গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ছোট সাতাইল বাতাইল গ্রামের কিশোরী জেসমিন আকতার প্রিয়াকে (১৪) অপহরণের পর ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় করা মামলা প্রত্যাহার না করায় ওই কিশোরীর বিধবা মা মরিয়ম বেওয়াকে হত্যার হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
নিরাপত্তাহীনতায় গত তিন দিন ধরে তিনি তার জোসনা (২৫) নামে আরেক মেয়েকে নিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
জানা গেছে, ওই গ্রামের নুর আলম স্ত্রী ও চার মেয়ে রেখে প্রায় দেড়যুগ আগে মারা গেছেন। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে ছোট মেয়ে প্রিয়াকে অপহরণের পর ধর্ষণ করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সে উপজেলার লোনতলা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করত।
বিধবা মরিয়মের অভিযোগ, মেয়েকে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় থানা পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকার করায় আদালতের শরণাপন্ন হন। পরে গাইবান্ধা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা হয়। এ মামলায় পৌর এলাকার বোয়ালিয়া নয়াপাড়ার জসিম উদ্দিনের ছেলে মোমিনসহ (৩৫) সাতজনকে আসামি করা হয়।
এরপর থেকে আসামিরা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এমনকি ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি দুপুরে গালাগালসহ জীবননাশের হুমকি দেয়। এ বিষয়ে মরিয়ম বেওয়া গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেন। এতে তারা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং সুযোগ খুঁজতে থাকে।
এদিকে, দেশের ক্লান্তিলগ্নের সুযোগে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে দুর্বৃত্তরা। তারা গত ৭ আগস্ট সকালে ওই বিধবার বসতবাড়িতে হামলা চালায় এবং ইটপাটকেল ছোড়ে। মরিয়ম বেওয়া জানান, দুর্বৃত্তরা বাড়ির ভেতরে এলে ঘরের দরজা বন্ধ করে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করি। এ চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এলে জীবনে রক্ষা পাই। মেয়ের মতো আমাকেও হত্যা করে বিনা জানাজায় লাশ দাফনের হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা। সেই থেকে আরেক মেয়ে জোসনাকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। তবে মোমিনের দাবি, সে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি আছাদুজ্জামান আপাতত নিরাপদে থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিষয়টি দেখা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।