শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১৭ এএম
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

শেরপুরে ভয়াবহ বন্যায় ৭ জনের মৃত্যু

টানা বৃষ্টিতে তিন জেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি। ছবি : সংগৃহীত
টানা বৃষ্টিতে তিন জেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি। ছবি : সংগৃহীত

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে শেরপুরে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসনসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

শুক্রবার থেকে শনিবার (৫ অক্টোবর) রাত পর্যন্ত বন্যার পানিতে ডুবে নারী, বৃদ্ধ ও কিশোরসহ মোট ৭ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে।

নিহতরা হলেন- নালিতাবাড়ী উপজেলার অভয়পুর গ্রামের বাছির উদ্দিনের ছেলে হাতেম আলী (৩০) ও তার ভাই আলমগীর (১৬), উপজেলার বাঘবেড় বালুরচর গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী মিজা বেগম। একইদিন সন্ধ্যায় খলিসাকুড়া গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে মারা যান বৃদ্ধ ইদ্রিস আলী। তবে মৃত বাকি তিন জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এদিকে শনিবার রাত থেকে নতুন করে শেরপুর সদর এবং নকলা উপজেলার আরও ৭টি ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় শেরপুরের মহারশি, সোমেশ্বরী, চেল্লাখালি, ভোগাই ও মৃগী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে শেরপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত শেরপুরের ৫টি উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আর পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ। ঝিনাইগাতী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার সব সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

কৃষি অফিসের তথ্যমতে, জেলার অন্তত ৩০ হাজার হেক্টর আমন আবাদ এবং এক হাজার হেক্টর সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে অন্তত ৭০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

শেরপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রনব কুমার কর্মকারের দেওয়া তথ্যমতে, শুধু ঝিনাইগাতী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলায় ২ হাজার ৫৭টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিক হিসাবে ১১ কোটি টাকার বেশি।

নকলা থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, সবশেষ শনিবার রাতে নকলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বন্যায় নালিতাবাড়ী উপজেলায় পাঁচ জন ও ঝিনাইগাতীতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রানা কালবেলাকে বলেন, নালিতাবাড়ীতে আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ১২৩টি। এর মধ্যে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি ইউনিয়নে বেশি ক্ষতি হয়েছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল কালবেলাকে বলেন, পানিবন্দি মানুষদের সঠিকভাবে উদ্ধার করতে সফল হয়েছি। অনেককে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি এবং শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। উপজেলার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, জেলার বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দুর্গতদের উদ্ধারে ও শুকনো খাবার পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। একইসঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাচ্ছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গামিনিকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানাল বিসিবি

প্রধান উপদেষ্টা ডাকলে আমরা যাব, অন্য দল দিয়ে কেন : সালাহউদ্দিন

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে এক নেতাকে নোটিশ ছাত্রদলের

২৩ মাঠ কর্মকর্তাকে বদলি

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে যোগ দিল ৩৬ দেশের সেনা

মামদানিকে হারাতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করেন ২৬ ধনকুবের

একসময়ের ময়লার ভাগাড় আজ মাঠ, চলছে জমজমাট ক্রিকেট

শারীরিক প্রতিবন্ধী চৈতি রানী দেব হতে চায় দৌড়বিদ

এশিয়ার আর্চারির শীর্ষ পদে বাংলাদেশের চপল

জামায়াত কথা ও কাজে মিল রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ : শফিকুর রহমান

১০

থানা ভাঙচুর মামলায় আ.লীগ নেতা কারাগারে

১১

এই মুহূর্তে প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই : গণশিক্ষা উপদেষ্টা

১২

৭ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসের মাইলফলক : ব্যারিস্টার মীর হেলাল

১৩

বিওএ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা

১৪

১৩ নভেম্বর ঘিরে নির্দেশনা / সতর্ক অবস্থানে রাজধানীর ৫০ থানার পুলিশ

১৫

৪ হাজার মোটরসাইকেল নিয়ে জামায়াত নেতা বুলবুলের শোভাযাত্রা

১৬

বিএনপিকে নিয়ে মোনাফেকি করছে জামায়াত : কায়কোবাদ 

১৭

জামায়াতের ইসলাম আর আমাদের ইসলাম এক নয় : হেফাজত আমির 

১৮

বিএনপির হয়ে যে আসন থেকে নির্বাচন করতে চান স্নিগ্ধ

১৯

গডফাদারের নির্দেশে সিদ্ধিরগঞ্জ চলবে না : মান্নান

২০
X