ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনির মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই প্রায় ১২ হাজার। এ ছাড়া টানা দুই মাস ধরে চলা এই আগ্রাসনে আহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৪৪ হাজারে। এদিকে গাজা উপত্যকাজুড়েই এখন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। সাধারণ মানুষ আশ্রয় নেবে—এমন কোনো নিরাপদ জায়গা নেই এই মৃত্যু উপত্যকায়। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও পানির মারাত্মক সংকট। এক গ্লাস পানির জন্য দেখা দিয়েছে হাহাকার। জাতিসংঘ বলেছে, প্রতি মিনিটে গাজার অবস্থা শোচনীয় হচ্ছে। এরকম অবস্থায় গাজা উপত্যকা ‘মানবেতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময়ের’ দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যুদ্ধের পর গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ করার কাজ ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে থাকা দরকার। এ দায়িত্ব আন্তর্জাতিক বাহিনীর হাতে থাকা উচিত নয়। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বুধবার জানায়, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ১৬ হাজার ২৪৮ জনে পৌঁছেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনির মধ্যে ৭ হাজার ১১২ জন শিশু এবং ৪ হাজার ৮৮৫ জন নারী। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৪৩ হাজার ৬১৬ জন। গাজার এই মিডিয়া অফিসের মতে, ভূখণ্ডটিতে এখনো প্রায় ৭ হাজার ৬০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তারা হয় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আছেন বা তাদের ভাগ্যে ঠিক কী ঘটেছে, তা এখনো অজানা।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আজ ৭ ডিসেম্বর এ হামলার দুই মাস হচ্ছে। দুই মাস ধরে চলা ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। মাঝে হামাসের সঙ্গে এক সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর গত শুক্রবার থেকে গাজা উপত্যকায় ফের বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরায়েল। বিরতির পর শুরু হওয়া এই অভিযানে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরকে লক্ষ্য করেই মূলত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার সেনারা।