তারুণ্য অজেয়। তারুণ্য অপরিমেয়। তারুণ্যে শক্তি। তারুণ্য অপ্রতিরোধ্য। তারুণ্য তেজোদীপ্ত। তারুণ্যের এই বৈশিষ্ট্য সামনে রেখে, তরুণদের শক্তিকে আরও তেজোদীপ্ত ও বলিয়ান করতে এবং তারুণ্যের চেতনাকে আরও শানিত করতে আয়োজন করা হয়েছে চট্টগ্রাম-কুমিল্লার বিভাগীয় ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’। দীর্ঘদিন পর চট্টগ্রামে এই তারুণ্য নির্ভর সমাবেশ আয়োজন করায় তরুণ-যুবকদের মধ্যে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা দেখা যায়। আজ শনিবার দুপুর ২টায় চট্টগ্রাম নগরের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে অনুষ্ঠিত হবে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশটি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) তিন সংগঠন— ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে এ সমাবেশ। তারুণ্যের সমাবেশে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। থাকবেন দলের জাতীয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৯ জানুয়ারি নগর বিএনপির আয়োজনে এই পলোগ্রাউন্ড মাঠেই দলের সর্বশেষ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। এবার তারুণ্যের এই সমাবেশেও যুক্ত থাকবেন দলের শীর্ষ নেতারা। সরকার পতনের পর এই প্রথম বড় সমাবেশ আয়োজন করল সংগঠনটি। সমাবেশে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার ৯৯টি উপজেলা ও মহানগরীর নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন। সমাবেশ ঘিরে পুরো চট্টগ্রামজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। প্রচারণা চলেছে অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমেও। এর আগে গত ৯ মে চট্টগ্রামে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। জানা যায়, দেশের মোট ভোটারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই তরুণ। আগামী নির্বাচনে ‘ফ্যাক্টর’ হিসেবে কাজ করবে এই তরুণ ভোটার। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় তরুণ ভোটারদের সচেতন করতে তারুণ্য সমাবেশ করছে। আজকের সমাবেশে চট্টগ্রাম-কুমিল্লার চার-পাঁচ লক্ষাধিক তারুণ্যের উপস্থিতির আশা আয়োজকদের। এ লক্ষ্য নিয়ে শহর থেকে গ্রাম- তৃণমূল পর্যায়ে প্রচার চালানো হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার আদায় ও জনগণের মালিকানা ফিরে পেতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। তাই দেশের মানুষ আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিএনপি রাজপথ ছাড়বে না। ১০ মে পলোগ্রাউন্ড মাঠে অনুষ্ঠিতব্য তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের সমাবেশ সফল করতে নানা প্রস্তুতি সভাও হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ উপস্থিতি হবে বলে বিশ্বাস করি। এ কর্মসূচির লক্ষ্য হলো তরুণদের জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করা।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) শওকত আজম খাজা বলেন, বিএনপি নতুনত্বে বিশ্বাসী। তারুণ্যের শক্তিকে সব সময় সম্মান করে। তাই তরুণদের চিন্তা-চেতনা, মানসিকতা, তাদের মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতে কাজ করবে বিএনপি। একই সঙ্গে বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফায় তরুণদের জন্য কী কী করবে, এসব বিষয় নিয়ে তারুণ্যনির্ভর সমাবেশ থেকে নতুন বার্তা আসবে। কার্যত তরুণদের রাজনৈতিকভাবে সচেতন করা, দেশপ্রেম জাগ্রত করা এবং আগামীর রাষ্ট্র নির্মাণে তাদের বলিষ্ঠ অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত করাই এই সমাবেশের মূল লক্ষ্য। তাই আশা করছি, এই মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে। অন্তত চার-পাঁচ লক্ষাধিক তরুণ সমাবেশে যোগ দেবেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের বাইরে অনেক তরুণ আছেন। যারা বিএনপি কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়—সেমিনারে এমন তরুণদের আনার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, অন্য যে কোনো প্ল্যাটফর্মে ভালো করছেন—এমন তরুণদেরও কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। শুধু শিক্ষিত তরুণ নয়, যেসব তরুণ বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি, তাদেরও এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন