কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী বাসস্ট্যান্ড থেকে ধলডাঙ্গা শালজোড় ঘাটপার পর্যন্ত রাস্তার মেরামত কাজ প্রায় ৮৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। শেষ না হতেই হাতের টানেই উঠে যাচ্ছে পাথর ও পিচের কার্পেটিং। প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সাড়ে ৮ কিলোমিটার রাস্তার এমনি বেহাল দশা। এতে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ পাওয়া মো. বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ভূরুঙ্গামারী বাসস্ট্যান্ড থেকে ধলডাঙ্গা ঘাটপার পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার রাস্তা ১৭ কোটি ৭৭ লাখ ৫৫ হাজার ২২৮ টাকা ব্যয়ে মেরামতের উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় ১৬০০ মিটার রাস্তা আরসিসি ঢালাই এবং অবশিষ্ট রাস্তা কার্পেটিং হওয়ার কথা। সরকারের উন্নয়ন সহযোগী এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) আর্থিক সহযোগিতায় কাজটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ।
দরপত্রে কাজটি পায় ‘আরএবি-আরসি-বিসি-এইচটি জেভি’ নামের কুড়িগ্রামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজটির মেয়াদকাল ধরা হয় ৫ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে ৩০ জুন ২০২৫। পরে কাজটি মো. বেলাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন দরপত্রে কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভূরুঙ্গামারী বাসস্ট্যান্ড থেকে ধলডাঙ্গা শালজোড় ঘাটপার পর্যন্ত রাস্তার মেরামত কাজ প্রায় ৮৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে সড়কটি। কোথাও কোথাও ময়লার ওপরেই দেওয়া হয়েছে পিচ ঢালাই। রাস্তা মেরামতের কাজ শেষ না হতেই উঠে যাচ্ছে সড়কের পিচ। রাস্তায় চলাচলকারী পথচারীর পায়েও লেগে যাচ্ছে পিচ। আবার যানবাহনের চাকার দাগ বসে যাচ্ছে সড়কে। এমনকি পা দিয়ে ঘষলেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। নিম্নমান এবং কম পুরুত্বের অপরিকল্পিত কার্পেটিং করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করে। অথচ সড়ক কার্পেটিংয়ের পুরুত্ব ও পিচ ঢালাইয়ে কম দেয়া হয়েছে বিটুমিনও। এছাড়া কমপ্রেশার মেশিন দিয়ে সড়ক পরিষ্কার না করে ধুলা-ময়লার ওপরই পিচ ঢালাই করা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিম্নমানের কাজ ও হাতের খোঁচায় পিচ উঠে যাওয়ার ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হলে স্থানীয়রা রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেন।
এবিষয়ে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ নেওয়া ব্যক্তি মো. বেলাল হোসেন বলেন, কাজ চলমান রয়েছে। পিচের বিটুমিন জমাট না বাধায় মোটরসাইকেল চালানোর কারণে পিচ উঠে গেছে। পরে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী ইনছাফুল হক সরকার বলেন, কাজে কোনো অনিয়ম খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাস্তার মাটি ও অন্যান্য কারণে কয়েকটি জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছিল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তা ঠিক করতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন