শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নের মিত্র সেনপট্টি চরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের নয়টি পরিবার দুই মাস ধরে বিশুদ্ধ পানির সংকটে রয়েছে। তারা কলসি ও বালতিতে করে অনেক দূর থেকে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করছেন। বর্তমানে তারা বিলের পচা পানি দিয়ে গৃহস্থালির কাজ করছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, মাটির ওপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে পাইপ। সেই পাইপের ওপর কোনো কল নেই। এ বিষয়ে আশ্রয়ণের বাসিন্দারা বলেন, আমরা ভিটেমাটিহীন গরিব মানুষ। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ঘর উপহার দিয়েছেন। আমরা অনেক খুশি। এখানে সবকিছু ঠিক থাকলেও পানির ব্যবস্থা নেই। এখানে আমরা ৯টি পরিবার থাকি। অনেক দূর গিয়ে কলস, বালতি নিয়ে কলের পানি আনতে হয়। এতে আমাদের হাত-পা ব্যথা হয়ে যায়। আমরা এ সমস্যার সমাধান চাই।
ওখানকার বাসিন্দা আরতী রানী বলেন, ‘আমরা দুই মাস হয় উপহারের ঘরে উঠেছি। আমাদের এখানে সবকিছু সুন্দর আছে, তবে কষ্টের বিষয় হচ্ছে, আমাদের এখানে কোনো টিউবওয়েল নেই। তাই আমাদের অনেক দূর থেকে কলের পানি আনতে হয়। দুই মাস ধরে পানি টানতে টানতে আমার গা, হাত-পা ব্যথা হয়ে গেছে। আমার নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। আমরা সবাই এর সমাধান চাই।’
নয় নম্বর ঘরের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন সিকদার বলেন, ‘বাবা আজ দুইডা মাস ধরে আমরা এহানে উঠছি। প্রধানমন্ত্রী আমাগোরে ঘর দিছে, কারেন দিছে; কিন্তু আমরা অহনো পানি পাই নাই। পানির অভাবে আমাগো অনেক কষ্ট হয়। আমরা এর সমাধান চাই।’
লাইলি বেগম বলেন, আমাদের রান্নাবান্না, ওজু, গোসল সবকিছুর জন্য আমাদের কলের পানি দরকার। বিলের ময়লা, পচা পানি দিয়ে কোনো কাজ করা যায় না। কাঁদা পানি দিয়ে গিয়ে কলের পানি আনতে হয়। আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর প্রতিকার চাই।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। এ প্রকল্পটি আমার আগের কর্মকর্তা বাস্তবায়ন করেছেন। তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী এএসএম মামুন অর রশিদ কালবেলাকে বলেন, এ বিষয়ে এর আগে আমাদের কেউ বিষয়টি অবহিত করেননি। আমি আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। আগামী একদিনের মধ্যে তাদের কলের ব্যবস্থা করব। বিশেষ করে ইউএনও অফিস যদি আমাদের আগে থেকে জানাত, তাহলে এ সমস্যা সমাধান হয়ে যেত।
মন্তব্য করুন