জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কোকতাড়ার চম্পাতলী ব্রিজের পশ্চিম পার্শ্বে ছোট যমুনা নদীর ওপারে পরিত্যক্ত প্রায় ৫০ বিঘা বালুর চরে গ্যালাক্সি ড্রাগন বাগান করে শিপলু ও তুষার দুই ভাই লাভবান হয়েছেন। চাকরি নামের সোনার হরিণের পেছনে না ছুটে নিজেরা হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা। তাদের ড্রাগন বাগান হয়েছে এখন অনেকের কর্মসংস্থানের জায়গা।
নদীর ওপারে বাগান হওয়ায় নদী পার হয়ে বাগানে যেতে বাঁশ-কাঠ দিয়ে সুন্দর একটি ব্রিজও তৈরি করেছেন তারা। বাগানটি দেখতে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি বিভিন্ন এলাকার লোকজন ভিড় করেন বলে জানান বাগান মালিক শিপলু।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় বিশাল আকারের ড্রাগন বাগানটির চারধার রোড সিমেন্টের পিলার ও জিআই তার দিয়ে মজবুত করে বেড়া দেওয়া হয়েছে। আর বাগানের গাছগুলো ড্রাগনের ফুল ফলে ভর্তি। নদীর পাড়ের এমন সুন্দর দৃশ্য দেখে সবাই আকৃষ্ট হবে।
জয়পুরহাট-হিলি সড়কের পাঁচবিবির কোকতাড়ায় পাকা রাস্তার পাশে বাগানের টাটকা স্বতেজ ড্রাগন বিক্রয় করা হচ্ছে। দোকানের ড্রাগনগুলো টাটকা সতেজ দেখে রাস্তায় চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহনের চালক-যাত্রীরা দাঁড়িয়ে তা কিনছেন। বাজারের তুলনায় দাম কম হওয়ায় অনেকেই পরিবারের সদস্যদের জন্য বেশি পরিমাণেও কিনছেন।
ক্রেতা বাগজানা এলাকার শাখওয়াত হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তিরা জানান, বাজারের দোকানে সাধারণত দেখা যায় ফলগুলো রোদে কিছুটা শুকিয়ে যায়। কিন্তু এ দোকানের ড্রাগনগুলোর বোঁটা থেকে এখনো রস ঝরছে।
বাগজানা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. আব্দুল মমিনকেও ড্রাগন ফল কিনতে দেখা যায়। তিনি বলেন, সপ্তাহে পাঁচ দিন এ পথে যাতায়াত করি। প্রায় প্রত্যেকদিনই কমবেশি বাসার জন্য ফল নেই। বাজারের তুলনায় টাটকা ও সতেজ ড্রাগন এখানে পাওয়া যায়।
বাগান মালিক শিপলু বলেন, অনেক টাকা ব্যয় করে বাগানটি এক বছর আগে করেছি। প্রথমে অল্প পরিমাণ ড্রাগন ফল ধরলেও এখন বাগানভর্তি ফুল-ফল। দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারদের কাছে কুরিয়ার করে ফল পাঠানোর পাশাপাশি রাস্তার পাশে দোকান দিয়েছি। বাগানের টাটকা ফল পেয়ে বেশ বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় কৃষি অফিস সার্বিক সহযোগিতা করলেও সরকারিভাবে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা থাকলে বাগানটি আরও বড় করতে পারতাম। এতে অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শ্রী তরুণ কুমার পাল কালবেলাকে বলেন, ড্রাগন ফলে প্রচুর ভিটামিন আছে এটি একটি পুষ্টিকর ফল। এই ফল অতিরিক্ত খেলে শরীরে অ্যালার্জি ও ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে অপকারিতার চেয়ে উপকারই বেশি। যেমন- মানবদেহে রক্ত তৈরি করে, কোলেস্টেরল কমায়, হৃদ্যন্ত্র ভালো রাখে, ওজন কমাতে সাহায্য করে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে, হজমে সহায়ক, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে, রক্ত চলাচল, চুলপড়া প্রতিরোধ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে নিয়মিত ড্রাগন ফল খেলে।
মন্তব্য করুন