চট্টগ্রামের মহসিন কলেজ ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, আটক ছাত্রলীগ নেতা আরিফের পক্ষে থানায় তদবির করতে আসে শিবিরের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে শিবির ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। সবশেষ ছাত্রদল ও শিবিরের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সোমবার (২১ জুলাই) রাত ১১টায় নগরীর চকবাজার থানায় এসব ঘটনা ঘটে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ১টা) প্রায় ৬ রাউন্ড ককটেল বিস্ফোরণের তথ্য পাওয়া গেছে।
আটক ছাত্রলীগ নেতার নাম মোহাম্মদ আরিফ। তিনি মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের নেতা। তিনি ছাত্রলীগ নেতা মিজানের অনুসারী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের নেতা আরিফকে থানায় তুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে চকবাজার থানায় শিবির ও ছাত্রদলের কর্মীদের হাতাহাতি হয়। ছাত্রলীগ নেতা আরিফের পক্ষে শিবিরের নেতাকর্মীরা থানায় অবস্থান নিলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা চকবাজার থানায় অবস্থান নেয়। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৬ রাউন্ড ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা চলমান রয়েছে। এই ঘটনা এলাকায় উত্তেজনায় বিরাজ করছে।
মহসিন কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর বলেন, আরিফ মহসিন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মিজানের অনুসারী। ২০২২ সালে তিনি আমাকে কুপিয়েছিলেন। তার ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় তার সব তথ্য-প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। সেগুলো নিয়ে তাকে চকবাজার এলাকা থেকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু মহসিন কলেজ ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিনসহ অনেকে থানায় যান। তাকে ছাড়িয়া আনার তদবির করে। এ নিয়ে আমরা বিরোধিতা করলে তারা আমাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তারা ছাত্রদলের উপর হামলা করে। থানার সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে নিশ্চয়ই এর প্রমাণ পাওয়া যাবে।
মহসিন কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ন আহ্বায়ক আরিফ হোসাইন জুমন রাত সাড়ে ১২টায় বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করছে শিবির। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে। অথচ তারা (শিবির) তার (ছাত্রলীগ নেতা আরিফ) পক্ষ নিয়ে থানায় হামলা চালিয়েছে। ছাত্রদল নেতাদের মারধর করেছে। পুলিশের উপরও হামলা করেছে। সত্যের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় আমাদের শত শত নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া দিচ্ছে।
তবে শিবিরের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। সাংবাদিকদের একটি গ্রুপে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম উত্তর মহানগরের প্রচার সম্পাদক সিরাজী মানিক দাবি করেছেন, চকবাজারে ছাত্রদল-যুবদলের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদলের সংঘর্ষ চলছে।
ছাত্রদলের অভিযোগের বিষয়ে মহসিন কলেজ ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম বলেন, আরিফ নামে একজনকে একটি পক্ষ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
তবে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন চকবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত)। রাত সাড়ে ১২টায় তিনি বলেন, পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কোন পক্ষই তো নেই, ধাওয়া করবে কারা।
মন্তব্য করুন