ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৬:০২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, খোলা হলো ব্যারাজের ৪৪টি গেট

তিস্তা ব্যারাজে পানিপ্রবাহের চিত্র। ছবি : কালবেলা
তিস্তা ব্যারাজে পানিপ্রবাহের চিত্র। ছবি : কালবেলা

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় এসব গেট খুলে দেওয়া হয়। এতে নিম্নাঞ্চল ও চরগুলো তলিয়ে গেছে। চরবাসীরা গবাদিপশু ও মালপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে লোকালয়ে চলে যাচ্ছেন।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর ১২টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ১৬ মিটার (স্বাভাবিক বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার)। এর আগে সকাল ৯টায় পানির প্রবাহ রেকর্ড হয় ৫২ দশমিক ১৩ মিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে তৃতীয়বারের মতো তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এর আগে ২৯ জুলাই রাতে প্রথমবার নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে এবং ৩ আগস্ট ১৬ ঘণ্টায় ৪০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে আবারও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এবার তৃতীয়বার বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং তা অব্যাহত রয়েছে।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝড়সিংহেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা হজরত আলি বলেন, ‘পানি বেড়ে চরগুলো ডুবে গেছে। অধিকাংশ মানুষ লোকালয়ে চলে এসেছে, গবাদিপশুর জন্য খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।’

খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা তোফেল মেম্বারের পাড়া গ্রামের নূর হোসেন জানান, ‘প্রতিদিনই পানি বাড়ছে। মানুষ নৌকায় করে মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে—কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে, কেউ ভাড়া বাসায় উঠছেন। যাদের গবাদিপশু আছে তারা বেশি বিপাকে, এখনো অনেক পশু চরে রয়ে গেছে।’

গয়াবাড়ি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বাবর আলি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় নদীর ৩টি শাখা বের হয়েছে। অনেক আবাদি জমির ধান তিস্তার পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীর ওপারের কয়েকটি চর ডুবে গেছে, অনেকের বাড়ির কাছাকাছি পানি চলে এসেছে। গবাদিপশু সরানো নিয়েই সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ।’

তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টের পানির লেভেল পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান, ‘উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।’

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবার, ত্রাণসামগ্রী ও তাবু মজুত রাখা হয়েছে। ইতোপূর্বে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে এবং ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ‘উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তার নিম্নাঞ্চলের মানুষকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কুয়াশার কারণে ঢাকায় নামতে পারেনি আন্তর্জাতিক ৮ ফ্লাইট

ট্রাক-অ্যাম্বুলেন্স সংঘর্ষে একই পরিবারের ৩ জন নিহত

শাহবাগ মোড় থেকে সরে গেল ইনকিলাব মঞ্চ

অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া

হাদির কবর জিয়ারত করবেন তারেক রহমান

তরুণ আলোকচিত্রীদের গল্পে মুখর শিল্পকলা, চতুর্থবারের মতো শুরু ‘শাটার স্টোরিস’

১৪ বছর পর যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা

আজ থেকে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র তুলবেন যেভাবে

আজ যেসব কর্মসূচি তারেক রহমানের

কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে ঢাকার বাতাসের অবস্থান কত

১০

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ৩৫ বস্তা টাকা, চলছে গণনা

১১

শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক

১২

দুই ইসরায়েলিকে হত্যা, আহত ৬

১৩

সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও আজ খোলা ব্যাংক

১৪

সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে ভয়াবহ আগুন

১৫

জাতীয় স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইতে যা লিখেছেন তারেক রহমান

১৬

গ্র্যাচুইটিসহ বসুন্ধরা গ্রুপে চাকরি

১৭

বিপিএলসহ টিভিতে যত খেলা

১৮

রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে : কিম জং উন

১৯

অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল

২০
X