জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাতে গিয়ে আহত এক যুবলীগ নেতা জুলাই যোদ্ধা হিসেবে অনুদান পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১৪ মে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আহত জুলাই যোদ্ধা হিসেবে ‘সি ক্যাটাগরিতে’ এক লাখ টাকার চেক গ্রহণ করেন তিনি।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মো. মিনারুল ইসলাম। তিনি খুলনার তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে খুলনার আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণ ও হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় কার্যালয় থেকে পালাতে গিয়ে আহত হন মিনারুল।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, আহত জুলাই যোদ্ধা সি ক্যাটাগরিতে খুলনায় ৬৩ জনের নামে চেক এসেছে। তাদের মধ্যে ৫০ জন এক লাখ টাকার চেক নিয়েছেন। গত ১৪ মে খুলনার জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের হাত থেকে চেক গ্রহণ করেন মিনারুল।
খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমার মণ্ডল জানান, ‘উপজেলা পর্যায়ে আবেদন করলে পুলিশ, জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র প্রতিনিধি, হাসপাতালসহ বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়। পরে জেলা কমিটির সভায় আরেক দফা যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মিনারুল সরাসরি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। মন্ত্রণালয় থেকে তার আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের সব প্রক্রিয়া শেষ করে গেজেট প্রকাশ করে চেক খুলনায় পাঠিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি তার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়, তাহলে সেটি যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। তখন গেজেট থেকে নাম বাদ দেওয়া হবে।’
তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মিনারুল ইসলাম। ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিলে তাকে বহিষ্কার করা হয়। গত ৪ আগস্ট খুলনায় দলীয় কার্যালয় থেকে পালাতে গিয়ে টিনের চালে ঝাপ দিলে আহত হয় মিনারুল।
আরও জানা গেছে, যুবলীগ নেতা মিনারুল জুলাই বিপ্লবের ছাত্রদের ওপর হামলাকারীদের অন্যতম একজন। গত ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ অফিস রক্ষা করতে সে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে এবং ছাত্রদের কাছে তাড়া খেয়ে তিন তলা থেকে লাফ দিয়ে আহত হয়। পরে তাকে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে সে গা ঢাকা দিয়ে আছে। মিথ্যাচার ও জালিয়াতি করে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়েছে।
জালিয়াতির এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমারকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিগগরিই অনুদান ফেরত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
মন্তব্য করুন