

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে (বিইউ) প্রথমবারের মতো জাতীয় আইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘গ্লোবাল সাউথে আইন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার : চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এই সম্মেলনের উদ্বোধন হয় আজ শনিবার (০৬ ডিসেম্বর) সকালেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সাবেক ডীন প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. ফারহানা হেলাল মেহতাব। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিইউ আইন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মোস্তফা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গিয়ে প্রফেসর ড. ফারহানা হেলাল মেহতাব বলেন, আমাদের দেশে অনেক মানুষ এখনো আইন মানতে অনীহা দেখায়। তাই সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। তিনি আরও বলেন, মানুষের দৈনন্দিন জীবনে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিভিন্ন আইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গ্লোবাল সাউথে রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতি, ধীর বিচার ব্যবস্থা এবং জবাবদিহির অভাব আইনের শাসনকে দুর্বল করছে। তবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং মানবাধিকার সংস্থার কাজের ফলে ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। তাঁর মতে, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আইন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন।
উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দেশের উন্নতি ও অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই জাতীয় আইন সম্মেলন ভবিষ্যতে দেশ, জাতি এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিজ সার্ভিসের প্রতিষ্ঠাতা এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ড. খালেদ হামিদ চৌধুরী।
সমাপনী বক্তৃতায় বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী বলেন, সময়ের সাথে সাথে মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আইনের প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে মানবাধিকারসহ সব নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত হয়। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়, বিচার বিভাগ, আইনজীবী, এবং তরুণ গবেষকদের যৌথ উদ্যোগ একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে সহায়তা করবে। আগামী দিনে আইনকে আরও শক্তিশালী করা এবং বিচারপ্রাপ্তি সহজ করাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ।
দিনব্যাপী আয়োজিত এই সম্মেলনে দুটি টেকনিক্যাল সেশনে মোট ১১টি বিষয়ে আলোচনা হয়। দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী, গবেষক এবং শিক্ষকরা আলোচনায় অংশ নেন। আয়োজকদের আশা—এ ধরনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের গবেষণা চিন্তা, বিশ্লেষণী দক্ষতা এবং একাডেমিক আত্মবিশ্বাস বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন