আবেদনকৃত প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওসহ ছয়টি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগে অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। ‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ’-এ র ব্যানারে রোববার (১১ জুন) সকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে সংগঠনটির সভাপতি মো. ইলিয়াস রাজ বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর এ বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ ছাড়া ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করে। কিন্তু অদ্যাবধি এ বিদ্যালয়গুলোর কোনো সুরাহা করতে পারেনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, সারা দেশে এরকম ১ হাজার ৭৭২টি অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন প্রায় ৫১ হাজার ৭১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী। যার একাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। সারা দেশে অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশু রয়েছে প্রায় ৪৭ লাখ। এই বিশাল সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুনর্বাসনকরণের জন্য এ বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন।
সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রিমা খাতুন বলেন, আমাদের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬ শতাংশ প্রতিবন্ধী। এই সুবিশাল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রেখে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়া সম্ভব নয়। এই প্রতিবন্ধীদের অধিকার সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুরক্ষা আইন ২০১৩ প্রণয়ন করেছে সরকার। ওই আইনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষার কথা সুষ্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজ অবধি আমাদের বিদ্যালয়গুলোর কোনো সুরাহা হয়নি। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো—অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিও ঘোষণা এবং প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা-২০১৯ এর আলোকে স্বীকৃতি ও বেতনভাতা প্রদানকারী কমিটিতে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদে এর তিনজন প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; শতভাগ বিদ্যালয়ে আধুনিক মানসম্পন্ন প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণ সুনিশ্চিত করতে হবে; প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বিশেষ শিক্ষা কারিকুলাম অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নকরণ, একটি আধুনিক থেরাপি সেন্টার নিশ্চিত ও শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিলসহ শিক্ষা উপকরণ দিতে হবে; প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা উপবৃত্তি ও প্রতিবন্ধী ভাতা শতভাগ সুনিশ্চিত করা, প্রতিবন্ধী ভাতা ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা নিশ্চিত করতে হবে; প্রতিবন্ধী কোটার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে এবং শিক্ষাজীবন শেষে প্রত্যেকের আত্মনির্ভরশীল জীবনযাপনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
মন্তব্য করুন