নরসিংদীতে যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। শনিবার (২৮ জুন) রাতে নরসিংদী শহরের দত্তপাড়া পুরাতন লঞ্চঘাট এলাকায় স্বামী শংকর চন্দ্র দাসের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, প্রায় ৭ বছর আগে নরসিংদী শহরের ঘোড়াদিয়া-সংগীতা এলাকার জন্টু চন্দ্র দাসের মেয়ে স্মৃতি রাণী দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় দত্তপাড়া এলাকার যোগেশ চন্দ্র দাসের ছেলে শংকর চন্দ্র দাসের। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে শংকরকে নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা, স্বর্ণলংকারসহ অন্যান্য সামগ্রী দেয় কনে পক্ষ। এরপরও শংকর প্রায়ই তার স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে আরও টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছিল।
স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে স্মৃতির পরিবার প্রায় সময়ই তাকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে আসছিল। এতেও তার মন ওঠতো না। এক পর্যায়ে তাকে আরও দুই লাখ টাকা বাপের বাড়ি থেকে এনে দেওয়ার জন্য তার উপর চাপ প্রয়োগ করে। এতে স্মৃতি রাণী দাস আর কোনো টাকা এনে দিতে পারবে না বলে জানালে শংকর চন্দ্র দাস অমানবিক নির্যাতন চালায়।
স্বামীর এ নির্যাতনের কথা স্মৃতি রাণী তার মাকে মোবাইল ফোনে জানান। পরে এ বিষয়ে মেয়ের জামাইকে জিজ্ঞেস করতে বার বার ফোন দিলেও শংকর ফোন রিসিভ করেনি।
শনিবার রাতেও শংকর তার স্ত্রীকে ব্যাপক মারধর করলে একপর্যায়ে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এ অবস্থায় বাড়ির লোকজন স্মৃতি রাণীকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে শংকর রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ফোন দিয়ে তার শাশুড়িকে জানান, আপনার মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে।
এ খবর পেয়ে স্মৃতি রাণী দাসের পরিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখেন তাদের মেয়ে মারা গেছেন। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় স্বামী শংকর চন্দ্র দাস হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে স্মৃতি রানীর পক্ষের লোকজন আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ তাকে রাতেই থানায় নিয়ে যায়।
রোববার (২৯ জুন) নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের পর স্মৃতি রাণী দাসের মরদেহ তার আত্মীয়স্বজনের কাছে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে নরসিংদী মডেল থানার এস আই রোমান সাদেকিন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী শংকর চন্দ্র দাসকে আটক করা হয়েছে। থানায় মামলা দায়ের করার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন