মৌলভীবাজারের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) শতাধিক ব্যক্তিকে ‘পুশ ইন’ করেছে বলে জানা গেছে। তবে অনুপ্রবেশের দায়ে ১৫ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বুধবার (৮ মে) কমলগঞ্জ উপজেলা ধলই সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশে ১৫ জনকে আটক করা হয়।
জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা ধলই সীমান্ত দিয়ে ১৫ জন, বড়লেখা উপজেলার পাল্লাতল, লাতু সীমান্ত ও কুলাউড়ার মুরইছড়া সীমান্ত দিয়ে প্রায় ৯০ জন অনুপ্রবেশ করেছে বলে খবর পাওয়া যায়।
কমলগঞ্জের ধলই সীমান্তে আটক ১৫ ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- ৯ জন পুরুষ, তিনজন নারী ও তিন শিশু । এদিকে মুরইছড়া সীমান্ত দিয়ে আসা অনেকেই বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছেন।
এর আগে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে বুধবার খাগড়াছড়ির ৩টি সীমান্ত দিয়ে ৮১ জন এবং কুড়িগ্রামের রৌমারি সীমান্ত দিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে ৩০ জনকে পুশ ইন করা হয়।
ধলই সীমান্ত আটক ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, পাঁচ বছর ধরে তারা ভারতের আসামে বসবাস করছেন। হঠাৎ পুলিশ তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়ে হেলিকপ্টারে করে ত্রিপুরার মানিক ভাণ্ডার এলাকায় নিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। তাদের বাড়ি নড়াইল, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় বলে দাবি করেছেন।
আটক ব্যক্তিরা আরও জানান, তাদের সঙ্গে আরও অনেকে ছিলেন। এই সংখ্যা তিন শতাধিক হবে। বিএসএফ তাদের কয়েকজনকে ধলই সীমান্ত দিয়ে গেট খুলে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়। তবে অন্যদের কোনো সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তারা কিছু বলতে পারেননি।
মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত নারী সদস্য বিনা রানী দেব কালবেলাকে জানান, ধলই সীমান্তে আটক লোকদের প্রথমে বিজিবি ক্যাম্প থেকে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তোলার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। তবে পরবর্তীতে তাদের আর থানায় নেওয়া হয়নি।
মানধবপুর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শীব নারায়ণ শীল কালবেলাকে বলেন, বিএসএফ ১৫ জনকে বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ করেছে। বিজিবি তাদের আটক করে নিয়ে গেছে। এদিকে সীমান্তে অনুপ্রবেশের জন্য অনেক লোক জড়ো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
উত্তর শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লাতু সীমান্ত থেকে ৩২ জনকে আটক করে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া পাল্লাতাল সীমান্ত দিয়ে শুনেছি আরও ২৩ জন এসেছে।
কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. হেলাল আহমদ কালবেলাকে বলেন, আমরা শুনেছি মুরইছড়া সীমান্তবর্তী পাহাড় দিয়ে ২৫-৩০ জন লোক এসেছেন। কেউ নিদিষ্ট সংখ্যা বলতে পারছেন না। সিসিটিভি ক্যামেরায় এক জায়গায় আমরা ৪ জনকে দেখেছি।
৪৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জাকারিয়া বলেন, আটক ব্যক্তিরা সবাই বাংলা ভাষায় কথা বলছেন। যাচাই-বাছাই করে তাদের বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনার পর মৌলভীবাজার জেলার সব সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন