সুশোভন অর্ক
প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৫ এএম
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

পদ্মায় ‘আনন্দ-স্নানের’হৃদয়বিদারী গল্প

পরপর তিনজনের মৃত্যু
পদ্মায় ‘আনন্দ-স্নানের’হৃদয়বিদারী গল্প

ঈদের ছুটিতে স্বজনদের নিয়ে ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জ গিয়েছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. রিয়াদ আহমেদ। ঈদের পরদিন শুক্রবার বিকেলে ছেলে রামিন আরিফসহ অন্য স্বজনদের সঙ্গে পদ্মায় নেমেছিলেন গোসলে। তবে তীরে আর উঠতে পারেননি। পদ্মা কেড়ে নিয়েছে তাদের জীবন। বাবা আর ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন রিয়াদের ভায়রা মোহাম্মদ জুয়েলও। তাদের এ মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে গেছে গোটা পরিবার। ঈদের আনন্দ এভাবে বিষাদে পরিণত হবে—এ যেন কল্পনাতেও আসেনি কারও।

যান্ত্রিক ঢাকা শহর ছেড়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ির বেসনাল এলাকায় স্বজন আলম মোল্লার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন রিয়াদ। সঙ্গে ছিলেন আরও অনেকেই। রিয়াদ আহমেদ তার ছেলে আরিফ ও ভায়রা মোহাম্মদ জুয়েলকে নিয়ে ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ট্রলারে করে ৩০ থেকে ৩৫ জন মিলে দিঘিরপাড় ইউনিয়নের ধানকোড়া এলাকায় পদ্মার শাখা নদীতে ঘুরতে বের হন। এ সময় তারা বেশ কয়েকজন ট্রলার থেকে গোসল করতে নামেন। নদীতে নামলে পদ্মার তীব্র স্রোতে রিয়াদ, জুয়েল ও আরিফ নদীতে ভেসে

যান। ছেলে যখন পদ্মার স্রোতে ভেসে যাচ্ছিল, তখন তাকে বাঁচাতে গিয়ে প্রথমে তলিয়ে যান রিয়াদ। তাদের রক্ষা করতে এগিয়ে যান জুয়েল। তিনিও ডুবে যান। এরপর শুক্রবার রাতে রিয়াদ ও জুয়েলের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ থাকে আরিফ। শনিবার ফায়ার সার্ভিস আরিফের মরদেহ উদ্ধার করে।

সোমবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সলিমুল্লাহ রোডের বাসায় গিয়ে দেখা হয় রিয়াদের বৃদ্ধ বাবা হারুনুর রশিদ মোল্লা সঙ্গে। একমাত্র ছেলে ও নাতিকে হারিয়ে যেন শোকে পাথর হয়ে গেছেন তিনি। বিছানায় শুয়ে তাকিয়ে আছেন অপলক দৃষ্টিতে। কারও সঙ্গে কথাও বলছেন না। শুধু মাঝেমধ্যে ভেসে আসে ডুকরে ওঠা কান্নার আওয়াজ। পাশে দাঁড়িয়ে চোখ মুছছেন স্বজনরাও। কারও কাছেই এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না, মানুষগুলো নেই। ব্যক্তি ও চাকরি জীবনে সজ্জন হিসেবে পরিচিত রিয়াদ এবং তার ছেলে আরিফের এমন করুণ মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই। আরিফ রাজধানী ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণিতে পড়ত।

এমন মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সলিমুল্লাহ রোডের বাসিন্দা মো. জহির জানান, এলাকায় সবার কাছেই পরিচিত ছিলেন রিয়াদ। ভদ্র ও পরহেজগার ব্যক্তি হিসেবেই তাকে চিনতেন সবাই। রিয়াদের বাবা হারুনুর রশিদ মোল্লা স্থানীয় মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি। জহির বলেন, এলাকার লোকজনদের বিপদে-আপদে সবসময় পাশে থাকতেন রিয়াদ। কোনোদিন কারও সঙ্গে কোনো ঝামেলা হয়নি। ভালো মানুষটা এভাবে চলে যাবেন, সেটা আসলে মানার মতো না।

রিয়াদের স্বজন রায়হান শরীফ বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে শনিবার ঢাকায় দাফন করা হয়। এ শোক আমরা আর কখনো কাটিয়ে উঠতে পারব না। তারা যেন পরপারে ভালো থাকে—এটাই আমাদের চাওয়া।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আফগানিস্তানে কেন বারবার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানছে

সাদাপাথরে যে সৌন্দর্য ফিরবে না আর

আগস্টের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স আসেনি ৯ ব্যাংকে

বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষ পাঁচে ঢাকা

মাথায় টাক পড়ছে? ৫ অসুখের লক্ষণ হতে পারে চুল পড়া

৪৭তম ট্রফি জেতা হলো না মেসির, ফাইনালে মায়ামির লজ্জার হার

১৩০ বছরের ‘জিয়া বাড়ি’ আজও অবহেলিত

ফের আলোচনায় ভারতের সুপার স্পাই অজিত দোভাল

বিবিসি নাকি ভাই ভাই চ্যানেল, নারী সংবাদিক ভাইরাল

সুস্থ থাকতে রাতে ভাত খাবেন, না রুটি? যা বলছেন পুষ্টিবিদ

১০

তাহসানের সংগীতের রজতজয়ন্তী পালন হবে অস্ট্রেলিয়ায় 

১১

পাকিস্তানের বিপক্ষে শি জিনপিংয়ের সহায়তা চাইলেন মোদি

১২

১ সেপ্টেম্বর: কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৩

বিদ্যুৎ কোম্পানিতে চাকরির সুযোগ, আবেদন করুন আজই

১৪

ডিএমপির দুই অতিরিক্ত কমিশনারের দপ্তর বদল

১৫

মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে যে জেলায়

১৬

উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট ফেলোশিপ পেলেন মহিলা দল নেত্রী সুমাইয়া

১৭

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে বড় নিয়োগ

১৮

আজ বিশ্ব চিঠি দিবস : হারিয়ে যাওয়া আবেগের দস্তাবেজ

১৯

বিতর্কিত পেনাল্টির পরও রায়োর সঙ্গে বার্সার ড্র

২০
X