‘জুলাইয়ের প্রেরণা দিতে হবে ঘোষণা, জুলাই বিপ্লব ধ্বংস করা যাবে না’ স্লোগানে মুখরিত চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লাহ মোড়। মিছিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি এবং ছাত্রফ্রন্টসহ সব সংগঠন অংশগ্রহণ করে। এছাড়া বিক্ষোভ মিছিলের অগ্রভাগে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী নেতারা ছিলেন।
শুক্রবার (২৩ মে) জুমার পর নগরীর আন্দরকিল্লাহ শাহী জামে মসজিদের সামনে থেকে জুলাই ঐক্যের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে জুলাই ঐক্য বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর আন্দরকিল্লাহ মোড় থেকে জামালখান মোড় প্রদক্ষিণ করে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা খবর পাচ্ছি একটি পক্ষ নতুন বাংলাদেশ গড়ে ওঠার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এই সরকারের কাছে আমরা দাবি জানাই যে, নতুন বাংলাদেশ গড়ে ওঠার পথে ওই প্রতিবন্ধকতাকারী পক্ষটি চিহ্নিত করে মুখোশ উন্মোচন করা হোক। আজকের যে ঐক্য সেই ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে, না হয় বাংলাদেশ আবারও ভুলপথে যাবে।
বক্তারা দাবি করেন, গত দুই দিন যে ষড়যন্ত্র চলছে সেটি ভারতের। এই ষড়যন্ত্রকে কোনোভাবে মেনে নেওয়া হবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নেতৃত্বে যেভাবে দেশ সংগঠিত হয়েছে সেই ঐক্য ধরে রেখে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। যে ভুল বুঝাবুঝি বিভিন্ন দলের সঙ্গে হয়েছে অর্থাৎ জুলাই ঐক্যের সমর্থনে যে দলগুলো রয়েছে তাদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যে সমালোচনা হচ্ছে সেগুলো বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন ভেঙে যেতে দেব না। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ১৪০০ শহীদ এবং ২০ হাজার নেতা আহতের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ দুয়েক দিনের ষড়যন্ত্রে ভেঙে পড়তে পারে না।
বক্তারা বলেন, এখনো দৃশ্যমান বিচার হয়নি, সংস্কারও হয়নি। যারা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন তাদের আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই চট্টগ্রামে জুলাই ঐক্য জাগ্রত আছে। আমরা জানিয়ে দিতে চাই জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ডের দৃশ্যমান বিচার ও দৃশ্যমান সংস্কার পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বরতরা যথাযথভাবে পালন করবেন। অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের। আমরা এখনো বিচার ও সংস্কারের গতি দেখিনি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, সরকার যেন জুলাইয়ে আহত, শহীদদের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে কাজ করে এবং দৃশ্যমান বিচার-সংস্কারের গতি দেখতে পাই। জুলাই নিয়ে যে ষড়যন্ত্র চলছে সে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা সজাগ আছি। যদি জুলাই স্পিডকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয় তাহলে আবার জুলাই নেমে আসবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন বলেন, আমাদের জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে ঠিক তখনই দেশের অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র ও ভারতীয় ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমাদের জুলাইয়ের সহযোদ্ধারা দেশে থাকবে। এই দেশে ভারতীয় কোনো প্রেসক্রিপশন এবং ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দেব না। নির্দিষ্ট তারিখে আমাদের জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র ঘোষণা করতে হবে, অন্যথায় এর চাইতে কঠিন কর্মসূচি দিতে আমরা বাধ্য হব।
ভারতীয় আধিপত্য এখনো চলমান রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র এখনো চলমান রয়েছে। অনেক রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসার জন্য ভারতীয় প্রেসক্রিপসন বাস্তবায়ন করতে চায়। কিন্তু আমরা জুলাইয়ের সহযোদ্ধারা থাকতে সেটি কখনো বাস্তবায়ন হবে না।
মন্তব্য করুন