ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ১০ ঘণ্টার মধ্যে শতভাগ কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে বলে দাবি করে। তবে দশ ঘণ্টা তো দূরের কথা আটচল্লিশ ঘণ্টা পার হলেও এখনো অপসারণ হয়নি ডিএসসিসির বিভিন্ন এলাকার কোরবানির পশুর বর্জ্য। নগরীর বিভিন্ন স্থানে বর্জ্য এখনো বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। নগরবাসী বলছে, কোরবানির পশুর বর্জ্য এখনো অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে এলাকাজুড়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।
বুধবার (১৯ জুন) ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন নারিন্দা, রায়সাহেব বাজার, নবাবপুর রোড, বেগমগঞ্জ রোড, মুরগিটোলা, ধোলাইখাল, কলতাবাজার, পাতলা খান লেন, সূত্রাপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বিভিন্ন গলির মুখে ও রাস্তার ধারে এখনো পড়ে আছে কোরবানির পশুর বর্জ্য।
বর্জ্য অপসারণ কর্মীরা বলছেন, রাজধানীর পুরান ঢাকায় তিন দিনব্যাপী পশু কোরবানি হয়ে থাকে। ফলে বর্জ্য অপসারণ সময়ের সাপেক্ষ ব্যাপার।
এদিন খোকার মাঠ সংলগ্ন বেগমগঞ্জ রোড ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার দুই ধারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কোরবানির পশুর বর্জ্য এবং সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে।
এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ রোডের বাসিন্দা রাসেল শেখ বলেন, কোরবানির আগে প্রতিবছরই সিটি করপোরেশন কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ নিয়ে বিভিন্ন কথা বলে। কিন্তু তার অধিকাংশ কথা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়। ফলে কোরবানির পশুর বর্জ্য রাস্তায় জমে দুর্গন্ধ ও বিপত্তি সৃষ্টি করে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ডিএসসিসি মঙ্গলবার (১৮ জুন) জানায় ‘রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার কোরবানির পশুর বর্জ্য শতভাগ অপসরিত হয়েছে’। কিন্তু আমাদের এই এলাকার কোরবানির পশুর বর্জ্য এখনো তিন ভাগের দুই ভাগই অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। এখন তা দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে।
ধোলাইখাল এলাকার বিভিন্ন জায়গায় এখনো দৃশ্যমান কোরবানির পশুর বর্জ্য। ধোলাইখাল এলাকার রাস্তা দিয়ে নাকে হাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুমন মিয়া।
তিনি কালবেলাকে বলেন, রাস্তার দুধারে এখনো কোরবানির পশুর বর্জ্য পড়ে আছে। তা ইতোমধ্যে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। আজ হালকা বৃষ্টি হয়েছে। বর্জ্যগুলোর স্তূপ থেকে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে। তবে এখনো যদি বর্জ্যগুলো অপসারণ করা সম্ভব না হয়। তবে ভারি বৃষ্টি হলে এগুলো জনদুর্ভোগের কারণ হবে।
কলতাবাজার এলাকায় কয়েকজন পরিচ্ছন্নকর্মীকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে করে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করতে দেখা যায়। এ সময় পরিছন্নতাকর্মী হীরা জানান, আমাদের লোকবল কম। তবুও আমরা দিনরাত চেষ্টা করছি কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে। প্রায় অধিকাংশ এলাকার কাজ শেষ। তবে তিন দিনব্যাপী কোরবানি চলায় কিছু এলাকায় এখনো বিচ্ছিন্নভাবে বর্জ্য রয়েছে। আমরা একটি ওয়ার্ডে অনেকগুলো দল কাজ করি। আশা করছি আজকের মধ্যেই সব বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হবে। ধোলাইখাল এলাকায় কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করতে দেখা যায় পরিছন্নতা কর্মী আরিফকে। তিনি কালবেলাকে বলেন, আমরা আমাদের সামর্থ্য দিয়ে চেষ্টা করছি কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের জন্য। তবে আমাদের লোকবল কম। তাই বর্জ্য অপসারণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে আশা করছি ভারি বৃষ্টি না হলে খুব দ্রুত বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছিম আহমেদ ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের মুঠোফোন যোগাযোগ করলে ডিএসসিসির ওয়েব সাইটে দেওয়া তাদের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
মন্তব্য করুন