বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) এক প্রকৌশলী পিএইচডি না করেও ডক্টরেট ডিগ্রি ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক (ইডি) হতে ভুয়া এ ডিগ্রিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন বলেও জানা গেছে। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে বিএমডিএকে ঘটনা যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। চার বছর আগেও মন্ত্রণালয় বিষয়টি বিএমডিএকে যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছিল; কিন্তু বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।
অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম মো. আবুল কাসেম। তিনি বিএমডিএর সদর দপ্তরে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করছেন। নামের আগে তিনি ‘ড.’ শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন। গত রোববারও বিএমডিএর ওয়েবসাইটে কর্মকর্তাদের তালিকায় তার নাম ‘ড. মো. আবুল কাসেম’ লেখা দেখা গেছে। দাপ্তরিক চিঠিপত্রেও একই নাম রয়েছে।
বিএমডিএ সূত্রে জানা যায়, আবুল কাসেমের বিরুদ্ধে ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি ব্যবহারের অভিযোগ পুরোনো। এ নিয়ে ২০২০ সালে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন কৃষি মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২৫ জুন কৃষি মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন উপসচিব মো. আসাদুজ্জামান এক চিঠিতে বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালককে বিষয়টি যাচাইয়ের নির্দেশ দেন। আবুল কাসেম পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে থাকলে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়েছেন কি না এবং তার সনদ ও গবেষণাপত্র (থিসিস) দাখিল করতে বলা হয়।
চিঠি আসার পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেন তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক। পরের বছরই আবুল কাসেমকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী থেকে পরিকল্পনা শাখার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে চলতি দায়িত্বে পদায়ন করা হয়।
বর্তমান ইডি আব্দুর রশীদ কালবেলাকে বলেন, আমি ১০-১৫ দিন আগে মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছি। এরই মধ্যে বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছি। তাকে অফিসিয়ালি চিঠি দিয়ে পিএইডডি ডিগ্রির পেপারস সাবমিট করতে বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আবুল কাসেম প্রকৌশলী হিসেবে বিএমডিএতে যোগদান করেন ১৯৯৪ সালে। ২০১০ সালের দিকে নামের আগে ড. লেখা শুরু করেন। তিনি পিএইচডি করেছেন কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ পিএইচডির জন্য তিনি কখনো ছুটি নেননি। পিএইচডি ডিগ্রি ব্যবহার করে বাগিয়ে নেন পদোন্নতি। বিএমডিএর অনুমোদিত জনবল কাঠামোতে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে কোনো পদ নেই। অথচ তিনি চতুর্থ গ্রেডে অবৈধ এ পদে আসীন হয়েছেন ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর।
আবুল কাসেম বলেন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করেছি। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স করেছি রুয়েট থেকে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছি। পরে ডিসটেন্ট লার্নিং নিয়ে পিএইচডি করেছি। ২০০৫ সালে ভর্তি হয়ে ২০০৯ সালে শেষ করেছি। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু বন্ধের দিন ক্লাস হয়, তাই ছুটি নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।
তিনি বলেন, টেকনিক্যাল বিষয়গুলোতে আমার মতো এখানে এক্সপার্ট নেই। সামনে ইডি হতে পারি। তাই প্রতিহিংসায় অপ্রচার চালানো হচ্ছে।