চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে বড় ধরনের বিপর্যয় হয়েছে। চলতি বছর পাসের হার এসেছে ৫২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ১৮ শতাংশ কম। একইভাবে গতবছরের চেয়ে প্রায় ৪ হাজার কমে এবার জিপিএ ৫ পেয়েছে ৬ হাজার ৯৭ জন।
সংশ্লিষ্টদের মতে, শিক্ষাবোর্ড প্রতিষ্ঠার পর গত তিন দশকে এত খারাপ ফল কখনো হয়নি। কর্তৃপক্ষ বলছে ওভার মার্কিং বন্ধ করা, জুলাই আন্দোলন ও তার পরবর্তী ঘটনাবলির কারণে ফলাফলের এই হাল।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড মিলনায়তনে এবছরের এইচএসসির ফল ঘোষণা করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বোর্ডের চেয়ারম্যান ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ ও সচিব এ কে এম সামছু উদ্দিন আজাদ।
প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, এবার চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর, তিন পার্বত্য জেলা এবং কক্সবাজার মিলিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ১ লাখ ২ হাজার ৯৭০ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে পাস করেছেন ৫৩ হাজার ৫৬০ জন। পাসের হার এসেছে ৫২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
গতবার পাসের হার ছিল ৭০ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর জিপিএ–৫ পেয়েছিল ১০ হাজার ২৬৯ জন শিক্ষার্থী।
এবার ছাত্রদের পাসের হার ৪৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ; ছাত্রীদের পাসের হার ৫৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
এরমধ্যে চট্টগ্রাম নগরীতে পাসের হার ৭০ দশমিক ৯০ শতাংশ। আর নগরী বাদে জেলায় পাসের হার ৪৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে রাঙামাটিতে পাসের হার ৪১ দশমিক ২৪ শতাংশ, খাগড়াছড়িতে ৩৫ দশমিক ৫৩ এবং বান্দরবানে ৩৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। কক্সবাজার জেলায় পাসের হার ৪৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার সবচেয়ে বেশি, ৭৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৫৫ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং মানবিক বিভাগে ৩৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী জানান, এবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কঠোর নির্দেশনা ছিল, ওভার মার্কিং যেন না হয়। শিক্ষার্থীরা যা লিখেছে, সেটাই মূল্যায়ন করে যেন সঠিকভাবে মার্কিংটা করা হয়। আমরাও পরীক্ষকদের এ বিষয়ে কঠোরভাবে বলেছি।
তিনি আরও বলেন, আরেকটা বিষয় হচ্ছে, আগে কিছু ওভার মার্কিং হতো। এজন্য শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ হয়ত ভেবেছেন, পড়ালেখা না করেও কিংবা পরীক্ষার খাতায় কম লিখেও বোধহয় বেশি মার্কস পাওয়া যাবে। আর জুলাই আন্দোলন এবং পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে সার্বিকভাবে পড়ালেখার ক্ষতি হয়েছে।
মন্তব্য করুন