দেশের প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে তৈরি এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করা হবে। ওই দিন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সুধী-সমাবেশের আয়োজন করবে।
শনিবার (১২ আগস্ট) রাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দলটির একাধিক নেতা সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, আগামী ২ সেপ্টেম্বর দেশের প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে তৈরি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে একাংশ (বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত) উদ্বোধন করা হবে। সেদিন রাজধানীর পুরাতন বাণিজ্যমেলার মাঠে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে রাজধানীর কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম ধাপ খুলে দেওয়া হলে যানজট অনেকাংশে কমে আসবে বলে মনে করছে নগরবাসী। এরই মধ্যেই নির্মাণকাজ ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে।
ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারে দিতে হবে টোল
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প থেকে বিনিয়োগকারীরা তাদের অর্থ তুলবে যানবাহন থেকে টোল আদায়ের মাধ্যমে। এ জন্য তারা আলাদা টোল প্লাজা স্থাপন করা হচ্ছে। এই এক্সপ্রেসওয়ের জন্য সর্বনিম্ন টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। প্রাইভেটকার, জিপ, মাইক্রোবাস, ট্যাক্সির মতো হালকা শ্রেণির যানবাহনের জন্য টোলের এ হার ধার্য করা হয়েছে। অন্যদিকে সর্বোচ্চ ৬২৫ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে বড় ট্রাকের (ছয় চাকার বেশি) জন্য।
এক্সপ্রেসওয়েটিতে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মতো দুই ও তিন চাকার কোনো যানবাহন এই উড়ালসড়কে চলতে পারবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলের জন্য যানবাহনের চারটি শ্রেণি নির্ধারণ করা হয়েছে, যার প্রথমটি হালকা যানবাহন। এ শ্রেণির যানবাহনের জন্য সর্বনিম্ন টোল ১০০ টাকা। এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার পর শেষ পর্যন্ত না গেলে হালকা শ্রেণির যানবাহন থেকে এ পরিমাণ টোল আদায় করা হবে।
অন্যদিকে, এক্সপ্রেসওয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যবহার করা হালকা যান থেকে টোল আদায় করা হবে ১২৫ টাকা। হালকা শ্রেণির যানবাহনকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল আদায়ের ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়েছে। এ ভিত্তি টোলের দ্বিগুণ আদায় করা হবে বাস থেকে। এ হিসাবে এক্সপ্রেসওয়ের কিছু অংশ ব্যবহারের জন্য বাসের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ২০০ টাকা। আর পুরো এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে চাইলে গুনতে হবে ২৫০ টাকা।
একইভাবে ভিত্তি টোলের চারগুণ নির্ধারণ করা হয়েছে মাঝারি (ছয় চাকা পর্যন্ত) আকারের ট্রাকের জন্য। এ হিসাবে এক্সপ্রেসওয়ের কিছু অংশ ব্যবহার করলে ৪০০ টাকা এবং পুরো অংশ ব্যবহার করলে মাঝারি ট্রাক থেকে টোল আদায় করা হবে ৫০০ টাকা।
আর বড় ট্রাকের জন্য (ছয় চাকার বেশি) টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ভিত্তি টোলের পাঁচগুণ। সেই হিসাবে কিছু অংশ ব্যবহারের জন্য ৫০০ টাকা; পুরো এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের জন্য ৬২৫ টাকা টোল আদায় করা হবে বড় ট্রাক থেকে। বিনিয়োগকারীরা এ অবকাঠামো থেকে সাড়ে ২১ বছর টোল আদায় করবে।
জানা গেছে, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী এলাকা পর্যন্ত যাবে। প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরের যানজট অনেকাংশে কমে যাবে এবং ভ্রমণের সময় ও খরচ কমবে। মূল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ১৯.৭৩ কিলোমিটার। প্রকল্পে ওঠানামার জন্য মোট ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র্যাম্প রয়েছে। র্যাম্পসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬.৭৩ কিলোমিটার।
মন্তব্য করুন