ দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার।
কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের সময় হলফনামায় আশেক উল্লাহ রফিকের বার্ষিক আয় দেখানো হয় ৬ লাখ ২১ হাজার ২৭৮ টাকা। সে সময় তার নগদসহ অস্থাবর সম্পদ ছিল ৩ কোটি ৪৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫০৪ টাকার। গাড়ি, বাড়ি, কৃষিজমি ও ৩ দশমিক ১৯ একর অকৃষি জমিসহ তার স্থাবর সম্পদ ছিল ২৮ লাখ ৭৩ হাজার ৮৬০ টাকার। সব মিলিয়ে তার সম্পদ ছিল ৩ কোটি ৮০ লাখ ৭৯ হাজার ৬৪২ টাকার। তার স্ত্রীর ছিল ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার। এবারের হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখানো হয় ৪৭ লাখ ৭২ হাজার ৩৩২ টাকা। নগদ টাকা ও মূলধনসহ অস্থাবর সম্পদ ৫ কোটি ১১ লাখ ৯৮ হাজার ৪৩৫ টাকার। গাড়ি, বাড়ি এবং কৃষি ও অকৃষি জমিসহ তার স্থাবর সম্পদ ১ কোটি ১১ লাখ ৪৯ হাজার ২৬২ টাকার। সব মিলিয়ে তার সম্পদ ছিল ৬ কোটি ৭১ লাখ ২০ হাজার ১৯ টাকার। গত পাঁচ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ২ কোটি ৯০ লাখ ৪০ হাজার ৩৭৭ টাকার। এবারও তার স্ত্রীর ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার দেখানো হয়েছে।
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাইমুম সরওয়ার কমলের বার্ষিক আয় দেখানো হয় ৪১ লাখ ৯২ হাজার ৪৬৩ টাকা। নগদসহ অস্থাবর সম্পদ ছিল ৭৪ লাখ ৫ হাজার টাকার। গাড়ি, বাড়িসহ স্থাবর সম্পদ ছিল ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ৫৬০ টাকার। তার নিট সম্পদ ছিল ২ কোটি ১০ লাখ ৭৪ হাজার ২৩ টাকার। স্ত্রীর আয় ও অস্থাবর সম্পদ ছিল ১ কোটি ৮৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৩ টাকার। এবার তার বার্ষিক আয় দেখানো হয় ৫১ লাখ ১৫ হাজার ২৮৮ টাকা। অস্থাবর সম্পদ ২ কোটি ১৪ লাখ ২১ হাজার ২৮০ টাকার। গাড়ি-বাড়িসহ স্থাবর সম্পদ ১ কোটি ৬৮ লাখ ২ হাজার ৯৬০ টাকার। নিট সম্পদ ৪ কোটি ৩৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫২৮ টাকার। পাঁচ বছরে তার আয় বেড়েছে ২ কোটি ২২ লাখ ৬৫ হাজার ৫০৫ টাকা। এবারে স্ত্রীর আয় দেখানো হয়েছে ২১ লাখ ৬৭ হাজার ৪৬৫ টাকা। এ ছাড়া অস্থাবর সম্পদ ৩ কোটি ৭৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯১৯ এবং স্থাবর সম্পদ ৩০ লাখ ৭৫০ টাকার। তার স্ত্রীর মোট সম্পদ ৪ কোটি ২৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩৪ টাকার। গত পাঁচ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ২ কোটি ৪২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৫১ টাকার।
কক্সবাজার-৪ আসনের প্রার্থী শাহীন আক্তার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বার্ষিক আয় দেখানো হয় ৪ লাখ ৭১ হাজার ৮০৫ টাকা। নগদসহ অস্থাবর সম্পদ ছিল ৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। কৃষিজমি, দালান ও বাড়িসহ স্থাবর সম্পদ ছিল ১২ লাখ ৫৬ হাজার টাকার। মোট সম্পদ ছিল ২৩ লাখ ১২ হাজার ৮০৫ টাকা। তার স্বামী সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয় ২ কোটি ৫৯ লাখ ৩৪ হাজার ৬১২ টাকার। আর স্থাবর সম্পদ ৪ কোটি ৫৬ লাখ ৯১ হাজার ৬১৪ টাকার। মোট সম্পদ ছিল ৭ কোটি ১৬ লাখ ২৬ হাজার ২২৬ টাকার। এবার শাহীনের বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৬৯৭ টাকা। নগদ ও স্বর্ণালংকারসহ অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ৩৬ লাখ ৬১ হাজার ৯৩২ টাকার। কৃষি ও অকৃষি জমিসহ স্থাবর সম্পদ ২৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার। মোট সম্পদ ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৮ হাজার ৬২৯ টাকার। গত পাঁচ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ১ কোটি ৪৬ লাখ ১৫ হাজার ৮২৪ টাকার। এবারে তার স্বামী বদির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয় ৯ কোটি ৭৮ লাখ ৯৭ হাজার ১৭৩ টাকার, যা গতবারের চেয়ে ২ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ৯৪৭ টাকা বেশি।