জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আনিসুজ্জামানকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিতে আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন সহকারী প্রসিকিউটারসহ ৪০ আইনজীবী। তারা সবাই জামালপুর জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য।
রোববার (৪ মে) দুপুরে এ আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
লিখিত আবেদনে বলা হয়, গত ১৩ নভেম্বর পিপি পদে যোগদান করার পর থেকে মো. আনিসুজ্জামান বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতি করে আসছেন। তিনি স্বৈরাচারের দোসর, আওয়ামী লীগ দলীয় আসামিদের জামিন করিয়ে দেওয়ার জন্য চুক্তি নেন এবং তার জুনিয়র ও বন্ধু আইনজীবীদের মাধ্যমে জামিনের আবেদন করান। তিনি কোর্টে শুনানি চলাকালে আসামিপক্ষের আইনজীবীকে জামিনের বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করার জন্য কানে কানে পরামর্শ দেন, যা উপস্থিত আইনজীবীগণ প্রত্যক্ষ করেন এবং বিজ্ঞ আদালত তাকে রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে তার বক্তব্য উপস্থাপন করার জন্য বললে তিনি নমনীয়তা প্রকাশ করেন।
পিপি মো. আনিসুজ্জামান বিভিন্ন থানায় মামলা নেয়ার জন্য এবং মামলা না নেয়ার জন্য সুপারিশ করেন যা তার পদের সাথে সম্পূর্ণ বেমানান।
গত ১ মে তিনি ১টি মামলা রেকর্ড করার জন্য বকশীগঞ্জ থানার ওসির সাথে আপত্তিকর ভাষায় কথাবার্তা বলেন। এক পর্যায়ে ওসি তাকে যে ভাষায় সম্বোধন করেন তাতে সব আইনজীবীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে।
লিখিত আবেদনে আরও বলা হয়, পিপি মো. আনিসুজ্জামানের আচার-আচরণ, কথাবার্তা আপত্তিকর। তিনি প্রায়ই সিনিয়র আইনজীবীদের সম্পর্কে বিরূপ ও অসৌজন্যমূলক মন্তব্য করেন এবং প্রায়ই সহকারী আইন কর্মকর্তাগণকে (এপিপি) তুচ্ছ তাচ্ছিল করেন। এ অবস্থায় মো. আনিসুজ্জামান পিপি পদে দায়িত্ব পালনের নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।
এসব ঘটনায় অ্যাড. আনিসুজ্জামানকে পিপির পদ থেকে অপসারণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ জানানো হয় আবেদনে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবেদনে স্বাক্ষরকারী জিপি এসএম তৌফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এটা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিদ্ধান্ত। এসময় তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাড. গোলাম নবী বা সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
অভিযুক্ত পিপি অ্যাড. আনিসুজ্জামান জানান, আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট। ৬১ জন কর্মকর্তার মধ্যে ৪০ জন স্বাক্ষর করেছে। তারা ওসির কথাকে অসম্মানজনক বলেছেন আবেদনে কিন্তু তারা ওসির শাস্তি না চেয়ে আমার অপসারণ কেন চাইল তা আমার কাছে পরিষ্কার নয়।
মন্তব্য করুন