মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার ফেলে রাখা দৈনন্দিন গৃহস্থালির ব্যবহৃত বর্জ্য অপসারণের জন্য শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, দ্য বাডস রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কলেজ রোডস্থ ময়লার ভাগাড়ের সামনে শতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে ওই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
এদিকে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের শিক্ষকরা। এসময় শিক্ষকদের মধ্যে থেকে বক্তব্য রাখেন শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. রফি উদ্দিন, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর এ বি এম মোখলেছুর রহমান এবং বাংলা বিভাগের প্রভাষক বিভাগীয় প্রধান মো. সাইফুল ইসলাম।
এছাড়াও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক ও গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সুদর্শন শীল। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী উম্মে নাফিসা মাইমুনাহ্, আরিফ বকস্, গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ প্রমুখ।
স্কুলের সামনে ফেলা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন শত শত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। দীর্ঘদিনের এই বর্জ্য সমস্যা নিরসনে গঠিত উদ্যোগে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রস্তাব স্থানীয় সরকার নির্বাহী কার্যালয়ে (এলজিইডি) পাঠানো হয়েছে বহু আগেই, তবে কোনো সমাধান মেলেনি।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী উম্মে নাফিসা মাইমুনাহ্ বলেন, গত ৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে একটা বিষয় নিয়ে (ময়লার ভাগাড়) ইউএনও স্যারের কাছে যখন যাই, ওনি এটাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। পরে তিনি একটা প্রজেক্ট আকারে বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন, প্রায় ২১ কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট এটি। তারপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ফাইলটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে যায়, সেখানে বিষয়টি দেখতে বলা হয়।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে এখনো বিষয়টি পড়ে রয়েছে। কেন বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না! তার পরিপ্রেক্ষিতে আজকে আমরা শিক্ষার্থীরা একসাথে আবারো রাস্তায় দাঁড়িয়েছি।
অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. রফি উদ্দিন বলেন, ৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে এরকম ময়লার ভাগাড় কোনো সভ্য সমাজে নেই, কোনো সভ্য এলাকার বিবেকবান মানুষ এটিকে মেনে নিতে পারেন না। আমি গত কয়েকদিনে আমাদের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। উপজেলা প্রশাসনের সাথেও কথা হয়েছে। আমি যতটুকু দেখেছি উনারা অত্যন্ত দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।
তাদের ডিসিকে বলেছি, ‘আমাদের সন্তানদের দিকে তাকান, এই জাতির ভবিষ্যৎ। এদেরকে ময়লার ভাগাড়ের সামনে রেখে আপনি-আমি সফল মানুষ কীভাবে হব? তাই আসুন সকলে মিলে হাতে হাত রেখে অতি দ্রুত এই ময়লার ভাগাড় থেকে আমাদের সন্তানদেরকে মুক্তি দিই।’
মন্তব্য করুন