দেশের আমলাতন্ত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন দরকার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। জনপ্রতিনিধিরা কিছু বললে আমলাতন্ত্র আইন দেখিয়ে দেয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। তবে এসব সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করার থেকে পাশ কাটিয়ে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতি জোর দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
আজ বুধবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ক কর্তৃপক্ষের (বিডা) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন এই দুই জনপ্রতিনিধি।
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারদের সমন্বয়ে গঠিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে সরকারি-বেসরকারি এবং শিক্ষা ও গবেষণা খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, অ্যাস্পায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এবং বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের সার্বিক সহযোগিতায় ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েটস (আইডিয়া) ফাউন্ডেশন এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সালমান এফ রহমান বলেন, দেশে একটা ডিজিটাল স্বাক্ষর আইন আছে। এ বিষয়ে অবকাঠামো আছে, বিনিয়োগ আছে কিন্তু এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বিন্দুমাত্র অগ্রগতি নেই। দেশে আমলাতন্ত্রে পরিবর্তন দরকার। বড় ধরনের পরিবর্তন দরকার। আমরা কিছু বললে আমলাতন্ত্র আইন দেখিয়ে দেয়। মনে হয় যেন আমলারা তাদের ‘প্রটেকশনের’ জন্য আইন করে রাখে। এই সমস্যার সমাধানে কাজ করতে পারে এই (স্মার্ট) নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্ক সরকারি বর্তমান আমলা, সাবেক আমলা এবং বেসরকারি খাতের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করতে পারে।
আর পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের সংস্কৃতিতে কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলোকে আমরা মোকাবিলা করতে পারি না। হিমালয়কে কী তার জায়গা থেকে সরানো যাবে? যাবে না। কিন্তু তিব্বতে যেতে হলে হিমালয়কে পাশ কাটিয়ে যেতে হয়; হিমালয়ের সাথে মোকাবিলা করে নয়। মোকাবিলা করতে গেলে সময় নষ্ট হবে। আমলাতন্ত্র তেমনি একটি জিনিস। আমলারা বইয়ে লেখা আইন মেনে চলে। এটা তো ভালো দিক। এগুলোকে পাশ কাটিয়েই আমাদের কাজ করে যেতে হবে। সেখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে স্মার্ট নেটওয়ার্ক। আমার পক্ষ স্মার্ট নেটওয়ার্কের সহযোগিতায় যা যা করা প্রয়োজন আমরা করব।
এর আগে সভাপতির বক্তব্যে আইডিয়া ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও বিডা’র সাবেক নির্বাহী পরিচালক কাজী এম আমিনুল ইসলাম বলেন, ভবিষ্যৎ অতীতের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হবে। এজন্যই আজকের এই আয়োজন। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জনে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে। এতে প্রযুক্তি লাগবে, জ্ঞান লাগবে। তবে এসব কিছু মানুষের জন্য। আমরা যদি মানুষকে সঠিক জ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ দিতে পারি তাহলে স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জন সম্ভব। সেই সঙ্গে মানুষকে বোঝাতে হবে, এই যাত্রায় অংশ নিলে তাদের কী লাভ।
সেমিনারে স্মার্ট নেটওয়ার্কের বিস্তারিত পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন এটুআই’র পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী এবং সরকারের উপসচিব ও গবেষক হোসাইন এ সামাদ। এ সময় অন্যদের মাঝে আরও বক্তব্য রাখেন আইডিয়া ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া এবং আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন।
মন্তব্য করুন