সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দুই লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন (৩০) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে তার স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে একলাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই আসামিকে দ্য পেনালকোডের ২০১ ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক বেগম সালমা খাতুন এ দণ্ডাদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম মো. মতিউর রহমান খদগীর ওরফে আব্দুল মতিন (৪৬)। তিনি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বাসিন্দা।
ওই আদালতের পেশকার মো. তার হোসেন কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ২ জুন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার তেরোদোনা গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন আব্দুল মতিন খদগীর। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মতিন তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে ২ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে। কিন্তু সাবিনার বাবা আব্দুল কাদের যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
এ অবস্থায় ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সাবিনাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে যৌতুকের টাকা চাইলেও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে ফিরিয়ে দেন। বাড়িতে এসেই স্ত্রী সাবিনাকে ব্যাপক মারধর করেন তিনি। এর দুদিন পর থেকে সাবিনা ও তার স্বামী মতিনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
দীর্ঘদিন তাদের ফোন বন্ধ পেয়ে ১০ সেপ্টেম্বর সাবিনার বাবাসহ অন্যান্য আত্মীয়রা মেয়ের খোঁজে তাড়াশের ভায়াট গ্রামে যান। সেখানে গিয়ে সাবিনাকে না পেয়ে আত্মীয়দের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। ১৩ অক্টোবর এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারেন, কিছুদিন আগে তাড়াশ থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। যা টিভিতে প্রচারও হয়েছে।
বিষয়টি শুনে তাড়াশ থানায় খোঁজ নিয়ে সাবিনার পরিবারের লোকজন মরদেহ শনাক্ত করেন। তখন পুলিশ তাদের জানায়, ২৯ সেপ্টেম্বর তাড়াশের মথুরাপুর নামক স্থানে ধানক্ষেত থেকে সাবিনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত সাবিনার ভাই আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ আব্দুল মতিন খদগীরকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়। বিচারক শুনানি শেষে বুধবার এই রায় ঘোষণা করেন।
মন্তব্য করুন