শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৩, ০৪:৫৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শিকলে বন্দি জীবন, অর্থের অভাবে হচ্ছে না চিকিৎসা

আলী আক্কাছ
আলী আক্কাছ

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সাত বছর আগে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন আলী আক্কাছ (৩০) নামের এক যুবক। এর পর থেকে কখনো জমি বিক্রি করে, আবার কখনো এলাকাবাসী থেকে টাকা চেয়ে আলী আক্কাছের চিকিৎসা করেন পরিবার।

নাঙ্গলকোট জামান ক্লিনিক ও মইডার হোমসেও তার চিকিৎসা করেন পরিবার। চিকিৎসায় কিছুদিন ভালো থাকে। আবার শুরু হয় তার পাগলামি। ধূমপান করা তার নেশায় পরিণত হয়েছে। সুযোগ পেলে বাড়ির পাশের নাঙ্গলকোট-ঢালুয়া সড়কে তিনি চলে যান। স্কুল-কলেজগামী মেয়েদের দেখলে আক্রমণ করার পাশাপাশি পথচারীদেরও বিভিন্ন সময়ে মারধর করেন। যার ফলে প্রায় সময় তিনি হাত-পায়ে শিকল বন্দি থাকতে হয়।

তিনি উপজেলার ঢালুয়া ইউপির বদরপুর আকমত আলী বেপারী বাড়ির তাজুল ইসলামের ছেলে। টাকার অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না তার। এখন তার হাতে ও পায়ে শিকল পরানো অবস্থায় ঘরের ছোট্ট জীর্ণকক্ষে দিন কাটে।

পরিবারের সদস্যদের চোখের আড়াল হলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অকারণেই মানুষকে গালমন্দ ও স্কুল-কলেজগামী মেয়েদের বিরক্ত ও গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কারও কারও কাছে সিগারেটও চান তিনি। এমন অস্বাভাবিক আচরণ সামাল দিতে গিয়ে পরিবারের লোকজনকে পড়তে হয় বিপাকে। বাধ্য হয়ে তার স্ত্রীও চলে যান বাপের বাড়িতে। যা সামর্থ্য ছিল, তা দিয়ে পরিবারের লোকজন চিকিৎসা করিয়েছে। তবে অর্থের অভাবে ভালো কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না তার।

চিকিৎসকরা জানিয়েছে, ভালো মানের চিকিৎসা পেলে ভালো হয়ে যাবেন তিনি। একসময় বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে সাহায্য ও পরিবারের অর্থে চিকিৎসা করালেও এখন আর তা পারছে না।

তার বড় ভাই নুরুন নবী বলেন, আলী আক্কাছকে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে ডাক্তার দেখানো হয়। কিছুদিন ভালো ছিল। এখন টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। মেয়েদের দেখলে গালমন্দ ও গায়ে পড়তে চায়। সিগারেট পান করলে শান্ত থাকে সে।

মা হাবিয়া খাতুন বলেন, তার ছেলের মাথায় সমস্যা দেখা দিলে জায়গাজমি বিক্রি ও বিভিন্ন লোকজন থেকে সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করান। এখন টাকার অভাবে চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন আলী আক্কাছ। মেধাশক্তি ছিল ভালো। হঠাৎ করে ঘরে ঝিমিয়ে বসে থাকতে থাকতে একপর্যায়ে পাগলামি শুরু করতে থাকেন। তার হাত থেকে আমিও রক্ষা পাইনি। মহিলাদের মারধর ও গালমন্দ করে। তাই শিকল বন্দি জীবন পার করতে হচ্ছে সন্তানকে। তিনি আর চান না সন্তানের হাতে পায়ে শিকল পরানো অবস্থায়। এজন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পারে সুস্থ করে তুলতে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নুরুদ্দিন অপুর হাত ধরে আ.লীগ নেতার বিএনপিতে যোগদান

২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত: দেখে নিন কোন গ্রুপে কোন দল

২০২৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ যারা

রাতে আবার হাসপাতালে গেলেন জুবাইদা রহমান

যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ছে, তালিকায় ৩০টির বেশি দেশ

খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন, বন্ধ হয়েছে রক্তক্ষরণ

‘বাঁধের মাটি বড় বড় খণ্ড হয়ে ঝুপঝাপ শব্দে ভেঙে পড়ে’

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

দেড় হাজার দৌড়বিদের অংশগ্রহণে হাফ ম্যারাথন

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফ্রি যাত্রীসেবা

১০

বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

১১

যুবদল নেতা সুমনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

১২

দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, একজন গুলিবিদ্ধসহ আহত ১০

১৩

গণতন্ত্র মঞ্চের নতুন সমন্বয়ক সাইফুল হক

১৪

পুরোনো রাজনীতি পরিহার করে নতুন রাজনীতি করতে চাই : মঞ্জু

১৫

খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা দেখার জন্য শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন : স্বপন

১৬

ভুয়া ফটোকার্ড ও অপপ্রচারের অভিযোগে জিডি করলেন ছাত্রদলের আবিদ-মায়েদ

১৭

তারেক রহমান বাংলাদেশের ভোটার কি না এ প্রশ্ন অবান্তর : অ্যাটর্নি জেনারেল

১৮

দেশের ক্রান্তিলগ্নে খালেদা জিয়াকে খুবই প্রয়োজন : লুৎফুজ্জামান বাবর

১৯

খালেদা জিয়া কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন : মান্নান

২০
X