পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতাদের গুলিবর্ষণে তিন শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১০৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নতুনভাবে থানার কার্যক্রম শুরু হলে ঘটনার সাত দিন পর রোববার (১১ আগস্ট) সকালে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
মামলার বাদী পাবনা সদর উপজেলার চর বলরামপুর গ্রামের নিহত শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামের বাবা দুলাল উদ্দিন মাস্টার।
পাবনা সদর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, ১০৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত অনেককে আসামি করে মামলাটি করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাইদ খান। তবে মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মামলায় জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতা এবং জনপ্রতিনিধিদের আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে আছেন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক প্রিন্স, পাবনা পৌরসভার মেয়র শরীফ উদ্দিন প্রধান, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ মোশারফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কামরুল হাসান মিন্টু, অ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ বাবু, সাবেক প্রচার সম্পাদক কামিল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হামিদ মাস্টার, মোস্তাফিজুর রহমান সুইট, সরদার মিঠু আহমেদ, আনিসুজ্জামান দোলন, আব্দুল্লাহ আল বাবু ওরফে লক বাবু, আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলী সাদিক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আহমেদ শরীফ ডাবলু, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, জেলা পরিষদ সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সোহেল, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন দুলাল, দোগাছি ইউপি চেয়ারম্যান আলী হাসান, চরতারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান খান, গয়েশপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন মুতাই, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ, সাধারণ সম্পাদক মীর রাব্বিউল ইসলাম সীমান্ত, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু, সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল্লাহসহ অনেকে।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পাবনা শহরের ট্রাফিক মোড় চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিন শিক্ষার্থী নিহত ও শতাধিক আহত হন। নিহতরা হলেন পাবনা সদর উপজেলার হাজীরহাট বেতেপাড়া এলাকার মাহবুবুল হোসেন নিলয় (১৬), চর বলরামপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (১৯) ও একই গ্রামের ফাহিম হোসেন রাজ্জাক (১৭)।
মন্তব্য করুন