গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় দেশের তরুণদের শক্তিকে কাজে লাগাতে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। আগামী শনিবার (১৭ মে) খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবের ব্যাঙ্কুয়েট হলে খুলনার এ কর্মসূচি সম্পর্কে জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে খুলনা ছাড়াও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করবেন বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
খুলনায় খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সমন্বয়ে এই কর্মসূচির প্রথম দিনে আগামীকাল শুক্রবার (১৬ মে) বিকেল ৩টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
সমাবেশকে সামনে রেখে খুলনা বিএনপির নেতারা বলছেন, তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে হবে তারুণ্যের মহামিলন। এখানে সমবেত হবেন দেশের নানা শ্রেণি-পেশা, বিশ্বাস, মতাদর্শ ও সামাজিক পটভূমি থেকে উঠে আসা তরুণ-তরুণীরা। যারা স্বপ্ন দেখেন একটি আধুনিক, ন্যায্য ও মানবিক বাংলাদেশের। তাদের সঙ্গে থাকবেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। যারা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে শরিক রাজনৈতিক দলগুলো ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে তরুণ সমাজকে নীতি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে মাসব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়েছে। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে চারটি বৃহত্তর বিভাগে ভাগ করে ধারাবাহিকভাবে সেমিনার ও সমাবেশ আয়োজন করছে। চট্টগ্রামে প্রথম পর্বের আয়োজন গত সপ্তাহে সম্পন্ন হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
শুক্রবার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে অংশ নেবেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, যুক্তরাষ্ট্রের মেডিকেল ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলাইনার সহযোগী অধ্যাপক আজিজুল হক, বিডিজবস প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর, ডিডাব্লিউ একাডেমি জার্মানির রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও প্রভাষক মারুফ মল্লিক, চিন্তক ও জবান সম্পাদক রেজাউল করিম রনি, এএমজেড হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সায়েম মোহাম্মদ, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম খন্দকার, শিখো প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীর চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের সহযোগী অধ্যাপক তৌফিক জোয়ার্দার।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের জনসংখ্যার বড় অংশই তরুণ, যারা রাষ্ট্র গঠনে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ভাবনা ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ কেবল রাজনৈতিক কর্মসূচি নয় বরং এটি একটি প্রজন্মের সঙ্গে সংলাপ গড়ার সেতুবন্ধন। এই উদ্যোগে আমাদের সম্ভাবনাময় তরুণদের সংযোগের মাধ্যমে আগামীর পথচলার দিক খুঁজে পাওয়া যাবে। যারা একটি আধুনিক, ন্যায্য ও মানবিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন। তাদের সঙ্গে থাকবেন বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরা, যারা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে আসছেন। এই ঐতিহাসিক আয়োজনে তরুণরা কেবল উপস্থিতই থাকবেন না, বরং নিজেদের ভাবনা, অভিজ্ঞতা ও স্বপ্ন প্রকাশ করবেন এবং মনোযোগ দিয়ে শুনবেন দলের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা, নীতিমালা ও পরিকল্পনা— যা তাদের স্বপ্ন পূরণের সেতুবন্ধন হয়ে উঠতে পারে।
মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাড. শফিকুল আলম মনা বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের রাজনৈতিক কাঠামোয় গুণগত পরিবর্তনের জন্য নিরলসভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সেই পথ ধরেই তিনি তরুণদের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান। তরুণদের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে কেউ আর এই দেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন