কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৫, ০৮:৩৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে দক্ষিণ এশিয়ায় মিত্র বাড়াচ্ছে ভারত

প্রতীকী ছবি ।
প্রতীকী ছবি ।

ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। যুদ্ধবিরতির পরও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা আরও কৌশলী রূপ নিচ্ছে।

প্রেক্ষাপট যখন এই তখন দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনৈতিক মিত্রতা জোরদারের মাধ্যমে পাকিস্তানকে চাপে রাখার চেষ্টা করছে ভারত। এরই অংশ হিসেবে, বহুদিন পর তালেবান-শাসিত আফগানিস্তানের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের সরাসরি যোগাযোগ করেছে নয়াদিল্লি।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন।

শুক্রবার (১৫ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই আলোচনার বিষয়টি জানা যায়। উল্লেখ্য, এটি তালেবান সরকারের সঙ্গে ভারতের প্রথম মন্ত্রী পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক সংলাপ।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ফোনালাপ নিছক সৌজন্য নয়- বরং পাকিস্তানের উপর কূটনৈতিক চাপ তৈরির একটি কৌশল। বিশেষ করে এমন সময় এই সংলাপ হলো, যখন তালেবান কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এই নিন্দা পাকিস্তানের জন্য একধরনের বার্তা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

ফোনালাপের পর জয়শঙ্কর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে জানান, আজ সন্ধ্যায় আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকির সঙ্গে ভালো আলোচনা হয়েছে। পেহেলগাম হামলার নিন্দার জন্য আমি তাকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি কিছু ভিত্তিহীন প্রতিবেদন ভারত-আফগান সম্পর্কের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করতে চেয়েছে, যেগুলো মুত্তাকি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

অন্যদিকে তালেবানের যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক হাফিজ জিয়া আহমেদ বলেন, এই ফোনালাপে আফগান নাগরিকদের জন্য চিকিৎসা ভিসা সহজীকরণ, আফগান বন্দিদের মুক্তি, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও চাবাহার বন্দর উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি শুধু কৌশলগত বার্তা নয়, বাস্তবিকভাবেও দুই দেশের সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় সূচিত করছে।

এর আগে ২৭ এপ্রিল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও বিশেষ প্রতিনিধি আনন্দ প্রকাশ কাবুল সফরে গিয়ে তালেবান সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তখনো ভারতের পক্ষ থেকে যোগাযোগ জোরদারের বার্তা দেওয়া হয়।

যদিও এখনো ভারত তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি, কিন্তু ধারাবাহিক এই সংলাপ ও যোগাযোগ স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে, নয়াদিল্লি দক্ষিণ এশিয়ায় তার প্রভাব পুনর্গঠনের পথে রয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে দেশটিকে কৌশলগতভাবে ঘিরে রাখার চেষ্টার এটি অন্যতম ধাপ।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারত-আফগানিস্তান ঘনিষ্ঠতা কেবল দু’দেশের স্বার্থে নয়, এটি দক্ষিণ এশিয়ায় ভারসাম্য রক্ষার ভূ-রাজনৈতিক খেলায়ও গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে উঠছে- যেখানে পাকিস্তান ক্রমেই চাপে পড়ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাঞ্ছারামপুরে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, টেটাবিদ্ধসহ আহত ৮

চকরিয়ায় সিএনজি-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

বিসিএস ট্যাক্সেস অ্যাসোসিয়েশন অবৈধ ও বিলুপ্ত ঘোষণা

স্বাস্থ্য পরামর্শ / ঘন ঘন খিঁচুনি মৃগী রোগের লক্ষণ

রাজধানীতে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, একই পরিবারের দগ্ধ ৫

উত্তেজনাপূর্ণ শেষ ২.৫০ মিনিট কী আলোচনা করেছেন পাইলট-এটিসি

‘সরকারের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা কমলে দেশ সংকটে পড়বে’ 

প্রায় ২৬ ঘণ্টা ডিবি কার্যালয়ে ছিলাম, বললেন জবি শিক্ষার্থী

‘জীবনের চাকা আপনার হাতে’- আফজাল হোসেনের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন 

ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে ‘সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ’ শনিবার

১০

ঢাকায় চলবে বৈদ্যুতিক বাস : উপদেষ্টা আসিফ

১১

ধানমন্ডিতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহত

১২

‘বিচার বিভাগের সংস্কার ছাড়া রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়ন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে’

১৩

বৃষ্টিতে ভিজে বিজয় উল্লাস জবি শিক্ষার্থীদের

১৪

রাণীশংকৈল ধর্মগড় সীমান্তে অবৈধ পারাপারে যুবক আটক 

১৫

হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে বিচার নিশ্চিতের দাবি যুবদল নেতা শহিদুলের

১৬

মিয়ানমারে নিযুক্ত প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা আফতাবকে প্রত্যাহারের নির্দেশ

১৭

মোহাম্মদপুরে দুর্বৃত্তের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে যুবক নিহত 

১৮

কিডনি রোগী ও প্রবীণদের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

১৯

শিরোপার আরও কাছে মোহামেডান

২০
X