গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ট্রেন বন্ধ থাকায় ভালো নেই নিম্ন আয়ের মানুষ

ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন, বুকিং অফিসের সামনে বসে আছেন স্টেশনের কুলি সর্দার আল আমিনসহ অন্যরা। ছবি : কালবেলা
ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন, বুকিং অফিসের সামনে বসে আছেন স্টেশনের কুলি সর্দার আল আমিনসহ অন্যরা। ছবি : কালবেলা

ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের চা দোকানি নজরুল ইসলাম। চা বিক্রির আয়েই চলতো তার সংসার। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে স্টেশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় আয়-রোজগার কমেছে এই চা দোকানির।

নজরুল ইসলাম বলেন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকার সময় প্রতিদিন দোকানে পাঁচ হাজার টাকার মতো বেচাকেনা হতো। এখন সেটা কমে এক হাজারে নেমে এসেছে।

নজরুলের দোকানের পাশেই চেয়ার-টেবিল পেতে পান-সিগারেট বিক্রি করতেন মো. শাহীন। প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার টাকার মতো বিক্রি হতো। কিন্তু ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বেচাকেনা চার থেকে পাঁচশ টাকার মধ্যে নেমে এসেছে।

শাহীন বলেন, ব্যবসার ওই আয়েই চলতো সংসার ও দুই সন্তানের পড়াশোনার খরচ। কিন্তু ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় টান পড়েছে আয়-রোজগারে। যেহেতু আমাদের ব্যবসা ট্রেনের যাত্রীকেন্দ্রিক। তাই ট্রেন না চললে যাত্রী আসবে না। এজন্য দ্রুত ট্রেন স্বাভাবিক না হলে আমাদের সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাবে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গৌরীপুর জংশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় শুধু নজরুল আর শাহীনের আয়-রোজগার কমেনি। আয় রোজগারে টান পড়েছে স্টেশনের কুলি, হকার, ভিখারি, শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষের।

স্থানীয়রা জানান, এই স্টেশনে প্ল্যাট ফরমে স্থায়ী ও অস্থায়ী ৩০টি দোকান রয়েছে। এই দোকানগুলোর ব্যবসা স্টেশনকে ঘিরে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুলাই থেকে সারা দেশের মতো গৌরীপুর জংশনেরও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় তাদের ব্যবসা বাণিজ্যে মন্দা-ভাব দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, ব্যস্ত গৌরীপুর জংশনে সুনশান নীরবতা। বন্ধ রয়েছে স্টেশনের ক্যান্টিন। প্ল্যাটফরমে কয়েকটি চা ও পান দোকান খোলা থাকলেও সেখানে ক্রেতার দেখা নেই।

স্টেশনের ক্যান্টিনের কর্মচারী মনির হোসেন বাবু বলেন, আমি প্রতিদিন তিনশ টাকা মজুরিতে কাজ করতাম। এখন ক্যান্টিন বন্ধ থাকায় আয় নেই। অলস সময় কোথায় কাটাব। তাই বন্ধ ক্যান্টিনের সামনে এসে একা বসে থাকি।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন হয়ে প্রতিদিন জারিয়া-ঢাকা, মোহনগঞ্জ-ঢাকা ও জামালপুর চট্টগ্রাম এই ৩টি রেলপথে আন্তঃনগর, কমিউটার, মেইল ও লোকালসহ ২৪টি ট্রেন চলাচল করে। এই ট্রেনগুলোতে ঘুরে ঘুরে স্থানীয় প্রায় অর্ধশত হকার তাদের মাল বিক্রি করতেন। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে তারা।

হকার আব্দুল মোতালেব বলেন, আমি ট্রেনে ট্রেনে ঘুরে দাঁতের মাজন ও টুথব্রাশ বিক্রি করতাম। এই আয়েই চলত সংসার। এখন অপেক্ষায় আছি কবে ট্রেন চালু হবে। দ্রুত ট্রেন চালু না হলে আমাদের সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাবে।

গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার সফিকুল ইসলাম বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত ১৮ জুলাই থেকে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সারা দেশে ট্রেন চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক হতে পারে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাকসু নির্বাচন : তিন ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৩১ শতাংশ

বরিশালে যে ১২ কলেজের সবাই অকৃতকার্য

৩১ দফা একটি গতিশীল রাষ্ট্র গড়ার জন্য যথার্থ : লায়ন ফারুক

এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করলেন মারুফা

ফের ধারাবাহিকে স্বস্তিকা

এইচএসসি পরীক্ষা / ১১ বোর্ডে অনুপস্থিত ছিল ৩১ হাজার ৪৬৯ শিক্ষার্থী

ময়মনসিংহে পাসের হারে এগিয়ে মেয়েরা

জানা গেল সেই আনিসার ফল

৫ বছরে সবচেয়ে কম পাস কুমিল্লা বোর্ডে

বগুড়ার ৫ আসনে বিএনপির যেসব প্রার্থী আলোচনায়

১০

চতুর্থ বর্ষে কালবেলা, আলেমদের শুভেচ্ছা-দোয়া

১১

বড় চমক রেখে সেরা ওয়ানডে একাদশ বাছাই করলেন ম্যাক্সওয়েল

১২

দিনাজপুর বোর্ডে এইচএসসির ফলাফলে ধস

১৩

ইনজেকশন খুব ভয় লাগে: শ্রাবন্তী 

১৪

ফের কাছাকাছি অগস্ত্য-সুহানা

১৫

আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে : প্রধান উপদেষ্টা

১৬

ক্যাম্পাসের ৬ প্রবেশপথে কঠোর নিরাপত্তা, ঢুকতে পারছে না বহিরাগত

১৭

ভোট দিতে ২৫টি বাসে আসছেন অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা

১৮

অত্যন্ত চমৎকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিবেশ বিরাজ করছে : রাবি প্রক্টর

১৯

জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী, ভোট দিয়ে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী

২০
X